`আগে ৩ লাখ দিন, তারপর ভর্তি`, শেষে অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্য়েই পড়ে থেকে মৃত্যু করোনা রোগীর
অভিযোগ, একসঙ্গে ৩ লাখ টাকা জমা না দিলে চিকিৎসা শুরু হবে না বলে অনড় থাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নিজস্ব প্রতিবেদন : তিন দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে করোনা আক্রান্ত স্বামীর। এবার হাসপাতালে ভর্তি হতে না পেরে অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই মৃত্যু হল স্ত্রীর। অভিযোগ, ৩ লক্ষ টাকা জমা দিতে না পারায় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়নি তাঁকে। আর তারপরই অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে পড়ে থেকে মৃত্যু হয় করোনা আক্রান্ত ওই মহিলার। বছর ষাটেকের ওই মহিলার বাড়ি তমলুকে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে। মুখ্যমন্ত্রী বার বার সহযোগিতা করার কথা বললেও, এরাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলি সেকথা কতটা কানে তুলছে, এই ঘটনার পর সে প্রশ্ন উঠছেই। চোখে আঙুল দিয়ে বেসরকারি চিকিৎসা পরিষেবার অসহযোগিতার দিকটি দেখিয়ে দিচ্ছে এঘটনা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দিন আগেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার স্বামীর। স্বামীর মৃত্যুর পর পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপরই প্রথমে পার্ক সার্কাসে অবস্থিত একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। করোনা আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে স্বামীর। তাই ওই মহিলারও করোনা পরীক্ষা হয়। সোমবার তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। দেখা যায়, তিনি করোনা আক্রান্ত। এরপর সোমবার রাতেই একটি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে করোনা আক্রান্ত ওই মহিলাকে রুবির কাছে ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মৃতার ছেলে ও জামাইয়ের অভিযোগ, ভর্তির জন্য হাসপাতাল থেকে ৩ লাখ টাকা জমা দিতে বলা হয়। অত টাকার জোগান না থাকায় প্রথমে ৮০ হাজার টাকা জমা দেন তাঁরা। কিন্তু হাসপাতাল থেকে বলা হয় একসঙ্গে ৩ লাখ টাকা দিতে হবে। তবেই ভর্তি নেওয়া হবে। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসা শুরু করার জন্য অনেক অনুরোধ করেন। নেট ব্যাঙ্কিংয়ের সমস্যা থাকায় টাকা দিতে অসুবিধা হচ্ছে বলেও জানান। কিন্তু কোনও কথা-ই কানে তোলেননি তাঁরা। পরে আরও ২ লাখ টাকা জমা দেন।
কিন্তু অভিযোগ, একসঙ্গে ৩ লাখ টাকা জমা না দিলে চিকিৎসা শুরু হবে না বলে অনড় থাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে ভর্তি হতে না পেরে অ্যাম্বুল্যান্সেই পড়ে থাকেন করোনা আক্রান্ত ওই মহিলা। শেষে যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই মৃত্যু হয় বছর ষাটেকের ওই মহিলার। এই ঘটনায় বেশ খানিকটা উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে। খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে চলে আসেন আনন্দপুর থানার পুলিস কর্তারা। গোটা ঘটনায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত গাফিলতির আঙুল তুলেছেন মৃতার পরিবারের লোকজন।
আরও পড়ুন, ৫ লাখ ৭০ হাজার! আমফানের ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদনের হিড়িক দেখে চোখ কপালে নবান্ন কর্তাদের