Aindrila Sharma : `ঐন্দ্রিলা, জানি তুই অনেকটা দূরে... তবু, পারলে আমাকে প্লিজ একবার ক্ষমা করে দিস!`
হয়ত এটাই শেষ সুযোগ ছিল ওর কাছে ক্ষমা চাওয়ার। হঠাত্ই একদিন একটি দৃশ্যে অভিনয় করার সময় আমাদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়। এখন যদিও ও নেই, তাই সেই দৃশ্যটি নিয়ে বিশেষ কথা বলতে চাই না। তবু আজ এই সময় দাঁড়িয়ে আমি নিজেকে দোষী মনে করি। কারণ ও আমার থেকে অনেক ছোট। আমার বোনের মতো। বলছেন অভিনেতা জয় মুখোপাধ্যায়।
Aindrila Sharma জয় মুখোপাধ্যায়: রবিবার এই দুঃসংবাদ আসায় বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ফুলের মত ছোট্ট একটা মেয়ে এইভাবে হারিয়ে যাবে ভাবিনি কোনওদিন। কাজের সূত্রে এখন কলকাতায় নেই। তাই নিজে গিয়ে উঠতে পারলাম না, শেষ দেখা দেখতেও পারলাম না। হয়ত এটাই শেষ সুযোগ ছিল ওর কাছে ক্ষমা চাওয়ার।
তখন জিয়নকাঠি ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছিলেন ঐন্দ্রিলা। আমি ওর বিপরীতে। ছোট্ট মিষ্টি একটা মেয়ে। বেশ ভালই চলছিল ধারাবাহিক। হঠাত্ই একদিন একটি দৃশ্যে অভিনয় করার সময় আমাদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়। এখন যদিও ও নেই, তাই সেই দৃশ্যটি নিয়ে বিশেষ কথা বলতে চাই না। তবু আজ এই সময় দাঁড়িয়ে আমি নিজেকে দোষী মনে করি। কারণ ও আমার থেকে অনেক ছোট। আমার বোনের মতো।
আরও পড়ুন-রাতের ক্লাবে শরীরী বিভঙ্গে 'শ্রাবন্তী' ঝড়়, নেটপাড়া বলছে...
আরও পড়ুন-সত্যি? হিরো আলমের নায়িকা এবার দীপিকা!
সেদিন একটি ইমোশনাল দৃশ্যের শুটিং চলছিল। আমি গ্লিসারিন নিয়েছিলাম। চিত্রনাট্যে চোখ বোলাচ্ছিলাম। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরও দেখি ও ফোনে গল্প করছে। একটু রেগে গিয়ে আমি রিঅ্যাক্ট করে ফেলেছিলাম, অতটাও হয়ত প্রয়োজন ছিল না। কনসেনট্রেট করতে পারছিলাম না আমি তাই রিঅ্যাক্ট করে ফেলি। বড় দাদা হিসাবেই বকে ফেলেছিলাম ওকে। একটু বেশিই কথা কাটাকাটি হয় শুটিং সেটেই। সেই থেকেই ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত। পরে অনেক জলঘোলা হয়, এরপর আমি আর ওই ধারাবাহিকে কাজ করিনি। সরে আসি, এছাড়াও চ্যানেলের সঙ্গেও চুক্তি শেষের দিকেই ছিল। এই ঘটনার পর প্রোডাকশন হাউজ এবং আর্টিস্ট ফোরাম মিলে সিদ্ধান্তও নেয়। এরপর আর কথা হয়নি ওর সঙ্গে। ১০০ টি পর্বে আমরা কাজ করেছি এক সঙ্গে কিন্তু একদিনের এই ভুল বোঝাবুঝি সম্পর্কটা তিক্ত করে দেয়।
তবে ওর শরীর খারাপ হয়েছে শোনার পর থেকে আমি খবর রাখতাম। দুবার ক্যান্সারকে জয় করেছে ও জানতাম। এখন ও নেই এটা ভাবতেও খুব খারাপ লাগছে। আজ যদি ও থাকত ঝগড়া করে নিতাম। ঝগড়া করার জন্য হলেও যদি ফিরে আসত। এভাবে ছেড়ে চলে যাওয়াটা খুবই কষ্টের। ও খুব মজা করে শুটিং করত, খুব পজিটিভ ভাইবস ছিল ওর মধ্যে। কোনও ক্লান্তি দেখিনি কোনওদিন। অনেক ভাল মুহূর্ত কাটিয়েছি আমরা দুজন, কিন্তু ওই একদিনের ভুল বোঝাবুঝি রয়ে গেল। অনেক কষ্ট পেয়েছে ও, অনেক সহ্য করেছে, She is a true fighter, তবে ভেবেছিলাম ও ফিরে আসবে। ওর পরিবার যা হারাল তা সামলে উঠুক, ও আশা করি এখন শান্তি পাচ্ছে। আক্ষেপ রয়ে গেল আমার আজীবনের যে আমি কোনওদিনও ওকে সরি বলতে পারলাম না। এখন তো ও তারা হয়ে গিয়েছে, যদি শুনতে পায় আমায় যেন ক্ষমা করে দেয়। ঝগড়া করতে হলেও ও যেন ফিরে আসে আমার কাছে, আমাদের কাছে।