নিজস্ব প্রতিবেদন: বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল শিবিরে শুরু হয়েছিল দল ছাড়ার হিড়িক। ঘাসফুল শিবির ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলের বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা। এবার পুরসভা ভোটের প্রার্থীতালিকা প্রকাশ হতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ওই তালিকা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এনিয়ে জি ২৪ ঘণ্টায় এক একান্ত সাক্ষাতকারে মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন জি ২৪ ঘণ্টার চ্যানেল হেড মৌপিয়া নন্দী। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বিজেপি হাওয়ার মধ্যে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন ছিল ঘাসফুল শিবিরের কাছে অ্যাসিড টেস্ট। কারণ সেই সময় যদি দল ১৫০ আসন পেয়ে থেমে যেত তাহলে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়েও হয়তে প্রশ্ন উঠে যেত। কারণ, সেই সময় যেসব নেতা দল ছাড়ছিলেন তাদের বন্দুকের নিশানায় মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ছিলেন না, ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।


অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee) বলেন, দলের যেসব নেতা সেইসময় বেরিয়ে গিয়েছিলেন তারা বলেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের জন্য তাঁরা দলটা করতে পারছিলেন না। বলছিলেন, অভিষেকের জন্যই দলে অসম্মানিত হচ্ছি। কিন্তু তাত্পর্যপূর্ণ বিষয় হল, আমি যখন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি ছিলাম তখন তাদের দল করতে অসুবিধে হচ্ছিল। কিন্তু আমি যখন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তখন তাদের দলে ফিরতে অসুবিধে হল না। তাই যারা সেই সময় দল ছেড়ে গিয়েছিল তাদের নিশ্চয় কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি ছিল। ক্ষমতার সঙ্গে থাকতে চেয়েছিল তারা। ওরা ভেবেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসবে না। বিজেপি হয়তো দুশোর বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসবে। অথবা কেউ কেউ সিবিআই-ইডি থেকে বাঁচতে গিয়েছিল। কেন তারা ওইসব করেছিলেন তার জবাব তারাই দিতে পারবেন। যারা বলেছিলেন দল থাকতে পারছি না, শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে, কাজ করতে পারছি না, দলে অসম্মানিত হচ্ছি, দলে গণতন্ত্র নেই। তারাই এখন দলে ফিরতে চাইছেন। যখন তারা যেতে চেয়েছিলেন তখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যুব তৃণমূলের সভাপতি। আর যখন ফিরতে চাইছেন তখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাই তাদের সমস্য়া আমাকে নিয়ে নয়, তারা চেয়েছিলেন ক্ষমতার সঙ্গে থাকতে। অথবা নিজেকে ইডি-সিবিআইয়ের হাতে থেকে বাঁচাতে। 


ভোটের আগে যেসব নেতা দল ছেড়েছিলেন তারা শেষপর্যন্ত দলে ফিরছেন। তাঁদের নিয়ে কী করা হবে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, খুব স্পষ্ট করেই বলা ভালো। ধরে নিন মুকুল রায়(Mukul Roy) দলে ফিরেছেন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়(Rajib Banrejee) দলে ফিরেছেন, সব্যসাচী দত্ত ফিরেছেন। কিন্তু আরও অনেকেই দল ছেড়েছিলেন। তারা তো ফেরেননি। দায়িত্ব নিয়ে বলছি, যতদিন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক থাকব ততদিন দলের কর্মীদের জন্য লড়াই করব। নিশ্চিন্তে থাকুন, যারা গিয়েছিল তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে দলে ঢোকাব। প্রকাশ্যে বলছি, রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেছেন তিনি বিজেপিতে গিয়েছিলেন। তাঁর ওই সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। সেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে আমি ত্রিপুরায় যোগদান করিয়েছি। তিনি ত্রিপুরায় দল করবেন। দলকে তিনি কথা দিয়েছেন ত্রিপুয়ার দলের ইউনিট প্রতিষ্ঠা করবেন। তিন বছর ত্রিপুরায় পড়ে থেকে সেখানে তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠা করতে যা করার করব। খড়দায় উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে স্পষ্ট বলেছিলাম, যারা আসবে তাদের পাপের প্রায়ঃশ্চিত্ত করে দল ঢোকাব। যদি কেউ ভাবে যে দলে ফিরে মাথার উপরে ফের ছড়ি ঘোরাব তাহলে সাফ বলছি তৃণমূলের যেসব কর্মী দলের দুর্দিনে জীবনের বাজি রেখে লড়াই করেছে তাদের অসম্মান হতে দেব না।


আরও পড়ুন-'ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি ছিল ওঁর শখ', লতা মঙ্গেশকরের স্মৃতিচারণায় শর্মিলা ঠাকুর


দল ছাড়ারা দলে ফিরে যদি ফের পুরনো জায়গায় চলে যেতে না পারেন তাহলে সব্যসাচী দত্তের ক্ষেত্রে কী হল? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমনটা হতেই পারে। এটা দলের সিদ্ধান্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদারতার কারণে তা হতেই পারে। কিন্তু নির্বাচনের সময় যারা দল ছেড়ে গিয়েছিল তারা যদি ভাবে দলে ফিরে তাদের যাত্রা মসৃণ হবে তাহলে তারা ভুল করছেন। যদি কেউ দলে ঢোকে তাহলে তাকে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেই দলে ঢোকাব। সব্যসাচী দত্তের ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) নিজে তার নাম প্রস্তাব করেছিলেন। ঠিক আছে। কিন্তু কেউ যদি ভাবে ফের দলে ছড়ি ঘোরাব তাহলে তা হবে না। 


পুরভোটের প্রার্থীতালিকার বিরুদ্ধে রাজ্যের অধিকাংশ জেলায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা। কীভাবে এই সমস্যা সামাল দেবে তৃণমূল কংগ্রেস? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস অনেক বড় দল। অনেকে ভেবেছিলেন এবার পুরসভায় প্রার্থী হতে পারবেন। হয়তো পাঁচ শতাংশ নেতা-কর্মীর ক্ষেত্রে তা হয়তো হয়নি। তাই একটা ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকবেই। এনিয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে। খুব শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)