ওএমআর কারচুপির মাথা, নিয়োগ দুর্নীতিতে ডুবে থাকা নীলাদ্রিকে `ক্লিনচিট` সিআইডি-র!
নীলাদ্রি ছিল নাইসার সঙ্গে এই রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতির মূল যোগসূত্র। নীলাদ্রি র মাধ্যমেই ওএমআর শিট বিকৃতি করা হত নাইসা-তে। পরে নিজের কম্পানি এন ডি ইনফোসিস্টেম প্রাইভেট লিমিটেড-কে দিয়েও সেই এক কাজ-ই করায় নীলাদ্রি।
পিয়ালি মিত্র: নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত নাইসা-র প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট নীলাদ্রি দাস। ওএমআর শিট কারচুপি কাণ্ডে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল সে। কিন্তু এই নীলাদ্রি দাসকেই 'ক্লিনচিট' দেয় সিআইডি। যাঁর বিরুদ্ধে বিপুল সংখ্যক চাকরীপ্রার্থীকে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে, সুবিরেশ ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ সেই নিলাদ্রী দাসকে কীসের ভিত্তিতে 'ক্লিনচিট' দিল সিআইডি? সেই তথ্যের খোঁজেই এবার সিবিআই।
তমলুক আদালত থেকে পটাশপুর থানার মামলার কেস ডায়েরি, চার্জশিট সহ অন্যান্য নথি সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে সিবিআই। ২০১৯ সালে পটাশপুর থানায় চাকরির নামে একটি প্রতারণা মামলায় সিআইডির হাতে গ্রেফতার হন নাইসা-র প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট নিলাদ্রী দাস। বিভিন্ন সরকারি পদে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু মাস খানেক পর সেই মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে যান নিলাদ্রী দাস। আদালতে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি জানান, কোনও বেআইনি টাকা লেনদেনের সূত্র বা তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি অভিযুক্ত নিলাদ্রী দাসের আর হেফাজতের প্রয়োজন নেই বলেও জানানো হয় সিআইডির তরফে। যার ফলে জামিন পেয়ে যান নিলাদ্রী দাস। এমনকি এই মামলায় চার্জশিটেও তাঁর নাম ছিল না। এবার সিবিআই-এর আঁতস কাচের তলায় সিআইডি-র সেই 'ক্লিনচিট'!
প্রসঙ্গত, সুবীরেশ ভট্টাচার্যের মাধ্যমে দিল্লির সংস্থা নাইসা প্রথম বরাত পায় ওএমআর শিট ছাপানোর। ২০১৬ সাল পর্যন্ত বরাত পায় নাইসা। সেই বরাতের ভিত্তিতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নাইসা ওএমআর শিট ছাপানোর কাজ করে। নীলাদ্রি দাস সেই সময়ে নাইসা-র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০১৯ সালে এ রাজ্যে নিয়োগ প্রতারণায় গ্রেফতার হন নীলাদ্রি। এরপর অর্থাৎ ২০১৯ সাল থেকে নীলাদ্রির নিজের কোম্পানি এন ডি ইনফোসিস্টেম প্রাইভেট লিমিটেড এসএসসি-র কাছ থেকে ওএমআর শিট ছাপানোর বরাত পায়। অর্থাৎ নীলাদ্রি ছিল নাইসার সঙ্গে এই রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতির মূল যোগসূত্র। নীলাদ্রি র মাধ্যমেই ওএমআর শিট বিকৃতি করা হত নাইসা-তে। পরে নিজের কম্পানি এন ডি ইনফোসিস্টেম প্রাইভেট লিমিটেড-কে দিয়েও সেই এক কাজ-ই করায় নীলাদ্রি।
শুধু তাই নয়। নীলাদ্রি বালাজি সলিউশন নামে একটি কোম্পানি র সঙ্গে সুবীরেশের যোগাযোগ করিয়ে দেয়। এই বালাজি সলিউশকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ওএমআর শিট নষ্ট করার। বালাজি সলিউশনের দুই কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও নীলাদ্রির নাম পেয়েছে সিবিআই। নীলাদ্রি সহ নাইসা-র ডিরেক্টর পুনিত কুমারের নামও রয়েছে সিবিআই-এর সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে।
আরও পড়ুন, অয়ন শীলের নয়া কীর্তি! নিয়োগ দুর্নীতিতে যোগ্য প্রার্থীর বিস্ফোরক অভিযোগ...