অঞ্জন রায় 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

লোকসভা ভোটের আশাতীত ফলের পর রাজ্যে বিজেপিতে এখন চলছে যোগদানের জোয়ার। ক্যাডার ভিত্তিক দলে এমন যোগদান নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠেছে প্রশ্ন। সঙ্ঘের কাছেও আসছে ভুরি ভুরি অভিযোগ। আরএসএসের আপত্তি মেনেই এবার সরাসরি হস্তক্ষেপ করলেন অমিত শাহ। বেনো জলের মোকাবিলায় বাঁধ দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।                     


লোকসভা ভোটের আগে অনুপম, সৌমিত্র ও অর্জুন সিংদের তৃণমূল থেকে ভাঙিয়ে এনেছিলেন মুকুল রায়। আর ভোটে ১৮টি আসন পাওয়ার পর তো বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক। একের পর এক পুরসভার কাউন্সিলর থেকে বিধায়ক- গন্তব্য গেরুয়া শিবির। বেশ চলছিল। কিন্তু লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলামের বিজেপিতে যোগদানই যেন দুধে ঢেলে দিল এক ফোঁটা চোনা। রাজ্য বিজেপিতে যোগদান বিতর্ক তারপরই সজোরে ধাক্কা দিল ৬ মুরলিধর সেন লেনকে। প্রশ্ন উঠে গেল, এভাবে বেনো জলের প্রবেশ কি আদৌ দলের পক্ষে আগামীর পক্ষে মঙ্গলজনক? মানুষের কাছেই বা কী বার্তা যাচ্ছে? 



তৃণমূল থেকে পরিত্রাণ পেতে গিয়ে সেই পুরনো মুখগুলিই তো থাকছেন। এনিয়ে বামেরাও 'বিজেমূল' বলে কটাক্ষ করে চলেছেন। ভারতীয় জনতা পার্টির মতো আদর্শভিত্তিক দলে এমন যোগদান যে হিতে বিপরীত হতে পারে, তা অনুধাবন করেছেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব। দুর্নীতিগ্রস্তদের দলে নেওয়া হয়েছে বলে ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা পড়েছে আরএসএসের কাছেও। বিষয়টি নজরে এসেছে অমিত শাহের। সূত্রের খবর, বাংলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অমিত নির্দেশ দিয়েছেন, নিচুতলায় যোগদানে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু নেতৃত্বস্তরের কেউ যোগ দিতে চাইলে উপযুক্ত পর্যালোচনা করতে হবে। আর সে জন্য থাকবে একটি তিন সদস্যের কমিটি।     


নিচুস্তরের যোগদান নিয়ে বিজেপির সমস্যা নেই। কিন্তু তৃণমূলের নেতানেত্রীদের দলে নেওয়া নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এলাম, আর বিজেপিতে যোগ দিলাম, তা আর হবে না, রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে স্পষ্ট করে দিলেন অমিত শাহ। এতদিন যোগদানের বিষয়টি দেখতেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এবার অমিতের নির্দেশে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। ওই কমিটিতে থাকতে পারেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায় ও সুব্রত চট্টোপাধ্যায়রা। তবে এই তিনটি নাম চূড়ান্ত নয়। ওই কমিটিই দলে নতুনদের আসা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে। সেটাই মেনে চলতে হবে।    


রাজ্য বিজেপিতে জোয়ার আসার পর কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন বিজেপির পুরনো নেতা-কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, বাম জমানা থেকে রাজ্যে বিজেপির খুঁটি ধরে রেখেছেন তাঁরা। আর এখন তাঁদের উপরে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন দু-দিন আগেও সিপিএম-তৃণমূল করা নেতারা। এটা তো মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। ফলে জেলায় জেলায় বিজেপির অন্দরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে নতুন-পুরনো দ্বন্দ্ব। অমিত শাহের নির্দেশ তাঁদের নৈতিক জয় বলেই মনে করছেন পুরনো বিজেপি নেতারা।       


আরও পড়ুন- পশ্চিমবঙ্গবাসীর ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে 'বাংলা' করুন, কেন্দ্রকে চিঠি মমতার