পর্ন অনলে বয়ঃসন্ধি
রণিতা গোস্বামী
রণিতা গোস্বামী : অনলের এখন বয়ঃসন্ধিকাল। অপরিপক্ক বয়স। শরীর নিয়ে তার মনে এখন নানান গোপন কৌতুহল। আর সেই কৌতুহলকে উস্কানি দিতে ইন্টারনেট দুনিয়ায় আজ হাজারও রঙিন জিনিস ঘোরাফেরা করে। সেই নীল ছবির হাতছানিতেই সাড়া দিয়ে বসে অনল। পরিণতীতে নীল ছবির প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে সে। যা অনলকে বাস্তব থেকে দূরে ভার্চুয়াল জগতে নিয়ে যায়। সে স্কুল ছাত্র, তবুও পড়াতে যেন ঠিক মন বসে না। 'পর্ণোগ্রাফি' দেখার আগ্রহ যেন ক্রমশ পেয়ে বসে অনলকে। তার মতোই তার বন্ধু-বান্ধবরাও অপরিণত বয়সের। বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে স্কুলেও 'পর্নোগ্রাফি' দেখার লোভ সামলাতে পারে না অনল। ধরাও পড়ে। বাড়িতে নালিশ যায়। খুব স্বাভাবিকভাবেই কপালে জোটে ভীষণ বকুনি।
এতক্ষণ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। তবে হঠাৎ বাবার মৃত্যু বদলে দেয় অনলের দুনিয়া। বাবা যে বড্ড কাছের ছিল অনলের। তবে বাবার রেখে যাওয়া একটা পেন ড্রাইভ-ই তোলপাড় করল অনলের জীবন। এক মুহূর্তে বাবার প্রতি ভালোবাসা বদলে গেল ঘৃণায়। আর এখানেই অন্যদিকে মোড় নেবে পরিচালক কৌশিক করের প্রথম বাংলা ছবি 'পর্ণমোচী'।হ্যাঁ গল্পটা, তাঁর নিজের লেখা সেই জনপ্রিয় নাটক 'পর্ণমোচীর'ই গল্প। যে 'পর্ণমোচী' নাটক হিসাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেটাই এবার আসছে সিনেমার মাধ্যমে আরেকটু অন্যভাবে দর্শকদের আঙিনায় আসছে। আর এই গল্পের নায়কই হল এই বয়ঃসন্ধির অনল।
তবে শুধু পেনড্রাইভ রহস্যই নয়, অনলের জীবনে এরপরেও অনেক ঝড় বাকি রয়েছে। একপাড়ে বাস্তব, অন্যপাড়ে ভার্চুয়াল জগত। কাকে আঁকড়ে ধরে অনল এগোবে সে বুঝে উঠতে পারে না। অনল প্রেম করে। তবে তার প্রেমিকাও ভার্চুয়াল জগতের। আর এই প্রেমই এক ভয়ঙ্কর সত্যির সামনে এনে দাঁড় করাবে অনলকে। যা হয়ত অনল কেন দর্শকদের কাছেও আশাতীত নয়। আর সেটা জানতে গেলে 'পর্ণমোচী'র মুক্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ৩০এ মার্চ মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি।
এখানে অনলের চরিত্রে দেখা যাবে ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়কে (অভিনেতা শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়ের ছেলে)।এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, অঙ্কিতা চক্রবর্তী, কনিনীকা বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে। এই ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন প্রিয়াঙ্ক, সমীরণ এবং ক্যামেরা করেছেন সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়।
নাটকের জগতে কৌশিক কর যথেষ্ঠ জনপ্রিয় নাম। নাট্য পরিচালক হিসাবে, অভিনেতা হিসাবে নাট্যপেমীদের কাছে তাঁর জনপ্রিয়তার কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে নাটকের পরে সিনেমার জগতেও তিনি পা রেখেছেন বহুদিন হল। এর আগে বেশকিছু বাংলা ছবিতে অভিনেতা হিসাবে আমরা কৌশিক করকে পেয়েছি। তবে বাংলা ছবির পরিচালক হিসাবে আমরা তাঁকে এই প্রথমবার পাব।
'পর্ণমোচী' বলতে আমরা বুঝে যে গাছ পাতা ঝড়িয়ে দেয়। তরে এই ছবিতে পর্ণমোচীর সঙ্গে পর্ন অর্থাৎ পর্নোগ্রাফিকে মিলিয়ে মিশিয়ে দিয়েছেন পরিচালক। কৌশিক কর zee ২৪ঘণ্টাকে জানান, ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফির রমরমা ব্যবসা এবং তার প্রভাব যে সমাজে কতটা ভয়ঙ্কর, সেটাই এই ছবির মাধ্যমে তুলে ধরতে চেয়েছেন পরিচালক। পর্নোগ্রাফি শুধু বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদেরই নয়, সব বয়সের মানুষকেই বাস্তব জগত থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। যার কু-প্রভাব পড়ে আমাদের বাস্তবের সম্পর্কগুলোতেও। শুধু তাই নয়, বয়ঃসন্ধির কৌতুহল মেটাতে, এই বয়সের ছেলেমেয়েদের সঠিক পথে চালনা করতে সেক্স এডুকেশন যে কতটা জরুরি, তাও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চান পরিচালক।
ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে 'পর্ণমোচী'র ট্রেলার। যা সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের কৌতুহল আরও বেশকিছুটা বাড়িয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন- এই গানেই সল্লুকে মুখের উপর জবাব দিলেন বাংলার অরিজিৎ!