অর্ণবাংশু নিয়োগী: এবার লেক থানা এলাকায় ধর্ষনের অভিযোগ। রাজ্যের বাইরে কর্মরত এক IAS অফিসারের স্ত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠল। পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আদালতের। যৌন-নির্যাতনের মত গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রাথমিকভাবে লঘু ধারায় FIR হওয়ার ফলে মামলা দুর্বল হয়েছে, পর্যবেক্ষণ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রাথমিকভাবে সঠিক ধারায় এফ আই আর দায়ের না হওয়া এবং অভিযোগ পত্র বিকৃত করার যে অভিযোগ উঠছে তার ফলে এই তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে,পর্যবেক্ষণ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের। অভিযুক্তের পরিবার নিগৃহীতাকে থানায় বসে হুমকি দিচ্ছে এই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ নিয়েও কোন তদন্ত হয়নি। এছাড়াও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে নিগৃহীতা মহিলার শারীরিক পরীক্ষাও করেনি পুলিস, পর্যবেক্ষণ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের। 


আরও পড়ুন- Weather in Durga Puja 2024: 'পুজোয় ভাসবে না কলকাতা, কিন্তু আশঙ্কা...', বড় আপডেট হাওয়া অফিসের...


গ্রেফতারির পরেই নিম্ন আদালতে পেশ করার সঙ্গে সঙ্গে জামিন পান অভিযুক্ত। পরবর্তী ক্ষেত্রে তার আগাম জামিনও মঞ্জুর করে আদালত। আজ নিম্ন আদালত থেকে পাওয়া জামিন এবং আগাম জামিন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। লালবাজারে কর্মরত ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার এক মহিলা পুলিস আধিকারিককে মামলা হস্তান্তর করা হল। তিনি এই মামলার তদন্তকারী আধিকারিক হবেন, নির্দেশ আদালতের।শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে লেক থানার ওসি, এক সাব ইন্সপেক্টর , একজন সার্জেন্ট এবং তিন মহিলা পুলিস আধিকারিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য কলকাতার পুলিস কমিশনারকে নির্দেশ। 


ঘটনাটি চলতি বছরের ১৪ এবং ১৫ ই জুলাইয়ের ঘটনা। অভিযোগ যে ১৪ জুলাই রাত  ১১:৩০ নাগাদ এবং ১৫জুলাই ভোর ৬:৩০ নাগাদ নিগৃহীতা মহিলার বাড়িতে ঢুকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ধর্ষন করা হয়। পুলিসের বিরুদ্ধে ওঠে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ। বিকাল ৪:১৫ তে লেক থানায় পৌঁছালেও অভিযোগ গ্রহণ না করে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয় তাঁকে। লঘু ধারায় মামলা দায়েরেরও অভিযোগ ওঠে। এমনকী পুলিসের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র বিকৃত করার অভিযোগ করা হয়।


অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য অভিযুক্তের স্ত্রী এবং ছেলে চাপ দেয় বলে দাবি নিগৃহীতার। FIR দায়ের করার পরেই অভিযুক্তের স্ত্রী এবং ছেলেকে থানায় নিয়ে আসে পুলিস। নিগৃহীতাকে  চাপ দেওয়ার জন্যই এদের নিয়ে আসা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে নিগৃহীতার জামা- কাপড় এবং অন্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করতে বাড়িতে যায় পুলিস, দাবি নিগৃহীতার।


আরও পড়ুন- Bohurupi: এখনও অগ্রিম টিকিট বুকিংও শুরু হয়নি! কোন জাদুবলে মুক্তির আগেই ৫০ লক্ষ আয় 'বহুরূপী'র?
 
যদিও অভিযুক্ত বাড়িতে ঢুকছে এবং বেরোচ্ছে সেই সিসিটিভি ফুটেজ নিতে অস্বীকার করে পুলিস, দাবি মামলায়। নিগৃহীতার মেডিক্যাল পরীক্ষা করার প্রয়োজন বোধ করেননি তদন্তকারী আধিকারিক। নিগৃহীতা নিজেই সরকারি হাসপাতালে যান এবং মেডিক্যাল রিপোর্ট তদন্তকারী আধিকারিককে দেন।এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে একজন মহিলা পুলিশকর্মীকে তদন্তের ভার দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি লেক থানার ওসি., দাবি করা হয় মামলায়। 


ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার একজন মহিলা পুলিসকর্মীকে তদন্তভার দেওয়ার আবেদন জানানো হয় মামলায়। পুলিসের গাফিলতির কারণে বিচারকের সামনে পেশ করার প্রথম দিনেই জামিন পায় অভিযুক্ত। যদি  জামিন খারিজের আবেদন করেছে পুলিস। যদি ৯ অগাস্ট নিগৃহীতা মহিলাকে জানানো হয় যে তার মামলা করেয়া থানায় এক মহিলা পুলিসকর্মীকে দেওয়া হয়েছে। এবং ধর্ষনের উপযুক্ত ধারা যুক্ত করা হয়েছে। 


নিগৃহীতা মহিলাকে আরো জানানো হয় যে তার মেডিক্যাল পরীক্ষা হবে ২০ শে অগাস্ট। অর্থাৎ ঘটনার ৩৫ দিন পর, দাবি মামলায়। রাজ্যের দাবি, ১৫ ই জুলাই দুপুর ২:১৫ নাগাদ নিগৃহীতা মহিলা লেক থানায় যান। লিখিত অভিযোগ দাখিল করার পরবর্তী তিনি তার বন্ধুর মোবাইল থেকে থানায় উপস্থিত পুলিস আধিকারিকদের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে অভিযোগ করেন। রাজ্যের দাবি, থানায় উপস্থিত একজন মহিলা পুলিসকর্মী তার মৌখিক বয়ানের ভিডিও রেকর্ডিং করেন। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের বয়ান এবং মৌখিক বয়ানের মধ্যে পার্থক্য থাকায় তাকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার জন্য বলা হয়। 


আরও পড়ুন- Ratriter Sathi | Kolkata Police: ৬ সরকারি হাসপাতালে চালু ‘রাত্তিরের সাথী’, দায়িত্বে কলকাতা পুলিসের প্রাক্তন দুঁদে কর্তারা...


সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা নাগাদ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নিগৃহীতা মহিলা। তার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে পুলিস। রাজ্যের দাবি ১৫ ই জুলাই লেক থানায় কোনও মহিলা তদন্তকারী আধিকারিক উপস্থিত না থাকায় করেয়া থানা থেকে একজন মহিলা আধিকারিককে ডেকে পাঠানো হয়। তিনি ১৬ ই জুলাই লেক থানায় আসেন এবং নিগৃহীত মহিলার বয়ান ভিডিও রেকর্ডিং করেন। সেই সময় নিগৃহীতা মহিলা মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনেননি। 


রাজ্যের দাবি, নিগৃহীতা মহিলা নিজে থেকে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে যে মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়েছিলেন এবং যে রিপোর্ট পুলিসকে দিয়েছিলেন সেখানে শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের উল্লেখ থাকলেও কোথাও কোনও রক্তক্ষরণের কথা উল্লেখিত ছিল না। রাজ্যের দাবি, মেডিক্যাল রিপোর্টে কোথাও ধর্ষণের স্বপক্ষে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তার প্রমাণ প্রাথমিকভাবে পাওয়া যায়নি।