নিজস্ব প্রতিবেদন: দুই শিল্পপতি পরিবারের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক। বছর ঘুরতেই ঘনিয়ে এল বিষাদের ছায়া। রহস্যমৃত্যু রসিকা আগরওয়াল জৈনের। এইটুকু জানা গিয়েছে, উপর থেকে পড়ে মৃত্য়ু। দুর্ঘটনা? খুন? আত্মহত্যা? গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন। তদন্ত চলছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আলিপুরের (alipore) রাজা সন্তোষ রোডের নামকরা ব্য়বসায়ী পরিবারে মেয়ে রসিকা ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী, বিদেশে থেকে ডিগ্রিও নিয়ে এসেছেন। ২০১৯ সালে দেখাশোনা করেই বিয়ে হল তাঁর। পাত্র আলিপুর অঞ্চলেরই ডিএলখান রোড এলাকার আর এক নাম-করা ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে কুশল আগরওয়াল। ২০২০ সালে ঘটা করে অনুষ্ঠিত হল এক বছরের বিবাহবার্ষিকীও। এদিকে এর ঠিক পরেই দেশে লকডাউনের (lockdown) লগ্ন এল। 


লকডাউনের ঘরবন্দি একান্ত দৈনন্দিনেই যেন চমক ভাঙল রসিকার। স্বামী মাদকাসক্ত বলে অনুমান এবং পরে এ নিয়ে অভিযোগও দৃঢ় হল তাঁর। এ ছাড়া আরও নানা অশান্তির ঘটনাক্রম ছিল। কেননা, শ্বশুরবাড়িতে নানা বিষয়ে মানিয়ে চলতে যে তাঁর অসুবিধা হচ্ছে, এই মর্মে নিজের পরিবারের কাছে একাধিক বার অভিযোগও জানিয়েছেন বলেই দাবি।


আরও পড়ুন: ভোট প্রচারের বদলে, রং-তুলিতে Wall Graffiti আঁকলেন বাড়ির অনিমা, তানিয়া, চন্দ্রিমারা


সব মিলিয়ে ক্রমশ এতটাই দমবন্ধ পরিবেশ রসিকার চারপাশে ঘনিয়ে আসছিল যে, টাকার জন্য ভাইয়ের কাছে হাত পাততে পিছপা হননি তিনি। এবং শুধু টাকাই নয়। ভাইকে জনপ্রিয় খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থা মারফত শ্বশুরবাড়িতে খাবারও পাঠিয়ে দিতে বলতেন তিনি। এ নিয়ে কী বলছেন তাঁর ভাই? রসিকার ভাই ঋষভ জৈন জানান, দিদি তাঁকে ডিজিটাল ওয়ালেটে (wallet)টাকা ভরে দিতে বলতেন। খাবার 'বুক' করে পাঠিয়ে দিতে বলতেন। তিনি বলেন-- ওঁর শ্বশুরবাড়িতে খুব চিৎকার-চেঁচামেচি হত। ওঁরা দিদিকে টাকা-পয়সা দেওয়াও বন্ধ করে দেন।


 


কিন্তু ক্রমশ দম-বন্ধ হয়ে আসা পরিবেশের জেরে রসিকার ভাগ্যে কি এই অন্ধকারই তাঁর জন্যে অপেক্ষা করে ছিল? শ্বশুরবাড়ির টেরেসের নীচে পাওয়া গেল তাঁর দেহ। এটুকুই প্রাথমিক ভাবে জানা গেল-- এই মৃত্য়ু 'ফল ফ্রম হাইটে'র জেরে। উঁচু থেকে পড়ে মৃত্য়ু (death)। প্রশ্ন হল-- তিনি নিজেই কি অসাবধানে পড়ে গিয়েছিলেন? সজ্ঞানে পড়েছেন, আত্মহত্যামানসে? নাকি, কেউ তাঁকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে? উত্তর হাতড়াচ্ছে গোয়েন্দাদল।


উত্তর হাতড়াচ্ছে রসিকার পরিবারও। রসিকার পরিবারের দাবি, প্রভাব খাটিয়ে রসিকামৃত্যুর আসল কাহিনি ধামাচাপা দিতে চাইছে রসিকার শ্বশুরবাড়ি-পক্ষ। তাঁদের মেয়ের মৃত্যুতে যে রহস্য আছে, তা নিয়ে তাঁরা সন্দিহান নন,  একটাই কারণে, মৃত্যুর আগে রসিকা তাঁর বাবাকে যে-হোয়াটসঅ্যাপ (whatsapp) করেন সেখানে তাঁর শ্বশুরবাড়ির বেশ কয়েকজনের বিষয়ে ছিল বেশ কিছু অভিযোগ। এছাড়া রসিকার ভাইয়ের অভিজ্ঞতা তো তিক্তই।


কিন্তু মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতিতা হচ্ছেন জেনেও বিষয়টির কোনও নিষ্পত্তিতে যাননি কেন রসিকা-পরিবারের সদস্যেরা? যা জানা গিয়েছে, তা হল, বাড়ির এমন একটা খবর প্রকাশিত হলে তাঁদের সামাজিক বা পারিবারিক সম্মান ক্ষুণ্ণ হতে পারে জেনে তাঁরা চেয়েছিলেন লোক জানাজানি না করে বিষয়টি নিজেদের মধ্যে বসে মিটিয়ে নিতে। কিন্তু দেরি হয়ে গেল। সময় পাওয়া গেল না। আপাতত অপেক্ষা। 


আরও পড়ুন: 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ Sayantika-র