Durga Puja 2022, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বোধন হয়ে গিয়েছে। চারিদিকে পুজোর আবহ, তবে বরাবরই বারোয়ারী পুজোর থেকে বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজোর রীতি এবং ঐতিহ্য অনেকটাই আলাদা হয়ে থাকে। তেমনই এক প্রাচীন পুজো হল জনপ্রিয় টেলি অভিনেত্রী অন্বেষা হাজরার বাড়ির দুর্গাপুজো। যে পুজোর ইতিহাস প্রায় ২০০ বছরের পুরনো। যা শুরু হয়েছিল ইংরেজ আমলেই। পুজো শুরুর ইতিহাসের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে বিশেষ গল্প, নিজের বাড়ির প্রাচীন পুজো নিয়ে নানান কথা Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালে সঙ্গে ভাগ করে নিলেন 'এই পথ যদি না শেষ হয়'-এর ঊর্মি। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

অভিনেত্রী অন্বেষা হাজরার কথায়, 'পুজোর ইতিহাস ২০০ বছরের পুরনো। পুজো হয় আমাদের ধানখেউর-গ্রামের বাড়িতে। যেটা আমাদের মেমারির বাড়ি থেকেও অনেকটা ভিতরে। ওখানে আমাদের জমিদারি ছিল। ধানখেউর-এর বাড়িটা ৪০০ বছরের পুরনো। এই পুজোর সঙ্গে একটা গল্প জড়িয়ে আছে। আমার দাদুর বড়পিসিমার বয়স তখন মাত্র ৫ বছর। উনি ঘুম থেকে উঠে বলে দিয়েছিলেন দুর্গাপুজোর জোগাড়ে কী কী লাগে, ঠাকুর কোথায় বসবে। অত ছোট একটি মেয়ের পক্ষে এটা বলা বলা প্রায় অসম্ভব। উনি স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। তখন থেকেই বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু হয়। আমাদের কিন্তু শাক্ত মতে নয়, বৈষ্ণব মতে দুর্গাপুজো হয়। নবমীর দিন বলির রীতি আছে, তবে সেটা পশুবলি নয়, নারকেল, শসা সহ বিভিন্ন ফল বলি দেওয়া হয়। এছাড়া দুর্গাপুজোর ৪ দিন ৪ বেলা ধরে ঢালাও খাওয়া-দাওয়া হয়। অষ্টমীর দিন নিরামিষ খাওয়া হয়। তবে সপ্তমী, নবমীতে মাছ হয়, মাংস কিন্তু হয় না। আমাদের বাড়ির পুজোয় কিন্তু অন্নভোগ হয় না, লুচি ভোগ হয়। এই হল রীতি।' 


আরও পড়ুন-কুমার শানু নন, মুম্বইয়ে পুজো করছেন কেদারনাথ ভট্টাচার্য



অন্বেষা বলেন, 'পুজোটা আমাদের কাছে দারুণ আনন্দের। বাড়িতে প্রচুর লোকজন আসেন। এই কটাদিনই আমরা ৫ ভাইবোন এক হই। খুব হই হুল্লোড় করি। আর পুজোতে ভোগ হিসাবে ক্ষীর-ছানা-লুচি তো আমার ভীষণ প্রিয়।' কথা বলতে বলতেই পুরনো স্মৃতিতে ফিরে গেলেন অন্বেষা। বলেন, 'যখন ছোট ছিলাম, তখন মহালয়ায় আমাদেরকেও গঙ্গার ঘাটে নিয়ে যাওয়া হত। দাদু (শশীদুলাল হাজরা)কে তর্পণ করতে দেখেছি। ২০১৭তে দাদাই মারা যান। সত্যি কথা বলতে পুজো মানেই আমাদের কাছে দাদাই, আর গল্পগুজব। খুব মিস করি। এখন পুজোটা বাবা-জ্যেঠু করেন। (মন খারাপ হয়ে যায়) যাঁরা দেশের বাইরে থাকেন, তাঁরাও পুজোতে বাড়ি ফেরেন। কবে কখন কী কী খাওয়ানো হবে সেটা নিয়ে ভাই-বোনেদের মধ্যে ভীষণ আগ্রহ থাকে।'


আরও পড়ুন-'এবার পুজো দুই বাংলাতেই কাটবে, বাংলাদেশে পরিবার অপেক্ষা করে রয়েছে...'



আরো পড়ুন-'ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরে ছোটবেলার সেই দুর্গাপুজোর স্মৃতি এখনও টাটকা!'


বাড়ির কথা, প্রাচীনত্ত্বের কথা বলতে গিয়ে অন্বেষা বলেন, 'আমাদের মেমারির বাড়িটা ২০০ বছরের পুরনো, আর ধানখেউরের বাড়ি আরও প্রাচীন, ওটা সাড়ে ৪০০ বছরের পুরনো। আমি বাবার কাছে একটা ম্যাপ দেখেছি, যখন ইংরেজরা ট্রেনে করে মেপে মেপে ম্যাপ বানিয়েছিল, সেখানে আমাদের মেমারির বাড়িটা উল্লেখ আছে। মেমারি স্টেশনে হাজরাদের বাড়ি বললে সকলেই দেখিয়ে দেবেন। এটা ওখানকার সবথেকে বড় বাড়ি, প্রায় ২ বিঘা ৪ কাটা জমির উপর তৈরি। আর ধানখেউরের বাড়ির ইতিহাস প্রায় ৪০০-৪৫০ বছরের আরও পুরনো। আমাদের কুলদেবতা হল গোপাল ঠাকুর। দুর্গাপুজোর সঙ্গে গোপালকেও রাখা হয়। সেই গোপালের ইতিহাস আবার সাড়ে ৩০০ বছরের পুরনো। বাবার কাছে শুনেছি, গোপাল মন্দিরটা দুর্গা দালানের থেকেও প্রাচীন, ওটা নাকি বাড়ি তৈরির আগে থেকেই ওখানে ছিল। হয়ত ওই মন্দির ঘিরেই বাড়ি তৈরি হয়েছিল। জন্মষ্টমী, দোলও সবই আমাদের বাড়িতে সেলিব্রেট হয়। বাবা বলেন, দুর্গাপুজোর সময় এখন আর কী লোক দেখছিস, আগে বন্যা বয়ে যেত। শুনেছি লরি করে মাছ আসত। সেটা বাবারা ছোটবেলায় পেয়েছেন।' 


অভিনেত্রীর কথায়, পুজো এলেই তাই বাড়ি চলে যাই, বাড়ি ছাড়া পুজো ভাবতেও পারি না। তবে এখন কাজের জন্য ওখানে বেশিদিন থাকতে পারি না। 


আরও পড়ুন- বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা