শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: মহালয়ায় ফের পথে জুনিয়র ডাক্তাররা। এদিন মহামিছিলের ডাক দেন তাঁরা। স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগ চেয়ে তাঁগের এই মিছিলে হাজির ছিলেন অভিনেত্রী সোহিনী সরকার। প্রথমদিন থেকেই আরজি করে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছেন সোহিনী। আজ ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের মঞ্চে ফের সরব হলেন অভিনেত্রী। পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধেও সওয়াল করেন তিনি। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণেরও বিরোধিতা করেন তিনি। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সোহিনী বলেন, 'আমরা তো বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত। আর আমরা তো সত্‍ভাবে কাজ করি, তাহলে আমরা ভয় পাব কেন?রাজ্যসরকারের স্কুলগুলোর এমন অবস্থা কেন? উত্তরপ্রদেশ তো মডেল রাজ্য নয়। আমরা পশ্চিমবঙ্গকে এমন একটা মডেল রাজ্য হিসাবে গড়ে তুলি যে সারা ভারত আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে। সারা ভারত বলবে যে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ নিজেদের অধিকার নিয়ে থাকে। আমাদের বড় বাড়ি, গাড়ি চাই না। কিন্তু  খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্য তো চাই। এরপর বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন পেশায় তাঁদের মেধা দিয়ে উন্নতি করবে'। 


আরও পড়ুন- Mt.Everest Height: রোজ আরও লম্বা হচ্ছে এভারেস্ট! তবে কমপ্ল্যান নয়, একটা নদীর জন্য...


'আমাদের অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। আমরা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এই লড়াই করেছি। আমরা এই রাজ্যকে শিশুদের বাসযোগ্য করে যেতে পারব। অনেকটা সময় চুপ করে কেটে গেছে আমাদের। পাঁচটা ছেলে আড্ডা দিচ্ছে, যাতে ওরা আমায় টোন না করে, আমি পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছি। আমার জামাটা ঠিক আছে তো? নিজেকে ঢেকে পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছি। কিন্তু কী হল? সারা পৃথিবী জুড়ে বহু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এবার যেন পায়ের তলা থেকে মাটিটা সরে গিয়েছে। আমরা যখনই প্রশ্ন করছি, কোনও না কোনও রাজনৈতিক দল চলে আসছে স্বার্থসিদ্ধির জন্য। সামনেই তো ২০২৬, ভোট। এটা কেন্দ্র করে তাঁরা যদি কোথাও পৌঁছতে পারে তাদের সুবিধা হবে। কিন্তু আমরা এগুলো বুঝতে পারছি। আজ যারা এখানে এসেছি, তারা কেউ কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। কোনও লোভে আমরা আসিনি', দাবি সোহিনীর। 


অভিনেত্রী আরও বলেন, 'সাধারণ মানুষ আসতে আসতে কোথায় তলিয়ে যাচ্ছি। আর মন্ত্রী নেতারা অট্টালিকায় উঠছে। গোদী পেলে মানুষ মানুষের কথা ভুলে যায়। সেই পুরনো দিনের রাজা প্রজার মতো। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তখনই ঠিক হবে যখন নেতা মন্ত্রীরা সরকারি হাসপাতালে চিকিত্‍সা করাতে যাবে। সেই দেশ তখনই উন্নত হবে যখন নেতা মন্ত্রীর ছেলে সরকারি স্কুলে পড়বে। জেলায় মফস্বলে যে অরাজকতা চলছে। মানুষ তাঁদের মতো কথা বলতে পারছে না। কিন্তু আমরা তো শহরে থাকি। তাই তাদের থেকে আমরা একটু বেশি আশীর্বাদধন্য। আমরা অনেক প্ল্যাটফর্ম পাচ্ছি কথা বলার'। 


আরও পড়ুন- Aamir Khan: স্বজনহারা আমির, সকাল সকাল প্রাক্তন স্ত্রীর কাছে ছুটে গেলেন অভিনেতা...


সোহিনী বলেন এই আন্দোলন শুধু জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নয়, এটা নাগরিক আন্দোলন। 'এখানে আমরা সবাই নিজের স্বার্থে এসেছি। আমাদের সকলের মধ্যেই এক তিলোত্তমা বাস করে। আমরা সেই অধিকার নিয়েই কথা বলতে এসেছি। জুনিয়র ডাক্তাররা আমাদের সেই পথ দেখিয়েছে। আন্দোলন তো একদিনের বা একবছরের নয়! এ তো দীর্ঘ পথ। আমাদের অতিক্রম করতেই হবে। আমরা যেমন সরকারের দিকে প্রশ্ন তুলছি, সেরকম একটা আঙুল আমাদের নিজের দিকেও তোলা উচিত। আমরাও তো চুপ করেছিলাম। আমরাও তো ঘুষ দিয়েছি। পাশের বাড়িতে কোনও অন্যায় হলে নিজের বাড়ির দরজা দিয়ে বসে থেকেছি। এটা আর করলে হবে না', বললেন সোহিনী। 
 
পিতৃতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে সরব হন সোহিনী। অভিনেত্রী বললেন, 'আমাদের মধ্যে হয়তো নীতির ফের আছে। হয়তো সবাই সবার কথা মানি না। কিন্তু আমাদের এখন সবার একটাই লক্ষ্য যে এই ভয়ের রাজনীতি বাদ দিয়ে, হুমকির সংস্কৃতি বাদ দিয়ে, ধর্ষণের সংস্কৃতি বাদ দিয়ে কীভাবে একটা সুষ্ঠ পরিবেশে বাঁচতে পারব।পিতৃতান্ত্রিকতা থেকে কবে আমরা মুক্তি পাব। পিতৃতান্ত্রিকতা আমাদের সবার মধ্যে আছে। এটা পুরুষদের বিরোধিতা নয়, এটা একটা আইডিয়া। এই যে মুখ্যমন্ত্রীকে কালীঘাটের ময়না বলা হয়, সেটা নিয়েও আমার আপত্তি আছে। এটাও পিতৃতন্ত্রের নিদর্শন। ওঁর কাজ নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারি কিন্তু একজন মহিলাকে এভাবে আক্রমণ করতে পারি না। প্রথম রাত দখল থেকেই মহিলাদের পোশাক, মহিলারা কোথায় সিগারেট খাচ্ছে...সারাক্ষণ খালি মহিলাদের আক্রমণ করা হচ্ছে'। 



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)