Bollywood on Manipur Violence: মণিপুরে নগ্ন হল মানবিকতা! ক্ষুব্ধ অক্ষয়-সোনু চাইছেন অপরাধীর কঠোরতম শাস্তি
Manipur Violence: মণিপুরে দুই জনজাতি কুকি ও মেতেইদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সেখান থেকেই বদলা নিতে গিয়ে দুই মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের আঙুল উঠেছে মণিপুরের মেতেই সম্প্রদায়ের দিকে। এর মাঝেই ভাইরাল হয় ঐ দুই মহিলার ভিডিয়ো। যা দেখে শিউরে ওঠে গোটা দেশ। প্রতিবাদে সরব হয় বলিউডও।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: দুই মহিলাকে গণধর্ষণের পরে বিবস্ত্র করে ঘোরানো হয় গোটা গ্রাম, সেই ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়(social media)। অভিযোগের আঙুল উঠেছে মণিপুরের (Manipur Violence) মেতেই সম্প্রদায়ের দিকে। নির্যাতিতাদের পরিচয় প্রকাশ করার জন্যই অভিযুক্ত মেতেইরা এই ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে বলেই অভিযোগ। মণিপুরের নারকীয় এই ঘটনায় লজ্জিত, বিরক্ত, রাগে ফুঁসছে গোটা দেশ। অশান্ত মণিপুরের বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। শুধু রাজনৈতিক নেতারাই নয়, এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বলিউডের তারকারাও।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন অভিনেতা সোনু সুদ(Sonu Sood)। অভিনেতা টুইট করে লেখেন, ‘মণিপুরের ভিডিয়ো দেখে যে কেউ শিউরে উঠবে। মহিলাদের বিবস্ত্র করে ঘোরানো হয়নি, মানবিকতাকে ঘোরানো হয়েছে।’
শুধু সোনুই নয়, ভিডিয়ো দেখে রাগে ফুঁসছেন অক্ষয় কুমার(Akshay Kumar)। তিনি লেখেন, ‘মণিপুরের ভিডিয়ো দেখে রাগে কাঁপছি। বিরক্তি লাগছে। আশা রাখছি, ঐ অপরাধীরা যে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি পায় যাতে কেউ আর এরকম ভয়ানক কোনও কাণ্ড ঘটানোর সাহসও না করে’।
কিয়ারা আডবানী লেখেন, ‘মহিলাদের উপর অত্যাচারের এই ভিডিয়ো ভয়ংকর। আমি ভিতর থেকে শিউরে উঠেছি। আমি প্রার্থনা করি, ঐ মহিলারা তাড়াতাড়ি ন্যায়বিচার পাক। যারা অপরাধী তারা যেন বিরলতম শাস্তি পায়।’
রিচা চাড্ডা লেখেন, ‘লজ্জাজনক। ভয়ানক। আইনহীন।’
মণিপুরের নারকীয় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন কণিকা ধীলোঁ, উর্মিলা মাতন্ডকর ও রেণুকা সাহানি।
সূত্রের খবর ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটি গত ৪ মে তোলা হয়েছিল। তার ঠিক আগের দিনই মণিপুরে দুই জনজাতি কুকি ও মেতেইদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ভিডিয়োর দুই নির্যাতিতা কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত বলেই জানা গিয়েছে। রাজ্যের জনজাতি সংগঠন আইটিএলএফ-এর তরফে বলা হয়েছে, কুকি-জো সম্প্রদায়ের দুই মহিলার উপরে অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছে মেতেইরা। গত ৪ মে কাংপোকপি জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। ওই দুই মহিলা কেঁদে কেঁদে কার্যত প্রাণের ভিক্ষা করেন। এরপরেও তাঁদের কথায় কান দেওয়া হয়নি। বরং সেই দুই মহিলার উপর অকথ্য অত্যাচার করা হয়। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিস। তদন্ত শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন- 'জন্তু-জানোয়ারের মানুষকে ঠেসে ঘরে রাখা হয়েছে', মণিপুরের নিয়ে জানালেন তৃণমূলের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল
ট্যুইট করে রাহুল বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা ও নিস্ক্রিয়তা মণিপুরকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে গেছে। মণিপুরে ভারতের আদর্শকে আক্রমণের এই ঘৃণ্য ছবি দেখে INDIA চুপ করে থাকবে না। মণিপুরের জনগণের পাশে রয়েছি। এখন শান্তি রক্ষাই একমাত্র পথ।'
বৃহস্পতিবার বাদল অধিবেশনের শুরুতেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মণিপুরের ঘটনা নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি আরও বলেন, 'মণিপুরের মেয়েদের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা কখনও ক্ষমা করা যাবে না, দোষীদের ছাড় দেওয়া হবে না।' প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই জানান, মনে বেদনা ও ক্ষোভ নিয়েই তিনি সকলের মাঝে গণতন্ত্রের এই মন্দিরের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। মণিপুরে যে ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, তা যে কোনও সভ্য সমাজের জন্য লজ্জাজনক। মোদী বলেন, 'আমি সব মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, তাঁরা যেন নিজেদের রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা আরও জোরদার করেন। বিশেষ করে আমাদের মা-বোনদের সুরক্ষার জন্য কঠোরতম পদক্ষেপ নিন'।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘আমার ব্যথিত সেই দু'জন মহিলার জন্য যারা অসম্মানজনক এবং অমানবিক আচরণের শিকার হয়েছিলেন, যা গতকাল প্রকাশিত দুঃখজনক ভিডিয়োতে দেখানো হয়েছে। ভিডিয়োটি প্রকাশের পরপরই ঘটনার সুও-মটো কগনিজেন্স নেওয়ার পরে, মণিপুর পুলিস ব্যবস্থা নিতে শুরু করে এবং আজ সকালে প্রথম গ্রেফতার করে’।
জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ট্যুইটারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। জানা গিয়েছে যে মণিপুরের ভয়ঙ্কর ভিডিয়োতে দুই নারীকে নগ্ন করে একদল পুরুষ প্যারেড করাচ্ছে। এই ভিডিয়ো বুধবার ভাইরাল হয়েছিল। এবং এরপরেই দেশজুড়ে ক্ষোভের ঢেউ তুলেছে এই ঘটনা।সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, সরকার সম্ভবত ‘আইন শৃঙ্খলার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে’ এমন ভিডিয়োর প্রচারের জন্য ট্যুইটারের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবে। কারণ এই জিনিস আইনে অনুমোদিত নয়।
আরও পড়ুন- Manipur Violence: মণিপুরের ঘটনায় গ্রেফতার ১, ট্যুইটারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার
প্রসঙ্গত, জাতি হিংসার ঘটনায় ১২০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ রাজ্যের অভ্যন্তরেই বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং তাঁরা এখন ত্রাণ শিবিরে বসবাস করছে।এ ঘটনায় মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিস। একজন সিনিয়র পুলিস অফিসার বলেছেন, ‘আমরা লোকদের শনাক্ত করেছি’। গণধর্ষণ থেকে বেঁচে যাওয়া দুই ব্যক্তি ভয়াবহ হামলার প্রায় ১৫ দিন পর পুলিসের কাছে এসেছিলেন।