Ashish Vidyarthi Wedding: ‘আমরা খুশি থাকতে চেয়েছি...’ প্রাক্তন ও বর্তমান স্ত্রীকে নিয়ে মুখ খুললেন আশিস...

Ashish Vidyarthi Wedding, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বৃহস্পতিবার বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা আশিস বিদ্যা্র্থীর আচমকা বিয়ের খবরে শোরগোল পড়ে যায় নেটপাড়া। কলকাতায় আইনি মতে বিয়ে করেন তিনি। গুয়াহাটির মেয়ে রূপালী বড়ুয়ার সঙ্গে তাঁর বিয়ের খবর রীতিমতো ভাইরাল। অন্যদিকে তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী রাজশী বিদ্যার্থীর (Piloo Vidyarthi) পোস্ট নিয়েও শুরু হয়েছে চর্চ্চা। এর মাঝেই দুই স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর জীবনের গল্প নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেতা।

আশিস বিদ্যার্থী বলেন, ‘আমাদের সবার আলাদা আলাদা জীবন আছে, সেই জীবনে আলাদা আলাদা চাহিদা আছে। আমাদের আলাদা আলাদা সুযোগ আছে, আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ডও আলাদা। আমরা সবাই নিজের মতো করে জীবনটা বাঁচছি কিন্তু তার মাঝে আমাদের সকলের মধ্যে একটা জিনিসের ভীষণ মিল, আমরা সবাই জীবনটা আনন্দে কাটাতে চাই। আমার জীবনেও ২২ বছর আগে পিলু এসেছিল। আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আমরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। এরমাঝেই অর্থের (ছেলে) জন্ম হয়, বড় হল, কলেজ গেল, এখন চাকরি করছে। কিন্তু এই ২২ বছরের অসাধারণ জীবন যাপনের মাঝে গত আড়াই বছর আগে আমরা দেখলাম যে আমাদের ভবিষ্যত দেখার ভঙ্গীটা আলাদা। আমাদের মধ্যের এই দুরত্ব আমরা মিটিয়ে ফেলার যথাযথ চেষ্টা করি। তথন আমরা ভাবলাম যে আমাদের এই ভিন্ন চিন্তাধারা আমরা বদলে তো ফেলতে পারি কিন্তু তাতে আমাদের মধ্যে একজনের সঙ্গে আরেকজনের মতানৈক্য হবে। তারপর আমরা ভাবলাম যে ২২ বছর যে আনন্দে আমরা একসঙ্গে জীবন কাটিয়েছি আগামীতে সেই আনন্দ হয়তো থাকবে না। আমরা সব মেনে বাকিদের জন্য একসঙ্গে থেকে গেলেও আমরা দুঃখে থাকব। এটা আমরা চাইনি’।

অভিনেতা আরও বলেন, ‘আমরা অনেককেই দেখেছি যে যাঁরা একসঙ্গে সংসার করছে কিন্তু তাঁদের জীবন একেবারেই আলাদা। আমরা দুজনেই ভাবলাম যে আমরা এরকম জীবন চাই না। আমরা একসঙ্গে খুব ভালো সময় কাটিয়েছি। আমাদের মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, যে ঝগড়াঝাটি শুরু হয়েছে, তাতে আমরা আলাদা রাস্তায় আনন্দে থাকব। আমরা দুজনেই ভালো মানুষ কিন্তু আমরা আলাদা আলাদা রাস্তায় চলাই ভালো। তখনই আমরা ভাবলাম আমাদের বিচ্ছেদটা আমরা খুবই মর্যাদাপূর্ণ রাখব। কারণ যখন দুজন মানুষের ছাড়াছাড়ি হয়, তাঁরা একে অপরের উপর রেগে যায়। এতে শোরগোল হয়, মানুষ আবার সেগুলো শুনে নানারকম কথা বলে। তাই আমরা ঠিক করলাম, আমরা এরকম কিছু করব না। আমরা শান্তিতে একে অপরের সঙ্গে কথা বলি, অর্থের সঙ্গে কথা বলি, কাছের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলি, আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলি, তারপর আমরা ঠিক করি যে এবার আমরা আলাদা হয়ে যাই’।

আশিস বলেন, ‘জীবন এমন একটা বস্তু, যেটা খুশিতেই কাটানো উচিত, অন্য কারোর জন্য নয়, নিজের জন্য। নিজের দায়িত্ব পূরণ করে কী আমরা খুশিতে থাকতে পারি? আমি নিজেকে যতটুকু জানি যে আমি একা থাকতে পারি না, আমার কারোর সঙ্গ পছন্দ। তখন আমার বয়স ছিল ৫৫ কিংবা ৫৬ কিন্তু আমি আশা ছাড়িনি। আমি খুঁজব তাঁকে যাঁকে আমি অন্তরের কথা বলতে পারি। আমি যখন ইউনিভার্সকে বলি যে আমি কাউকে চাই, তখন গত বছর আমার কারোর সঙ্গে দেখা হয়। ওঁর সঙ্গে যখন কথাবার্তা শুরু করি তখন আমার মনে হয় যে আমি ওঁর সঙ্গে থাকতে চাই। ওঁর নাম রূপালী বড়ুয়া। গত এক বছর দূর্ থেকেও আমরা কথআ বলেছি, দেখা করেছি, তখন আমার মনে হয় আমি ওর সঙ্গে জীবন কাটাতে চাই। আমি কখনও শুধু সম্পর্কে থাকতে চাইনি, আমি বিয়েই করতে চেয়েছিলাম। তখন ওঁকে জিগেস করি বিয়ে করবে কিনা। সে রাজি হয়ে যায়। ওঁর বয়স ৫০, আমার ৫৭, আমার ৬০ বছর বয়স নয়। কিন্তু বিষয়টা বয়সের নয়। কারণ যেকোনও বয়সেই আমরা খুশি থাকতে পারি। যেটা আমার সঙ্গে হয়েছে সেটা সবার সঙ্গেই হতে পারে। সবাইকে সম্মান দেওয়া উচিত ও ব্যক্তিগত স্পেস দেওয়া উচিত। আপনাদের ভালোবাসা আমরা সবাই পেতে পারি’।

বৃহস্পতিবার আশিসের বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসার আগে থেকেই তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীয়ের সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে এল জীবন দর্শনের কথা। রাজশী নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে লেখেন, ‘যে তোমার জন্য সঠিক মানুষ, সে কখনও জিজ্ঞেস করবে না, তাদের কাছে তোমার মূল্য ঠিক কতটা। সে এমন কোনও কাজ করবে না যাতে তুমি কষ্ট পাও। মনে রেখো।’ আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘তুমি নিজে যথেষ্ট শক্তিশালী। ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে। তুমি সেটা অর্জনের অধিকারী।’ আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘জীবন নামের গোলকধাঁধায় নিজেই ধন্দে পড়ো না।’