সুদীপ দে: ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এরই মধ্যে নতুন আতঙ্কের নাম ‘স্ক্রাব টাইফাস’! জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কলকাতার বেসরকারি দুই শিশু আক্রান্ত হয়েছে স্ক্রাব টাইফাসে। আপাতত শহরের বেসরকারি হাসপাতালে ওই দুই শিশুর চিকিৎসা চলছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এই প্রথম নয় এর আগেও গত বছরের অক্টোবর, নভেম্বর নাগাদ বহরমপুরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল আর নার্সিংহোমে অন্তত ৫০ জনের শরীরে স্ক্রাব টাইফাসের জীবাণু মিলেছিল। ধুম জ্বর, গা-হাত-পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা ইত্যাদি এই রোগের প্রধার উপসর্গ।


বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ট্রম্বিকিউলিড মাইটস বা টিকের (tick) মতো পরজীবী মাকড়ের কামড় থেকে এই এই রোগের জীবানু ছড়ায়। ট্রম্বিকিউলিড মাইটস বা টিকের আকার ০.২ মিলিমিটার থেকে ০.৪ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়। ‘স্ক্রাব টাইফাস’ একটি ব্যাকটেরিয়াঘটিত রোগ। প্রধানত ‘ওরিয়েনসিয়া শুশুগামুসি’ নামের ব্যাক্টেরিয়াই এ রোগের জন্য দায়ি।


গ্রাম বাংলার কৃষিজীবী মানুষ এই জাতিয় মাকড়ের সঙ্গে ভালভাবেই পরিচিত। বাড়িতে পোষা কুকুর-বেড়ালের দৌলতে শহুরে বাসিন্দারাও অনেকেই এই মাকড়ের সাক্ষাৎ পেয়েছেন। ডেঙ্গি আর স্ক্রাব টাইফাসের লক্ষণগুলি অনেকটা একই রকম। তাই প্রাথমিক ভাবে এর উপসর্গ চিনতে সকলেরই সমস্যা হয়।


কতটা ভয়ের কারণ রয়েছে স্ক্রাব টাইফাসে?


এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডঃ অরিন্দম পাণ্ডে জানান, স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। করোনা আতঙ্ক শুরুর আগেও অনেকেই স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়েছেন, আবার সম্পূর্ণ সেরেও উঠেছেন সকলেই। তাই এ নিয়ে অযথা ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করেন ডঃ পাণ্ডে।


আরও পড়ুন: হঠাৎ করে স্বাদ আর ঘ্রাণশক্তি হারিয়েছেন? করাতে হতে পারে করোনা পরীক্ষা!


শিশুদের ক্ষেত্রে কতটা ভয়ের স্ক্রাব টাইফাস?  


শিশু-বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক (চাইল্ড স্পেশালিস্ট) ডঃ অনিন্দ্য কুণ্ডু বলেন, “সময় মতো চিকিৎসা শুরু করা না গেলে শুশপর ক্ষেত্রে বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে স্ক্রাব টাইফাস।” তিনি জানান, টাইফয়েডের মতো উপসর্গ এবং মাকড়ের কামড় থেকে এটি হয় বলেই এর নাম স্ক্রাব টাইফাস। অ্যাজিথ্রোমাইসিনের মতো সহজলভ্য অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগে সহজেই এই রোগ নির্মূল হয়। অনেক ক্ষেত্রে তিন থেকে পাঁচ দিন ধরে চলা জ্বরের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন। আর তাতেই ধরা পড়ার আগেই সেরে যায় স্ক্রাব টাইফাস। ডঃ কুণ্ডুর পরামর্শ হল, শিশুর জ্বর পাঁচ দিনের বেশি স্থায়ী হলেই চিকিৎসকরা যেন স্ক্রাব টাইফাসের আশঙ্কার কথাও মাথায় রাখেন এবং সেই মতো চিকিৎসার ব্যবস্থা নেন।