নিজস্ব প্রতিবেদন: এই গাছের বেশ কিছু ভেষজ গুণের কথা অনেকেই শুনেছেন। তবে এটি থেকে যে করোনার ওষুধও তৈরি করা সম্ভব, এমন দাবি এই প্রথম সামনে এল। গত এপ্রিলেই এই গাছের বিশেষ ভেষজ গুণ সম্পর্কে জানান মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোইলিনা। তার পর সামনে আসে জার্মান বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা। এখন রীতিমতো বিজ্ঞানীদের চর্চায় রয়েছে আর্টেমিসিয়া নামের গাছটির আশ্চর্য ঔষধি গুণ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এই আর্টেমিসিয়া গাছের নির্যাস ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকর। ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে এই ভেষজ নির্যাসের কার্যকারিতা ইতিমধ্যেই প্রমানিত। ইংরেজিতে একে ‘সুইট ওয়ার্মউড’ও বলা হয়। ইতিমধ্যেই বিজ্ঞানীরা এই গাছটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন। তাঁদের একাংশের দাবি, এই গাছটিতে এমন বেস কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলি করোনার সংক্রমণ ও শরীরে এই ভাইরাসের বিস্তার রুখতে সক্রিয় ভাবে কাজ করে।


শনিবারই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, এই আর্টেমেশিয়া গাছের নির্যাস বা এর থেকে তৈরি পাচন করোনার চিকিৎসায় প্রয়োগ করে সুফল পেয়েছে আফ্রিকার একাধিক দেশ। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে জোরাল দাবি করেছে মাদাগাস্কর। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই দু’টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে করোনা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে নিজের কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে আর্টেমেশিয়া গাছের নির্যাস। এখন শেষ পর্বের ট্রায়াল চলছে। এই চূড়ান্ত ট্রায়ালের ফলাফলের উপরেই করোনার চিকিৎসায় এর প্রয়োগের ছাড়পত্র পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে।


বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মাদাগাস্কারে পাওয়া গেলেও আর্টেমিসিয়ার উৎস এশিয়া। এশিয়া মহাদেশের অনেক দেশেই এই গাছ জন্মায়। চিনে যুগ যুগ ধরে প্রদাহ-নাশক ওষুধ তৈরিতে আর্টেমিসিয়ার ব্যবহার হয়ে আসছে। সে দেশের ভেষজশাস্ত্রে এই গাছটির নাম কিংহাও। এপ্রিলের শুরুতে প্রথমে পাচন, তারপর ক্যাপসুল ও ইঞ্জেকশন আকারেও শুরু হয় আর্টেমিশায়া নির্যাস থেকে ভেষজ ওষুধ উৎপাদনের কাজ। যদিও তা এখনও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়ে মাদাগাস্করেই সীমাবদ্ধ।


আরও পড়ুন: মাত্র ১৫ সেকন্ডেই করোনা জীবানু ধ্বংস করতে পারে সহজলভ্য উপাদানে তৈরি এই দ্রবণ! দাবি বিজ্ঞানীদের


জার্মানির ‘ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট অব কোলয়েডস অ্যান্ড ইন্টার্ফেসেস’-এর গবেষকরা দাবি করেন, আর্টেমিসিয়া গাছের নির্যাসে তাঁরা করোনা-রোধী শক্তিশালী ভেষজ উপাদানের সন্ধান পেয়েছেন। করোনার সংক্রমণ ও ভাইরাসের কোষ বিভাজনের প্রক্রিয়াকে সক্রিয় ভাবে বাধা দিতে সক্ষম এই ভেষজ উপাদান।


আর্টেমিসিয়া সম্পর্কে WHO-এর এই ঘোষণার পরই ভারতীয় আয়ুর্বেদ চিকিৎসা ও গবেষণার পালেও হাওয়া লেগেছে। সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে দেশের আয়ুশ মন্ত্রক। ভারতেও করোনার চিকিৎসায় একাধিক ভেষজ ওষুধ নিয়ে শতাধিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। আর্টেমিসিয়া ক্ষেত্রে WHO-এর সম্মতি মিললেই ভারতেও করোনার আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় গতি আসতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।