মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: SSKM হাসপাতালে যৌন হেনস্থাকাণ্ডে প্রকাশ্যে এল বিস্ফোরক তথ্য। অভিযুক্ত চিকিৎসকের পদোন্নতির নির্দেশ। পদোন্নতির নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। অথচ পদোন্নতির কথা জানেই না স্বাস্থ্য দফতর।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

জানা গিয়েছে, যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক বেশ কয়েকমাস ধরে নিজেকে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বলে দাবি করছিলেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের দেওয়া একটি পদোন্নতির নির্দেশও দেখান তিনি। তবে চলতি বছরের মে মাসে একটি RTI-এর জবাবে স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জানান, এখনও অভিযুক্ত চিকিৎসক অ্যাসিট্যান্ট প্রফেসর পদেই রয়েছেন। তাঁর কোনও পদোন্নতি হয়নি। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সকলের চক্ষুচড়ক গাছ। স্পষ্ট হয়ে যায় যে এতদিন ধরে পদোন্নতির নামে প্রতারণা করছিলেন যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক৷ এরপর উঠছে একাধিক প্রশ্ন৷


আরও পড়ুন: বিজেপি ও তৃণমূলকে এক করে দেখে ভুল হয়েছিল--সূর্যকান্ত মিশ্র


প্রথমত রাজ্যে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা কি এভাবে কারও পদোন্নতি করতে পারেন? আর যদিও বা করেন, তা ছ’মাস কেটে গেলেও স্বাস্থ্য দফতর জানে না কেন? এমনকি যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত একজন চিকিৎসকের কীভাবে পদোন্নতি হল, সেই নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। অভিযুক্তের দোষ প্রমাণিত হলেও, আদৌ কি কোনও শাস্তি দেওয়া হবে? প্রশ্ন তুলেছেন স্বয়ং নির্যাতিতা৷ এই বিষয়ে Zee ২৪ ঘণ্টার তরফে রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। যদিও অভিযুক্তের কড়া শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যা সচিব৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার SSKM হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখায় অল ইন্ডিয়া ডিএসও(AIDSO)৷ পাশে থাকার জন্য বিক্ষোভকারীদের ধন্যবাদ জানান নির্যাতিতা৷ তবে এই লড়াই অরাজনৈতিক বলে জানান তিনি৷   


আরও পড়ুন: কয়লা কাণ্ডে ED-র নজরে রাজ্যের ৭ IPS, জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে তলব


২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে SSKM হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এক চিকিৎসর প্রফেসরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। অভিযোগ পত্রে তিনি জানান, ২০২০ সাল থেকে ওই চিকিৎসকের লালসার শিকার তিনি। নানা ভাবে তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছেন অভিযুক্ত। এই মর্মে ভবানীপুর থানাতেও একটি অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। ছাত্রীর অভিযোগের প্রথমে ৩ সদস্যের কমিটি তৈরি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত ৫ মার্চ Zee ২৪ ঘণ্টা বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলে তড়িঘড়ি পশ আইন (প্রিভেনশন অফ সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট অ্যাট ওয়ার্ক প্লেস) মেনে ১০ সদস্যের ইন্টারনাল কমপ্লেনস কমিটি তৈরি হয়। ১৪ জুন চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেয় ওই কমিটি। যাতে ছাত্রীর অভিযোগ সত্যি বলে জানান হয়। রাজ্যের স্বাস্থ-শিক্ষা অধিকর্তার কাছেই ওই রিপোর্ট জমা পড়ে৷


তবে অভিযোগ, এরপরেও অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এমনকি নিজেকে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বলে বহাল তবিয়তে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে RTI রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই ফাঁস হয়ে যায় তাঁর জালিয়াতি। একই সঙ্গে এই ঘটনায় রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার ভূমিকা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠছে।