`এমার্জেন্সির থেকেও খারাপ অবস্থা বাংলায়`, কড়া আক্রমণ দিলীপের
রাজ্যের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে আরও ১৫ দিন রাজ্যে লকডাউন বাড়ানোর পক্ষেও এদিন সওয়াল করেন দিলীপ ঘোষ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: জরুরি অবস্থার থেকেও পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা খারাপ। এই ভাষাতেই এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বলেন, "এমার্জেন্সির থেকেও খারাপ অবস্থা।" তোপ দাগেন, "ত্রাণ দিতে ওনাদের এমপি, এমএলএ, মন্ত্রীরা যাচ্ছেন। আর আমরা গেলেই দোষ। আমাদের আটকানোর বিষয়টা পুরোটাই রাজনীতি।" একইসঙ্গে দিলীপ ঘোষ আরও দাবি করেন, রাজ্যপালের চাপেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। নইলে তাঁকেও দলের একাধিক নেতা-কর্মীদের মতো গ্রেফতার করা হত।
দিলীপ ঘোষ এদিন অভিযোগ করেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার প্রথম থেকেই নেগলিজেন্স দেখিয়েছে। যার ফলে আজকে বাংলায় করোনা আক্রান্তের পরিস্থিতি এই অবস্থায় পৌঁছেছে। পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত এই রোগ পৌঁছে গিয়েছে। উল্লেখ্য, করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও তাঁর স্ত্রী। বৃহস্পতিবার রাতে এই খবর সামনে আসে। তারপর থেকেই সস্ত্রীক হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন মন্ত্রী।
রাজ্যের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে আরও ১৫ দিন রাজ্যে লকডাউন বাড়ানোর পক্ষেও এদিন সওয়াল করেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, "প্রয়োজনে ১৫ দিন আরও বেশি লকডাউন বাড়াতে হবে। এখন বড় ধাক্কা এসেছে। সেই ধাক্কা সামলাতে গেলে লকডাউন বাড়াতে হবে।" প্রসঙ্গত, বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার, ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হন রেকর্ড ৩৪৪ জন। এরফলে একলাফে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৪ হাজার।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার ঘটনায় রাজ্যের তরফে ভিন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরত আসার বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে। ভিন রাজ্য থেকে যেসব পরিযায়ী শ্রমিকরা ফেরত আসছেন, তাঁদের ৬০ শতাংশ-ই কোভিড পজিটিভ বলে উল্লেখ করেছে নবান্ন। রাজ্য সরকারের এই দাবিকে একহাত নিয়ে এদিন দিলীপ ঘোষ কটাক্ষ করেন, "সব রাজ্য সুষ্ঠু ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু এই রাজ্যে কয়েকটা গাড়ি আসতেই কোভিড নাকি মারাত্মক হারে বেড়ে গিয়েছে।"
তোপ দাগেন, "মে ৮-এ মহারাষ্ট্রকে চিঠি লিখেছিলেন যে এই রাজ্যের শ্রমিকদের ফেরানো হোক। কিন্তু যেই ফেরানো হচ্ছে, এখন আপনারা আটকাচ্ছেন।" একইসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতির আরও অভিযোগ, "সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে কোনওরকম সুবিধা নেই। খাবার নেই। জল নেই। জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে।" আরও বলেন, "মুর্শিদাবাদ, মালদা থেকে বিপুল সংখ্যক মুসলিম ছেলেরা বাইরে রয়েছেন। তাঁদেরকে ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন পঞ্চায়েতে রিগিং করে জিতেছেন। সেখানে মানুষকে ভোট দিতে দেননি। তাহলে এখন দায়িত্ব সামলাবেন না কেন?" প্রশ্ন ছোঁড়েন দিলীপ ঘোষ।
আরও পড়ুন, ত্রাণ দিতে যাওয়ার পথে লকেটকে 'বাধা' পুলিসের, রাস্তায় বসে পড়লেন সাংসদ