তনুময় ঘোষাল: ভয় যে একেবারেই পাননি, তা নয়। কিন্তু উপায়ও তো ছিল না! স্বামীর সঙ্গে করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিলেন কলকাতার রাই বাগচি। সেটা ছিল কো ভ্যাকসিন, শনিবার বাংলার মানুষকে যে টিকা দেওয়া হবে, তার নাম কোভিশিল্ড। তবে নাম যাই হোক না কেন, আদপে তো করোনা ভ্য়াকসিনই। রাই মনে প্রাণে চাইছেন, 'সবাই যেন এই ভ্যাকসিন পায়।'  Zee ২৪ ঘণ্টাকে বললেন,  'যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মানুষকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া অত্যন্ত দরকার। তাহলেই একমাত্র করোনার হাত থেকে মুক্তি মিলবে।'  যাঁরা ভ্য়াকসিন নেবেন, তাঁদের কোনও বার্তা দিতে চান? স্পষ্ট জবাব এল, 'আমি একটাই কথা বলব, নির্ভয়ে ভ্যাকসিন নিন। ভ্যাকসিন ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।'


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রাই পেশায় জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ। স্বামী সপ্তর্ষি চাকরি করেন ব্য়াঙ্কে। বাড়িতে ছ'বছরের মেয়ে, বৃদ্ধা শাশুড়ি। করোনা আতঙ্কে সকলেরই তখন গৃহবন্দি দশা। নভেম্বরের শেষের দিকে কলকাতায় এল 'কো ভ্যাকসিন'। করোনার এই ভ্যাকসিনটি ভারত বায়োটেকের তৈরি। কাজ হবে তো? গোটা দেশের সঙ্গে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে সামিল বাংলাও। পরিচিত এক চিকিৎসকের মাধ্যমে খবর পেয়েছিলেন রাই। সিদ্ধান্ত নেন, একা নয়, ভ্যাকসিন ট্রায়ালে অংশ নেবেন স্বামী-স্ত্রী দু'জনেই। ভয় লাগেনি? কলকাতার সাহসিনীর অকপট স্বীকারোক্তি, 'আমার মেয়ের বয়স ৬ বছর। প্রথমে খুবই ভয় পেয়েছিলাম। শাশুড়ির কাছে ধমকও খেতে হয়েছিল। কিন্তু আজ না হয় কাল, নিতে হবেই।'


আরও পড়ুন: বাংলায় ভোটার তালিকা থেকে প্রায় ৬ লক্ষ নাম ছাঁটল Election Commission


২৮ দিনের ব্য়বধানে কোভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়েছিলেন রাই ও সপ্তর্ষি। তারপর? রাই জানালেন, 'প্রথম জোজ নেওয়ার পর স্বামীর কিছুটা সমস্যা হয়। জ্বর আসে, গায়ে ব্যাথাও হয়। খুবই অবসন্ন হয়ে পড়েছিল ও। তবে ২-৩ দিন পর অবশ্য ঠিক হয়ে যায়।' যথারীতি দ্বিতীয় ডোজটিও নেন তাঁরা। তবে এবার ট্রায়াল নয়, রাত পোহালেই রাজ্যে শুরু হতে চলেছে করোনার টিকাকরণ অভিযান। নিজেরা ভ্যাকসিন নিয়েছেন, এখন পরিবারে লোকেরা কীভাবে টিকা পাবেন, তা  নিয়ে কিছুটা চিন্তিতই রাই। বললেন, 'আমার মায়ের প্রচুর কো-মর্ডিবিটি। অনেক ওষুধ খান। টিকা দিতে গেলে কী করতে হবে, সেটা জানতে হবে।'


আরও পড়ুন: 'আপনার রায় WITH অঞ্জন'-এ 'জয় শ্রী রাম' বিতর্ক গড়াল সায়নী-তথাগতর টুইট-যুদ্ধে


বাংলায় কো ভ্যাকসিন ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিলেন সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ধ্রবজ্য়োতি চট্টোপাধ্যায়ও। করোনার টিককারণ কর্মসূচি নিয়ে উচ্ছ্বাস ধরা পড়ল তাঁর গলাতেও। বললেন, 'ভারতে করোনার টিকাকরণ শুরু হচ্ছে, এটা আমার কাছে অত্যন্ত আনন্দের। আমি নিজেও ভলান্টিয়ার হিসেবে কো ভ্যাকসিন নিয়েছি। দু-একটি ঘটনা বাদ দিলে কোনও খারাপ প্রতিক্রিয়া আসেনি। অনেক ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নিলে অ্যালার্জির সমস্যা হয়। তবে তা কখনই মারাত্বক আকার নেয় না। যেকোনও রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিনই হল সবচেয়ে নিরাপদ। আসুন আমার সকলে এই ভ্যাকসিন নিয়ে করোনার মোকাবিলা করি।'