অনীক দত্ত, চিত্র পরিচালক


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

দেশ জুড়ে চলছে  #IndiaAgainstPropaganda নিয়ে বিতর্ক। ভারতের তরফে টুইটার ট্রেন্ডিং-এর প্রথম সুরটি বেঁধে দিলেন সচিন তেন্ডুলকর। একই বিষয়ে টুইট করেছেন লতা মঙ্গেশকরও। বুধবারই রিহানা, গ্রেটা থানবার্গের টুইটের বিরোধিতা করে কড়া সুরে টুইট করেছেন সচিন। ফলে এ নিয়ে একটা বিতর্ক দানা বেঁধেছে--  কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ কোনও বিষয়ে বহির্দেশের কেউ কিছু বলতে পারেন কি না।


এই আলোচনাটা শুরু করার আগে বোঝোনোর সুবিধার জন্য বলি, আগে আমরা একটা বিল্ডিংকে বা কো-অপারেটিভ সোসাইটিকে পৃথিবী ধরে নিই; এবং তার এক-একটা ফ্ল্যাটকে এক-একটা দেশ ধরি। এখানে এক-একটা ফ্ল্যাটে নানা রকম জিনিস চলছে। নানা ঘটনা ঘটছে। এবং সেখানে কে কী করছে, সেটা একেবারেই তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, পাশের ফ্ল্যাট থেকে কেউ কাউকে কোনও বিষয়ে কোনও প্রশ্ন করতে পারবে না। যদি কোথাও খুব গোলমাল বাধে বা চিৎকার শোনা যায়, পাশ থেকে তো জিগ্যেস করাই চলে, কী হল দাদা? এটা ঠিক 'ইন্টারফেয়ার' করা নয়।


আরও পড়ুন: এ ভাবে দুকূল বাঁচিয়ে বেশিদিন চলা যাবে না


এই প্রসঙ্গে ঠিক এই জায়গাটায় 'ইন্টারন্যাশনালিজম' বা আন্তর্জাতিকতা নিয়ে একটু ভাবার অবকাশ আছে। তার আগে বলে নিই, রবীন্দ্রনাথের ভাবনার সেই জায়গায় হয়তো আমরা এখনও পৌঁছতে পারিনি, যেখানে গৃহের প্রাচীর আমাদের খণ্ড-ক্ষুদ্র করে রাখেনি। কিন্তু তা হলেও অন্যের বিষয়ে কোনও কথা বলার ক্ষেত্রে 'বেসিক' একটা ছাড়ের পরিসর থাকা দরকার। তা না হলে তো আমরা কোনও বিষয়ে কিছু বলতেই পারি না। তেমনটা হলে কী করে চলবে? তা হলে তো ভিয়েতনাম নিয়ে, জার্মানিতে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর কাজকর্ম নিয়ে কিছু বলা যাবে না। বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে যদি কারও ওপর কোনও অন্যায় হয়, আমরা কি বলতে পারি না? ফলে 'তুমি বিদেশি বলে এটা নিয়ে তোমার বলার অধিকারই নেই', এভাবে কাউকে কিছু বলে দেওয়াটা খুব মুশকিলের।


বিভিন্ন লোকজন, ফিল্ম স্টার বা বিভিন্ন বিখ্যাত পার্সোনালিটি এঁরা এই ধরনের ক্ষেত্রে কিছু বলতেই পারেন। তবে সেটা যদি কারও ভয়ে বা কারও সুরে সুর মেলাতে গিয়ে হয়, তা হলে সেটা কাম্য নয়। এ অনেকটা ওই 'অ্যামিকেবল সেটলমেন্ট' মানে ওই আমরা মজা করে যাকে 'কনসাল্ট করে ইনসাল্ট করা' বলে থাকি, তেমন হয়ে দাঁড়ায়। তা হলে সেটা দুঃখের। মানে দেখতে হবে, যাঁরা বলছেন তাঁরা কি কোনও ভাবে কারও দ্বারা 'মোটিভেটেড' হয়ে বলছেন, না কি এটা একেবারে তাঁদের 'ফ্রি ইনডিপেন্ডেন্ট ওপিনিয়ন'। আমি কিন্তু 'ফ্রি ইনডিপেন্ডেন্ট ওপিনিয়নে'র পক্ষে।


এ বিষয়ে সব চেয়ে হাস্যকর লাগল, দুঃখেরও যে, এখন নাকি রিহানার জাতের খোঁজ করা হচ্ছে! যেহেতু ওঁর নামটা একটু অন্যরকম শোনায়, ফলে সেই দু'য়ে দু'য়ে চার করার মতো আর কী! কিন্তু এটা কী? তাঁর মত পছন্দ না হলে তাঁকে বলো। কিন্তু কোনও বিষয়ে কাউকে বলতেই দেওয়া হবে না, এটা চলতে পারে না।


আরও পড়ুন: ট্রাক্টরওয়ালা কৃষক না কি ভূমিহীন খেতমজুর, কাদের কথা ভাববে দেশ