স্বরূপ দত্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আজ ২৬ আগস্ট। আজ জন্মদিন মায়ের। মা তো আমাদের একটাই হয়। বাবা পরে বিয়ে করলে হয় সত্ মা। কিন্তু বাঙালি বা গোটা ভারতবাসী কিংবা বিশ্ববাসী যে চিরকাল দুই মায়ের স্নেহছায়াতেই মানুষ হল। যার কেউ সত্ মা নন। একটা নিজের মা। আর অন্যটি সকলের মা। মা টেরেসা। দুগ্গা মা তো উপর থেকে সবদিকে নজর রাখেন। আর টেরেসা মা এই পৃথিবীতে সবার মাঝে থেকে, মানুষের সেবা করেছেন। আজ টেরেসা মায়ের জন্মদিন। আর তো কটাদিন। তারপরই মা সেন্ট হবেন। আজ মায়ের সম্পর্কে জেনে নিন এমন কিছু তথ্য, যেগুলো বারবার জানেতও মানুষের ভালো লাগে। লাগবে নাই বা কেন! সে যে মা। শুধু লিখতে ইচ্ছে হল না, মা এ জীবনে কী কী পেয়েছেন। লিখলাম ছোট করে সেগুলোই, যেগুলো মা আমাদের দিয়েছেন।


১) মাদার টেরেসার আসল নাম অ্যাগনেস গনজে বজায়ু। ১৯১০ সালের ২৬ আগস্ট মা জন্মেছিলেন ম্যাসিডোনিয়ার বেশ স্বচ্ছল পরিবারে। এইজন্যই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল পরিবার বলা তার কারণ, সেই সময়েও মা-দের দু-দুটো বাড়ি ছিল।


২) মাত্র আট বয়সে পিতৃহারা হন জগতের মা! এরপর সেই ছোট্ট মেয়েটি নিজেকে গড়তে থাকে মানুষের সেবা করবে বলে। মাত্র ১২ বছর বয়সেই সমাজসেবায় নিজেকে সঁপে দিতে মানসিকভাবে তৈরি হয়ে যায় সে। তাই ১৮ বছর বয়সেই সে পাড়ি দেয় আয়ারল্যান্ডে। মা আর বোনকে ছেড়ে। এরপর ৮৭ বছর বয়স পর্যন্ত এই পৃথিবীতেই ছিলেন মা। কিন্তু নিজের মা আর বোনের সঙ্গে আর কোনওদিন দেখা হয়নি তাঁর।


৩) আয়ারল্যান্ডে গিয়ে এক বছরের মধ্যেই ভালো করে ইংরেজি শিখে নেন মা। আর ১৯৩১ সালে নিজের নাম পাল্টে হয়ে যান টেরেসা। সিস্টার টেরেসা। এরপর তিনি আসেন কলকাতায়। সেন্ট মেরি হাইস্কুলে তিনি ইতিহাস এবং ভূগোল পড়ানো শুরু করেন। প্রায় ১৫ বছর শিক্ষকতাও করেন। কিন্তু তাঁর মন যে কেঁদে ওঠে অনাথ, দুঃস্থ শিশুদের দেখে।


৪) ১৯৪৬ সালে মা যান দার্জিলিঙ। আর ওই এক সফরেই তাঁর জীবনটা বদলে যায়। মা পড়ে বলেছিলেন যে, ওই সফরের সময়ই এই পৃথিবী আর এই সমাজ যেন তাঁকে ডাক দিয়েছিল দু হাতে উজাড় করে। মা বুঝেছিলেন, এ দেশের অনেক অনেক মানুষের সত্যিই দরকার মায়ের স্নেহ। দূরে থাকেননি আর মা। তারপর নিজের সবটা উজাড় করে দিয়েছিলেন দুঃস্থ, অনাথ শিশুদের জন্য।


৫) তিনি ঠিক করে ফেলেন এবার তিনি সমাজসেবা করবেন। কিন্তু তাতেও যে দরকার ছিল কিছু সরকারি অনুমতির। সেগুলো পেতে দুটো বছর লেগে যায় মায়ের। এরপর আসে ১৯৪৮। মা সেজে ওঠেন সাদা শাড়ি আর হাওয়াই চটিতে। আশ্রয় হয়ে ওঠেন লাখো মানুষের।


৬) একেবারে শুরুর দিকে দুঃস্থ শিশুদের শিক্ষা দেওয়াই ছিল তাঁর প্রথম কাজ। কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খান মা। তিনি বেড়ে উঠেছিলেন তুলনামূলকভাবে আর্থিক ক্ষমতা সম্পন্ন পরিবারে। কিন্তু এ যে পড়ে গেলেন অথৈ জলে! বাচ্চাদের পড়ানোর জন্য কোনও সাহায্যই যে তিনি তখনও পাননি। অগত্যা, লাঠি আর কাদা দিয়েই শুরু হল বাচ্চাদের পড়াশোনা। মায়ের প্রথম শিক্ষা। যেখানে লাঠি হয়ে উঠল কলম!


৭) এরপর আসে ১৯৫০। মা শুরু করেন তাঁর স্নেহ-ভালবাসা-মমতার চার দেওয়াল। মিশনারিজ অফ চ্যারিটি। মাত্র ১৩ জন মিলে পথচলার শুরু করেছিলেন। আজ তাতে প্রায় ৫০০০ মানুষ জুড়ে রয়েছেন! আর স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা তো ১০ হাজারেরও বেশি। মায়ের ভালোবাসার সাফল্য যে, একেই বলে। আজ সেখানে অনাথ শিশু থেকে কঠিন রোগে ভোগা শিশুদের বেড়ে ওঠা, সুস্থ হওয়া। পড়াশোনা শেখা। মানবজীবনের স্বপ্ন এঁকে দেওয়া চোখে ওই চার দেওয়াল থেকেই।


আরও পড়ুন রিও-র হল সারা, টোকিও-র হল শুরু