Firhad Hakim: `এর জন্য আমাকে চোর বদনাম শুনতে হচ্ছে`, পুর বৈঠকে তীব্র ভর্ৎসনা মেয়র ফিরহাদের!
এদিন বৈঠক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে একটি অ্যাপ তৈরি করা হবে। সমস্ত ইঞ্জিনিয়াররা ফিল্ডে ঘুরে বেআইনি নির্মাণ দেখতে পেলে ছবি তুলে সেই অ্যাপে আপলোড করবেন। বেআইনি নির্মাণ দেখলেই তৎক্ষণাৎ তা ভেঙে দিন। এতদিন এমনটা হয়েছে, এমনটাই চলে আসছে, এ তত্ত্বে বিশ্বাস করবেন না।
দেবারতি ঘোষ: পুরসভার বৈঠকে ঢুকেই এদিন ১৩৪ নম্বরের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে দাঁড় করিয়ে জোর ধমক দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ধমকের সুরে মেয়র বলেন,"এই ছেলেটি ইন এফিশিয়েন্ট। এর জন্য আমাদের মানসম্মান ডুবেছে। এর জন্য আমাকেও চোর বদনাম শুনতে হচ্ছে। কোনও নেতা, কেউকেটা বা মন্ত্রী বা কারোও বেআইনি কোনও কথা শুনবেন না। আমরা যারা জনপ্রতিনিধি তারা পাঁচ বছরের জন্য থাকি। তারপর চেঞ্জ হয়ে যাই। যারা আধিকারিক আছেন, তাদের ফুল টার্ম থাকতে হবে। কোনও অনৈতিকতার কাছে মাথা নত করবেন না। এমন কোনও কাজ করবেন না, যাতে ওই কাজের মাশুল হিসাবে একজন মানুষেরও প্রাণ যায়।" সংশ্লিষ্ট বোরোর বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারকে এদিন বৈঠক চলাকালীন তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করেন মেয়র।
মেয়র বলেন, "আপনার ভুলের জন্য এতগুলো মানুষের প্রাণ গেল। হয় আপনি অপদার্থ না হয় আপনি চোর। আপনার অপদার্থতার জন্য মানুষ আমাকে, কলকাতার মেয়রকে চোর বলছে। নানান অপবাদ দিচ্ছে। কেন আমাকে তা শুনতে হবে?" মেয়রের ধমকের পর ইঞ্জিনিয়াররা সমষ্টিগতভাবে কিছু বলতে চাইলে, তাঁদের দাবি, তাঁদের কোনও কথা শোনা হয়নি। পাশাপাশি, এদিন বৈঠক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে একটি অ্যাপ তৈরি করা হবে। সমস্ত ইঞ্জিনিয়াররা ফিল্ডে ঘুরে বেআইনি নির্মাণ দেখতে পেলে ছবি তুলে সেই অ্যাপে আপলোড করবেন। আপাতত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়ে এই অ্যাপটি চালানো হবে। এখন কোনও কাউন্সিলর যদি সেই বেআইনি নির্মাণ রাখার নির্দেশ দেন, তাহলে সেই নির্দিষ্ট কাউন্সিলরকে লিখিত দেওয়ার কথা বলবেন সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়াররা। আজ বিল্ডিং বিভাগের সমস্ত ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সূত্রের খবর সেখানেই এই নির্দেশ দেন মেয়র।
মেয়র বলেন, "অতি শিগগিরই কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকদের কাজের সুবিধার্থে একটি অ্যাপস ব্যবস্থা শুরু করতে চলেছে। এর মাধ্যমে প্রতিটি এলাকার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়াররা বিভিন্ন এলাকা ভিজিট করুন। সেখানে বেআইনি কিছু চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তার লোকেশন এবং ছবি তুলে সংশ্লিষ্ট এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে পাঠিয়ে দিন। এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিস স্টেশনে এফআইআর করুন। এরপর তা কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কাছে পাঠিয়ে দিন। বিষয়টি তৎক্ষণাৎ পুর কমিশনারের নজরে আনুন। কমিশনার পুলিসের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। বেআইনি নির্মাণ দেখলেই তৎক্ষণাৎ তা ভেঙে দিন। এতদিন এমনটা হয়েছে, এমনটাই চলে আসছে, এ তত্ত্বে বিশ্বাস করবেন না। আইন ও নিয়ম মেনে কাজ করুন। আইন সকলকেই মানতে হবে। শহর কলকাতার কোন কোন অঞ্চলে কতগুলি বেআইনি নির্মাণ রয়েছে, তা চিহ্নিত করে অবিলম্বে ভাঙার ব্যবস্থা করতে হবে। আজ থেকে এই শপথ করে বের হন। এখন থেকে শহরে আর কোনও বেআইনি নির্মাণ হবে না।"
প্রসঙ্গত, গার্ডেনরিচকাণ্ডের পর টনক নড়ে কলকাতা পুরসভার। 'ডিউটির সময়ের প্রথম দিকে ফিল্ডে ঘুরে কাজ করতে হবে'। বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারের উদ্দেশে কলকাতা পুরসভার তরফে জারি করা হয়েছে কড়া নির্দেশিকা। উল্লেখ্য, গার্ডেনরিচকাণ্ডে প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ১৪ দিনের পুলিসি হেফাজতে রয়েছে ধৃত মহম্মদ ওয়াসিম। ধৃত মহম্মদ ওয়াসিম দাবি করেছে যে,'সব জানতেন পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার!' রবিবার রাতে গার্ডেনরিচে ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে আজহার মোল্লা বাগানে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মান বহুতল বাড়ির একাংশ। পার্শ্ববর্তী ছোট ছোট বাড়ির উপর ভেঙে পড়ে নির্মীয়মান বহুতলটি। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০।
আরও পড়ুন, Mausam Noor: টিকিট না পেয়ে দল ছাড়ারই সিদ্ধান্ত নিলেন? মৌসম নূর স্পষ্ট জানালেন...
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)