রণয় তেওয়ারি: লেকটাউনে দিনের আলোয় শ্যুটআউট! দমকলকর্মীকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। যদিও এরপরেও বেশ কিছুদিন অভিযুক্তরা অধরা ছিল। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় লেকটাউনে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এই ঘটনায় ডিসি বিশপ সরকার জানিয়েছেন, ‘গত ১৩ তারিখ, লেক টাউন থানা এলাকায় একটা আনফর্চুনাট ইনসিডেন্ট হয়। স্নেহাশীষ রায় নামে এক ব্যাক্তি যার ডাকনাম ছোটকা তিনি স্কুল থেকে মেয়েকে নিয়ে আসছিলেন। মেয়ে বাড়িতে ঢুকে যায়।  বাড়ির দোরগোড়ায় বাইকটা দাঁর করান। তাঁর মেয়ে তখন উপরে চলে যায়। সেই সময়ে তাকে ক্লোজ রেঞ্জে পেছন থেকে শুট করে। দুটো গুলি লাগে। তাঁর স্ত্রী তাঁকে আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর সেখানেই তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়’।


তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনায় মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আফরাজ আনসারি ও আয়ুশ শার্মা, সবার আগে এই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার ২ থেকে ৩ঘণ্টার মধ্যে এই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। আয়ুশ স্বীকার করে শুটিংটা সেই করেছিল। টিটাগার থানা এলাকা থেকে এই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়’।


ডিসি জানিয়েছেন, ‘এরপর ১৪ তারিখে আকাশ নামে একজন গ্রেফতার হয়। তারপর ১৫ তারিখে গ্রেফতার হয় সাগর। ১৬ তারিখে গ্রেফতার হয় রাহুল। এই ঘটনায় এই পাঁচজন গ্রেফতার হয়’।


যে আর্মস টা দিয়ে ফায়ার করা হয়েছিল সেটা সাগরের কাছ থেকে রিকভার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ডিসি জানান মধ্যমগ্রাম থানা এলাকার একটি ঘর থেকে গ্রেফতার হয় সাগর। সেই ঘর থেকেই উদ্ধার হয় আর্মস।


এই ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে ডিসি জানিয়েছে যে, ‘এখনও পর্যন্ত তদন্তে যেটা পাওয়া গিয়েছে, এটা বেসিক্যালি একটা কন্ট্রাক্ট কিলিং। যে গুলি চালিয়েছিল আফরোজ কিংবা আফরোজের সঙ্গে আয়ুশ, এদের কিন্তু ভিক্টিমের সঙ্গে কোনও ব্যাক্তিগত শত্রুতা ছিলনা। এরা জাস্ট কন্ট্রাক্ট নিয়েছিলো ভিকটিম কে মারার জন্য’।


তিনি জানান, এই কাজের কন্ট্রাক্ট দিয়েছিল সাগর। সাগরের সঙ্গে একটা ব্যাক্তিগত শত্রুতা ছিলো ভিক্টিমের।


তিনি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত দুটো অ্যাঙ্গেল পাওয়া গিয়েছে। সাগরের একটা লটারির দোকান ছিল। সেটা কোনও কারণে ব্যাবসায় মন্দা হয় এবং লটারির দোকানটা উঠে যায়। সাগরের ধারণা ছিল, এই যে লটারির ব্যাবসাটা খারাপ হয়ে গেল এর পেছনে স্নেহাশিস এর হাত রয়েছে’।


আরও পড়ুন: Stray Dog Feeding: পথ কুকুরদের খাওয়ানোয় মার তরুণীকে, থানায় অভিযোগ ৭ মহিলার নামে


তিনি বলেন, ‘আরও একটা পার্সোনাল অ্যাঙ্গেল পাওয়া গিয়েছে। সাগর একদিন নিজের স্ত্রী কে, ভিক্টিমের সঙ্গে দেখে নেয়ে। এরপর থেকেই সাগরের একটা ধারণা হয়ে যায়, ওর স্ত্রীর সঙ্গে ভিক্টিমের একটা অ্যাফেয়ার আছে। এরই পরিণতি হিসেবেই এই খুনটা হয়। এটা সাগর কনফেস করেছে’।


স্নেহাশিস কে কিভাবে চিনত সাগর? সেই প্রশ্নের জবাবে ডিসি জানিয়েছেন, ‘চিনত বলতে এক পাড়ায়, আসা যাওয়া, আড্ডা মারা। ওর অরিজিনাল বাড়ি খরদা, টিটাগর হলেও এখানে মাঝেসাঝে ওর যাতায়াত ছিল। আড্ডার সূত্রেই স্নেহাশিস এর সঙ্গে আলাপ’।


তিনি আরও বলেন, ‘এমনি ভিক্টিমের সঙ্গে ওর আলাপ অনেকদিন ধরেই আছে। দু তিন বছর ধরে আছে। কিন্তু সম্পর্কটা খারাপ হতে শুরু করে লাস্ট ৬মাস ধরে’।


এর আগেও তো স্নেহাশিস কে গুলি করা হয়েছিল, তখনও কি এই সাগরের কোনও রোল আছে? সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এইটা তো দমদম থানায় হয়েছিল, এইটা আমাদের পার্ট নয়। এইটা নিয়ে আমার কিছু বলা উচিত নয়। তবে এইটুকু বলতে পারি, এই কেসটা ডিটেক্ট হওয়ার পরে, ওই কেসটার সম্পর্কেও আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি এবং সেই তথ্যগুলো আমরা ব্যারাকপুর কমিশনারেটের হাতে তুলে দেবো। এই ওভারঅল কেসে ব্যারাকপুর কমিশনারেট আমাদের প্রচন্ড ভাবে হেল্প করেছে’।


আরও পড়ুন: Kolkata Attack: দোষীদের শাস্তি চান টালিগঞ্জে আক্রান্ত অটিস্টিক যুবক


এই কেসে সাগরের স্ত্রীর কোনও রোল আছে কীনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।


সাগরের সম্পর্কে জানানো হয়েছে যে ২০১০ সালে কাজল নামে এক ব্যাক্তির মৃত্যু হয়, সেখানে ৮ মাস জেলে ছিল সাগর। এরপরে বেল পায় সে। ২০১৭ সালে খরদা থানা এলাকায় একটা ফায়ারিং কেসেও ইনভলভ ছিল সাগর এমনটাই জানানো হয়েছে।


যেদিন ঘটনাটা ঘটে, তার তিনদিন আগে থেকে রেইকি হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিস। আকাশ মল্লিক নামে, যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই আকাশই, সুপারি কিলারদের বাড়িটা চিনিয়ে দেয়ে বলে জানানো হয়েছে।


রাহুল এখানে মিডল ম্যান হিসেবে কাজ করে বলে জানা গিয়েছে। সাগর রাহুলের মাধ্যমে সুপারি কিলারদের বলেছিল বলে জানানো হয়েছে।


এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে যে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই খুন করা হয়েছিল। কিন্তু পেমেন্টটা, এখনও হয়েছে কিনা সেই বিহয়ে কোনও কিছু জানা যায়নি।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)