নিজস্ব প্রতিবেদন: ২০০৭ সালের ‘দ্য কাইট রানার’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। এরপরই তালিবানি আক্রোশের মুখে পড়েন অভিনেতা। শরণার্থী হিসেবে সুইডেনে আশ্রয় নিতে হয়। তালিবানি হুমকিতে আফগানিস্তান ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। পাচারকারীদের থেকে পালিয়ে, চরম দুর্ভোগ স্বীকার করে অবশেষে ইউরোপের দেশে পৌঁছেছিলেন তিনি।  বিখ্যাত লেখক খালেদ হোসাইনির(Khaled Hosseini) প্রথম উপন্যাস 'কাইট রানার'(The Kite Runner) অবলম্বনে তৈরি হলিউডের ছবির প্রধান চরিত্র, হাজারা সম্প্রদায়ের ছোট্ট ছেলে হাসানের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন আহমেদ খান মাহমুদজাদা (Ahmad Khan Mahmoodzada)। ২০০৩ সালে প্রকাশিত 'কাইট রানার' বইটি যতটা জনপ্রিয়তা পেয়েছিল, ততটাই সম্মান পেয়েছিল ২০০৭ সালে একই নামে তৈরি ছবিটি। শুধুমাত্র সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তালিবানি আতঙ্কে দেশ ছাড়তে হয় তাঁকে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সিনেমায় ছোট হাসানের চরিত্রে অভিনয় করেছিল মাহমুদজাদা। তালিবানি রোষে দেশ ছেড়ে মধ্য এশিয়া, রাশিয়া, বাল্টিক সাগর, বেলারুজ পেরিয়ে সুইডেনে পৌঁছন। নিজের দেশ ছেড়ে শরণার্থী তকমা জোটে।  বরফশীতল সমুদ্রে সাঁতার কেটেও আসতে হয়েছিল তাঁকে। আফগানিস্তানে শুট হওয়া ‘দ্য কাইট রানার’ ছবিটি গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডে মনোনয়ন পেয়েছিল। খুব সামান্যই পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন মাহমুদজাদা। কিন্তু অভিনয় করতে বেশ ভাল লেগেছিল। সিনেমায় অভিনয়ের পরই বিপত্তি।সিনেমায় দেখানো হয়েছিল, হাসানকে যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। প্রযোজকরা বলেছিলেন, এই দৃশ্য বাদ পড়বে বাদ দেওয়া হবে সম্পাদনার সময়। কিন্তু সেই দৃশ্য বাদ পড়েনি। চরম আশঙ্কায় ছিল মাহমুদজাদার পরিবার। সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়। চরম গোঁড়া আফগান সমাজ মানতে পারেনি সেই দৃশ্য। ছবিটি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। আহমেদ এবং তাঁর বাবাকে দুই বছর দুবাইয়ে থাকতে হয়েছিল। বাকি পরিবার তালিবানি হুমকির মাঝেই আফগানিস্তানে ফিরতে বাধ্য হয়। কিন্তু ফিরতে পারেননি আহমেদ। তাঁকে অন্য এক পরিবারের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হন নিজের বাবা।


আরও পড়ুন: সাধে তিনি Wonder Woman! পর্দার পিছনে শুধুই মা


হাজারা সম্প্রদায়ের পরিচারকের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন আহমেদ। পাস্তুন সম্প্রদায়ের একটি চরিত্র তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করছে, এমনটাই দেখা হয় .সিনেমার পর্দায়। হাজারা সম্প্রদায়ের মানুষরা মেনে নিতে পারেনি আহমেদকে। চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন তিনি। অন্যদিকে,পাস্তুনরা ক্ষুব্ধ হন। তাঁদের দাবি ছিল, সিনেমায় যেমন দেখানো হয়েছে, বাস্তবে তেমন নন তাঁরা। চরমে ওঠে অশান্তি। শরণার্থী হয়ে সুইডেনে এসে অবশেষে একটু শান্তিতে রয়েছেন আহমেদ। পালিত বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতে থাকতে ভাষাটা শিখে ফেলেন চট করে। রপ্ত করে ফেলেন সুইডিশ ভাষাটা। সুইডেনের স্থানীয় ক্লাবে খেলতেও শুরু করেন আহমেদ। অভিনয়ের জন্য আর লজ্জায়, ভয়ে কুঁকড়ে থাকতে হয় না তাঁকে। আবারও সিনেমায় কাজ করতে চান তিনি। স্বপ্ন দেখেন, নিজের মতো করে অনেক দূর পড়াশোনা করার। সম্প্রতি স্থানীয় চলচ্চিত্র উত্সবে জুরিও নির্বাচিত হয়েছেন আফগান মুলুকের কিশোর। মাঝে মাঝে আফগান মুলুকের কথা মনে পড়ে। ফিল্ম স্কুলে অভিনয়ের জেদটা যেন আরও বেশি চেপে ধরে তখন। ২ হাজার বাচ্চার মধ্যে অডিশন দিয়ে অভিনয়ের সুযোগ মিলেছিল যে।


  (Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)