Sougata Roy: বিরোধীদের চামড়া দিয়ে জুতো তৈরির হুঁশিয়ারি, মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে নারাজ সৌগত
বামেরাও এনিয়ে সরব হয়েছে। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম এনিয়ে বলেন, বেশি কথা বললে এবার মানুষ এদের বাড়িতে চড়াও হবে। এরা মানুষের মন বুঝতে পারছে না। তৃণমূলের অণু-পরমাণুতে দুর্নীতি, চুরি
বরুণ দাস ও প্রবীর চক্রবর্তী: পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের পর রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মচূচিতে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেরকমই এক কর্মসূচিতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। এনিয়ে সরব বিরোধীরা। তবে ওই মন্তব্যরের জন্য ক্ষমা চাইতে নারাজ তৃণমূল সাংসদ। গতকাল কামারহাটিতে দলের এক সভায় সৌগত রায় বলেন, যারা তৃণমূল কংগ্রেসের এত সমালোচনা করছেন সেইসব বিরোধীদের গায়ের চামড়া দিয়ে জুতো তৈরি করা হবে। কেন এমন মন্তব্য? এনিয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সৌগত রায় বলেন, ওরা যে ভাষা ব্যবহার করছে তার সঙ্গে আমি একমত নই। একটা কথা আমি কালও বলেছিলাম, যে ভাবে সিপিএম ও বিজেপি প্ররোচনা দিচ্ছে এটা সাধারণ তৃণমূল কর্মীদের পক্ষে সহ্য করা মুসকিল। দুজন তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হয়েছে তা নিয়ে ওরা নেচে নেচে গুড় বাতাসা বিলি করবে আর বলবে তৃণমূলের সবাই চোর! এটা তৃণমূলের লোকেরা সহ্য করবে কেন?
আরও পড়ন-শেয়ারবাজারের রাজা, আকাশা এয়ারের স্রষ্টা রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা প্রয়াত
সৌগতবাবু আরও বলেন, এমন মন্তব্যের কোনও ব্যাখ্য়া এর নেই। এটা নকশালদের একটা স্লোগান ছিল। বড়লোকের চামড়া দিয়ে গরিবের জুতো তৈরি হবে। এটা রূপক অর্থে ব্যবহার করা হয়। যারা তৃণমূলকে চোর বলছে তাদের উদ্দেশ্যে রূপক অর্থে ওই কথা ব্যবহার করেছিলাম। তবে না করলেই হয়তো ভালো হতো। এইটুকু ভুল হয়েছে। এমন কিছু ভুল হয়নি। দুঃখ প্রকাশ করতে পারি। ক্ষমা চাইবার কোনও প্রশ্নই নেই।
সৌগত রায়ের ওই মন্তব্যর পর সরব হয়েছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, সৌগতবাবু কীসব বলেছেন, পিঠের চামড়া দিয়ে জুতো বানাবেন। এরা নিজের অবস্থান ভুলে যাচ্ছেন। উনি কি চাইছেন গণবিদ্রোহের দিকে পরিস্থিতি নিয়ে যেতে? ওঁদের নেত্রী ভোটের আগে বলবেন বদলা নয় বদল চাই। ভোটে জিতে বলবেন বদলা চাই। বাংলার রাজনীতিতে ওরা কোথায় নিয়ে যেতে চাইছেন? কার বিরুদ্ধে বদলা নেবেন? দুজন নেতার পেছেন ৮০০ কোটি টাকার সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছে। এর পরও যদি ওদের কেউ চোর বলে তাহলে তার বদলা নেবেন? ওঁরা ভুলে যেন না যান যে এখানকার মানুষ খুবই সজাগ। তারা একসময় এদের জিতিয়েছিলেন। এবার তারাই এদের শুধু হারানোই নয় বদলও নেবেন। শ্রীলঙ্কায় যা হয়েছে বাংলাকেও ওঁরা সেই দিকেই নিয়ে যাচ্ছেন।
বামেরাও এনিয়ে সরব হয়েছে। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম এনিয়ে বলেন, বেশি কথা বললে এবার মানুষ এদের বাড়িতে চড়াও হবে। এরা মানুষের মন বুঝতে পারছে না। তৃণমূলের অণু-পরমাণুতে দুর্নীতি, চুরি। সৌগত বাঁচতে দাদাকে ধরে বিজেপিতেও চলে যেতে পারেন। সেলিমের পাশাপাশি মুখ খুলেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, সৌগতবাবুর বক্তব্য হিটলারের বক্তব্যের অনুকরণ। হিটলার নাকি মানুষের চামড়া দিয়ে বাজনা বাজাতেন। সৌগতবাবু সে কথাই বলেছেন। এভাবেই মানুষের রাজনৈতিক ও সামাজিক চরিত্র প্রকাশ পায়। যারা চিন্তা চেতনায় ফ্যাসিবাদী তাদের আত্মপ্রকাশ এভাবেই ঘটে। তাই এনিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। এসব না বললেই অবাক হতাম।