অনুষ্টুপ রায় বর্মণ: ভোট ময়দানের পড়ে এবার সোশ্যাল মিডিয়া। একদা জোট সঙ্গিরা এবার লড়াইয়ে নেমেছেন নেটপাড়ায়। একে অপরের পোস্টে মন্তব্য করে শুরু করেছেন তরজা।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

একজন সিপিএম-এর কৌস্তভ চ্যাটার্জী। অন্যজন কংগ্রেসের কৌস্তভ বাগচী। রবিবারে নেতাজিনগরের একটি কর্মসূচির ছবি দিয়ে সিপিএম নেতা কৌস্তভ চ্যাটার্জী লেখেন, "সাতের দশকে সিআরপিএফ ও কংগ্রেসের ঘাতকবাহিনীর হাতে শহীদ কমরেডদের স্মরনে নেতাজী নগরে সভায় বলছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু।" এই 'ঘাতকবাহিনী' শব্দ নিয়েই সমস্যা কংগ্রেসের।


 



বাম নেতা জানিয়েছেন, তিনি বর্তমান সময়ের কাউকে আঘাত করতে চাননি। আধা ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাস এবং ইমারজেন্সি আসলে বাস্তব এই কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, "আমি বলেছি ইতিহাসকে তো বিকৃত করা যায়না। বাহাত্তর থেকে সাতাত্তরের আধা ফ্যাসিস্ট সন্ত্রান্সকে অস্বিকার করা যায়না। সেই আধা ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় যে সন্ত্রাস হয়েছিল তা বাস্তব ছিল।"


তিনি আরও বলেন, তাঁর আজকের পোস্টে কেউ আহত হলে তিনি দুঃখিত কারণ তিনি বর্তমানের কংগ্রেস নেতাদের সম্পর্কে বলেননি। তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে তিনি আরও বলেন, "ইতিহাস বিকৃত করে সাভারকারের অনুগামিরা। তাঁরা বলে যে সাভারকাররা ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়ছিল। কিন্তু আসলে ব্রিটিশের বুট চেটেছিল সাভারকারেরা।"


অন্যদিকে এই পোস্টের প্রতিবাদ জানিয়ে পাল্টা পোস্ট করেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচি। তাঁর পোস্টে বাম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করার কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, কংগ্রেসের ঘাতকবাহিনীর সমর্থন নিয়ে কী করে বাম নেতা সাংসদ হলেন। 



কৌস্তভ বাগচি জানিয়েছেন বামেদের মাঝেমাঝেই মনে পড়ে কংগ্রেস ঘাতকবাহিনী। তিনি বলেন," আমাদের সোজাসুজি বক্তব্য বিকাশবাবু রাজ্যসভায় যাওয়ার সময় তাদের দলের লোকেদের তুলনায় আমরা সমর্থন বেশি দিয়েছিলাম। আমাদের বিধায়কদের সমর্থন নিয়ে তিনি গিয়েছিলেন।" তাঁর আরও বক্তব্য বামেদের বিলম্বিত বোধোদয়ের পরে বিকাশ ভট্টাচার্যের উচিত সাংসদপদ ছেড়ে দেওয়া। 


এর আগেও zee২৪ঘণ্টাতেই বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের একটি বয়ান বিতর্ক সৃষ্টি করে। সাঁইবাড়ি সংক্রান্ত সেই বক্তব্যের কথা টেনে এনে কৌস্তভ বাগচি বলেন মহম্মদ সেলিমের উচিত এই বিষয় বামেদের দলগত অবস্থান ঠিক করা। তিনি আরও বলেন যদি বামেদের দলগত অবস্থান এরকমই হয় তাহলে কংগ্রেসকেও ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে।  


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: বিচারপতিদের নিয়ে 'ডেরগেটরি কমেন্ট', অভিষেকের বিরুদ্ধে মামলা হাইকোর্টে


ক্ষুব্ধ কৌস্তভ বাগচির বক্তব্য, "পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি এবং তৃণমূল দুই দলকে দূরে রাখতে আমরা মনে করেছিলাম বামেদের সমগে একটি প্রগতিশীল, ধর্মনিরপেক্ষ জোট গড়ে লড়াই করা দরকার। এই ক্ষেত্রে মাঝে মাঝেই তাদের মনে পড়ে যে কংগ্রেস ঘাতকবাহিনী। সেক্ষেত্রে আমরাও যদি লিখতে শুরু করি বিগত ৩৪ বছরের কথা তাহলে তারাও মুখ লুকানোর জায়গা পাবেননা।" একইসঙ্গে তিনি জানান কৌস্তভ চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে দলের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।  


অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচির পোস্টের নিচে বাম নেতা লেখেন, "আচ্ছা নিউটন সেদিন আপেল পড়তে দেখেছিল। আজ যদি আমরা বলি নিউটন বেদানা পড়তে দেখেছে! তাহলে কি ঠিক বলা হয়?" 


একে অপরের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোপ দাগলেও কৌস্তভ বাগচির মতোই কৌস্তভ চ্যাটার্জিও জানিয়েছেন, "এই সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই এবং সেই লড়াই নিশ্চিতভাবেই একসঙ্গে করা যাবে। কিন্তু ইতিহাসকে বিকৃত করা যাবে না।" যদিও এর পরেও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হবে কিনা তা ভবিষ্যতের বিষয় বলেন তিনি।    


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)