Parambrata Chatterjee: `সোশ্যাল মিডিয়া খাপ-পঞ্চায়েত, বেকারদের দরবার!`, সোনার কেল্লায় দাঁড়িয়ে খাপ্পা পরম
Parambrata Chatterjee: সোমবার বিকেলে শ্য়ুটিংয়ে ব্যস্ত পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। তারই মাঝে জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের সঙ্গে কথা বললেন অভিনেতা। সোশ্যাল মিডিয়া প্রসঙ্গ উঠতে অভিনেতা বলেন, `সোশ্যাল মিডিয়া তৈরি হয়েছিল, যেখানে বন্ধুরা বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে। কিন্তু এখন হয়ে গেছে, সেই আগে যেমন গ্রামের গাছতলায় মোড়লরা বসে বিচারসভা বসাতো, এখন সোশ্যাল মিডিয়া সেরকমই হয়ে গেছে`।
সৌমিতা মুখোপাধ্যায়: বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে খবরের শিরোনামে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলেই দেখা যাচ্ছে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাঁটাছেঁড়া। তবে কাজের ক্ষেত্রে কী করছেন তিনি? সোমবার শেষ করলেন তিনি তাঁর আগামী ছবি 'সোনার কেল্লায় যকের ধন' ছবির শ্যুটিং। সেটে পৌঁছে দেখা গেল, শেষদিনের শ্যুটিং চলছে জমিয়ে। হাজির পুরো কাস্ট। তবে শ্যুটিং শুরুর আগেই জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের মুখোমুখি হলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়(Parambrata Chatterjee)।
সোনার কেল্লা নিয়ে সব বাঙালিরই নস্টালজিয়া আছে, সেই সোনার কেল্লায় ২০দিন শ্যুট করে কলকাতায় ফিরেছে ছবির গোটা টিম। সোনার কেল্লায় আগেও দুবার গিয়েছেন অভিনেতা। জানালেন যে তাঁর দেখা প্রথম থ্রিলার 'সোনার কেল্লা'। অভিনেতার মতে, 'সোনার কেল্লা নিয়ে অনেক ধরনের নস্টালজিয়া আছে। ছোটবেলায় সিনেমা দেখার অভ্যাস শুরু হয়েছে সোনারকেল্লা নিয়ে। তবে প্রত্যেকটা ভারতীয় শহরের মতোই জয়শলমীরও রোজই নোংরা হয়ে উঠছে। সেটা যেকোনও শহরের নগরায়নেরই অংশ।'
আরও পড়ুন- Dev vs Hiran: খাদানে বসে দেব, অভিনেতা-সাংসদের খাসতালুকে পায়ে পায়ে ধুলো ওড়ালেন শুভেন্দু-হিরণ...
হেমেন্দ্র কুমার রায়ের তিন বিখ্যাত চরিত্র বিমল, রুবি ও কুমারের সঙ্গে এবার দেখা সত্যজিত্ রায়ের চরিত্র মুকুলের। চরিত্রগুলো উপন্যাসের হলেও সায়ন্তন ঘোষালের এই গল্প একেবারে মৌলিক। চিরাচরিত উপন্যাসের সঙ্গে অন্য কিছু মেশালে কখনও দেখা যায়, দর্শকরা মেনে নিচ্ছে কখনও আবার দেখা যায়, দর্শক তা ফিরিয়ে দিচ্ছে। এই প্রসঙ্গে পরমব্রত বলেন, 'চরিত্রের বৈশিষ্ঠ্য গুলো একই থাকছে তবে গল্প মৌলিক। যদি আপত্তি নিয়ে বলি তো কিছু লোকের সবেতেই আপত্তি থাকে। যা কিছুই করো, ওদের মনঃক্ষুণ্ণ হবে। আবার কিছু লোক প্রশংসা করবে। সমাজমাধ্যম যে দুনিয়া তৈরি করেছে, তাতে এরকমই হবে। এই বক্তব্যগুলোকে মান্যতা দিতে গেলে কোনও কাজই করা যাবে না। তাই সম্ভ্রম, সম্মান রেখে যতটা কাজ করা যায়।'
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বরাবরই নিজেকে কিছুটা দূরে রাখেন পরমব্রত। অভিনেতার দাবি, তিনি 'প্রবলভাবে' নিজেকে দূরে রাখেন সমাজমাধ্যম থেকে। অভিনেতার মতে, 'আমার মনে হয়,সমাজমাধ্যম জায়গাটা নোংরামোর চাষ। ওটা একটা কর্মহীনতার দরবার। এত সময় মানুষের আছে! কারোর কাজ নিয়ে বা ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বা রাজনৈতিক জীবন নিয়ে, একটা খবর পেলেই তার পিছনে ধেয়ে যাওয়া, এটাই মূলত চলতে থাকে।'
আরও পড়ুন- Tollywood | Lok Sabha Election 2024: ভোটের হাওয়ায় ভাসছে রচনা-সায়নী-মিমি-জুনের নাম!
পরমব্রত আরও বলেন, 'সোশ্যাল মিডিয়া তৈরি হয়েছিল, যেখানে বন্ধুরা বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে। কিন্তু এখন হয়ে গেছে, সেই আগে যেমন গ্রামের গাছতলায় মোড়লরা বসে বিচারসভা বসাতো, এখন সোশ্যাল মিডিয়া সেরকমই হয়ে গেছে। আমার খাপপঞ্চায়েতে থাকার কোনও শখ নেই। আর খাপপঞ্চায়েতে কে কী বলছে, তা নিয়েও মাথা ব্যথা নেই। সমাজমাধ্যমে শুধু শুধু মানসিক উদ্বেগ বাড়ানো ছাড়া আর কিছু নেই'।
কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার ফলোয়ার দেখে টলিউডে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন অনেকে। সেই বিষয়ে পরমব্রত বলেন, 'আমরা যখন কাজ শুরু করেছি, তখন এই ফলোয়ারের বিষয় ছিল না। তবে এখন যাঁরা সবে কাজ শুরু করছে, তাঁদের ক্ষেত্রে অনেক সময় শুনি যে এর ফলোয়ার ভালো, একে নেওয়া হোক। এবার এখন সোশ্যাল মিডিয়াকে মান্যতা দিলে, এটাই মানতে হবে। তবে আমি মানব কিনা, সেটা আমার নিজস্ব চয়েজ। কিন্তু এটা বাকিরা করলে, আমি কী করে বলব? আমি তো কালচার কাকুর মতো তাঁদের বলতে পারিনা। কখনও বিরক্ত লাগে, কখনও আবার মনে হয়, পেশাগতভাবে তাঁদের কাছে একটা নতুন অ্যাভিনিউ খুলে গেছে।'
আরও পড়ুন- Raj| Srijit| Debaloy| Joydeep: রাজ-সৃজিত-দেবালয়-জয়দীপ, মহা মহরতে একসঙ্গে চার ছবির ঘোষণা...
নতুন ছবি নিয়ে কথার মাঝেই উঠে এল সম্প্রতি অনুরাগ কাশ্যপের বাংলা ছবি নিয়ে মন্তব্য। সেই প্রসঙ্গে পরমব্রত বলেন, 'অনুরাগ এক ব্যক্তিবিশেষ। তাঁর মন্তব্য আমাদের গায়ে লেগেছে, কারণ আমাদের মনে হয়েছে তিনি পুরো বিষয়টা জেনারালাইজ করে দিয়েছেন। তারমানে গত ১০-১২ বছরে কী আমরা কোনও ভালো সিনেমা বানাইনি? আমি সেটা সমর্থন করি না। ব্যক্তিগতভাবে তাঁর শব্দচয়নে আমার আপত্তি আছে বা যেভাবে বলেছেন তাতে আপত্তি আছে। আরও একবার বলছি, খুব বেশি করে জেনারেলাইজ করেছেন। তবে অনুরাগ বলেছেন বলেই, চলো আন্দোলনে নামি, সেটাও ভুল। আমাদেরও কিন্তু প্রতিনিয়ত একটা আত্মবিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে। বক্স অফিস বা গুণগতমানের নিরিখে গত ৫-৬ বছরে আমরা কী বানিয়েছি, আত্মবিশ্লেষণ দরকার। বক্সঅফিস কিংবা পৃথিবীর বিখ্যাত ফিল্ম ফেস্টিভাল কোনও একটাকে মান্যতা দিতে হবে। কেউ বলছে, আমার ছবি চলে না তো কী হয়েছে, ভালো ছবি। কেউ আবার বলছে, মান যাই হোক, বক্স অফিসে চলছে। এটা তো সোনার পাথরবাটি হয়ে যাচ্ছে। কিছুকে তো একটা মান্যতা দিতে হবে।'