Soumitra Chattopadhyay Death Anniversary: তিন বছর আগে এই দিনেই চলে গিয়েছিলেন তিনি...
Soumitra Chattopadhyay Death Anniversary: কুরোসাওয়ার মিফুনের মতো, ফেলিনির মাস্ত্রোয়ানির মতো, বার্গম্যানের ম্যাক্স ভন সাইডিউ-র মতো আমাদেরও রয়েছেন তিনি। না, `রয়েছেন` না, `ছিলেন`। `তিনি` সৌমিত্র; সত্যজিতের সৌমিত্র! সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কুরোসাওয়ার মিফুনের মতো, ফেলিনির মাস্ত্রোয়ানির মতো, বার্গম্যানের ম্যাক্স ভন সাইডিউ-র মতো আমাদেরও রয়েছেন তিনি। না, 'রয়েছেন' না, 'ছিলেন'। 'তিনি' সৌমিত্র; সত্যজিতের সৌমিত্র! সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তিন বছর আগে আজকের দিনেই চলে গিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ছবি-সংসারের ঘরে-বাইরে এক অপরাজিত অভিযান
তিনটি বছর আগে, আজকের দিনে, এই ১৫ নভেম্বরে দুপুর ১টা নাগাদ বাংলার সংবাদমাধ্যম মোটামুটি ছেয়ে গিয়েছিল যে তিনটি হৃদয়বিদারক শব্দবন্ধে, সেগুলি হল --'প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়'! তাঁর মৃত্যুতে আক্ষরিক অর্থেই বাংলা চলচ্চিত্রের একটা যুগ যেন শেষ হয়ে গিয়েছিল, সমাপ্ত হয়ে গিয়েছিল একটা অনন্য ঐতিহ্য, স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল অভিনয়শিল্পে কৌলিন্যের স্রোত।
সেদিন আমরা জানতে পেরেছিলাম, দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে অবশেষে হার মানলেন সৌমিত্র। করোনা-পর্বেই অসুস্থ হয়েছিলেন। ৫ অক্টোবর কোভিড টেস্টের রিপোর্ট আসে সৌমিত্রের। তবে করোনায় মারা যাননি তিনি। কোভিড-মুক্ত হয়েছিলেন। তবে তাঁর ক্ষেত্রে ক্রমশ বড় হয়ে দাঁড়াচ্ছিল কো-মর্বিডিটি ফ্যাক্টর। করোনাই যেন অনুঘটকের মতো তাঁকে না-ফেরার দেশে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সেদিন! শরীরে অনেকরকম জটিলতা দেখা দিয়েছিল। একের পর এক অঙ্গ নিষ্ক্রিয় হচ্ছিল। কোভিড-এনসেফ্যালোপ্যাথিই এর কারণ বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। ৪০ দিন ধরে শহরের এক অভিজাত বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন সৌমিত্র। চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছিল, মাল্টি অর্গান ফেলিওর, ব্রেন ডেথ হয়ে মৃত্যু হয়েছে সৌমিত্রের! মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬।
আরও পড়ুন: Soumitra Chatterjee: তাঁর মন 'ইগো'কে বিসর্জন দিয়ে 'আত্ম'কে বড় করে তুলত
কিন্তু তাঁর মতো অভিনয়শিল্পীর তো মৃত্যু হয় না। তাঁর মতো অভিনয়জীবীরা না থেকেও থেকে যান। ঐতিহ্যের ভিতরে, স্মৃতির পরতে, ইতিহাসের মর্মে। কিংবা, বলা ভালো, এত পরোক্ষভাবেও হয়তো নয়, তাঁরা থেকে যান আসলে আরও প্রত্যক্ষ ভাবে। হয়তো আজকের কোনও শিল্পী আজকের সময়ের নিরিখে তৈরি কোনও চরিত্রের রূপ দিতে গিয়ে সৌমিত্রের কোনও চরিত্রের কোনও এক্সপ্রেশন বা কোনও মুভমেন্ট থেকে পাঠ নিচ্ছেন, বা সেটাকেই সরাসরি তুলে আনছেন নিজের নির্মাণে। সৌমিত্ররা তাই আসলে সেই শিল্পযজ্ঞের হোতা। যাঁর যজ্ঞের আগুন সবসময়ই দীপ্তিমান। যা থেকে অগ্নি সংগ্রহ করে এগিয়ে যান পরবর্তী কালের অভিনেতারা। তাই অপু, অমল, ময়ূরবাহন, নরসিং, অজয়, সন্দীপ, দেবু পণ্ডিত, ক্ষিদ্দারা আজও ঘুরে বেড়ায় আজকের অভিনয়জীবী, আজকের অভিনয়প্রেমীর মাথার ভিতরে, বোধের ভিতরে, মননের ভিতরে।