নিজস্ব প্রতিবেদন: কখনও অঙ্গদ মেহতা, কখনও হর্ষ ওবেরয়, কখনও আবার অন্য কোনও নামে প্রতারণা। এমন এক দুঁদে জালিয়াতকে ফাঁদ পেতে ধরল কলকাতা পুলিস।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ঘটনার সূত্রপাত অগাস্ট মাসে। গড়িয়াহাট থানায় দায়ের করা একটি এফআইআর অনুযায়ী, গড়িয়াহাটের এক বিক্রেতার কাছ থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার গয়না অর্ডার করেন এক ক্রেতা। নাম অঙ্গদ মেহতা। গয়না ডেলিভারি দিতে হবে হিন্দুস্তান পার্কের এক গেস্ট হাউজে। ক্যাশ অন ডেলিভারি হবে। সেইমতো গয়না নিয়ে গেস্ট হাউজে পৌঁছন দোকানের দুই কর্মচারী। তাঁদের কাছ থেকে গয়না ডেলিভারি নেন ক্রেতা। কিন্তু স্ত্রীকে দেখিয়ে আনছেন বলে বেমালুম উধাও হয়ে যান। ফোন বন্ধ, গেস্ট হাউজের কাছে একটিমাত্র ছবি, এছাড়া আর কোনও সূত্রও নেই।


আরও পড়ুন- Post Poll Violence: ভোট পরবর্তী অশান্তির তদন্ত, অনুব্রতর গড়ে তৃণমূল পার্টি অফিসে হানা সিবিআইয়ের


এমন এক জালিয়াতকে ধরতে ফাঁদ পাতে কলকাতা পুলিস। ফেসবুকে পায়েল শর্মা নামে নকল প্রোফাইল খুলে তথাকথিত 'অঙ্গদ মেহতা'-র সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন সাব-ইন্সপেক্টর দিশা মুখোপাধ্যায়। ততদিনে অন্ধ্র প্রদেশে পালিয়ে গিয়েছে অঙ্গদ। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পায়েল শর্মার সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় আসতে রাজী হয়ে যায় মেহতা। গত ৪ সেপ্টেম্বর মিলেনিয়াম পার্কে তার অপেক্ষায় ওত্ পেতে থাকেন দিশা সমেত পুলিস টিমের অন্যান্য সদস্যরা। এবং 'বান্ধবীর' সঙ্গে দেখা করতে এসে সোজা পুলিস ভ্যানে চালান হয়ে যায় অভিযুক্ত। 


কে এই মেহতা? আসল নাম কী? জিজ্ঞাসাবাদের পর সে জানায়, ২০১৮ সালে হায়দরাবাদের চঞ্চলগুড়া সংশোধনাগারে তিন বছরের জেল হয় তার। তার আগে আন্দামানের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ারেও কিছুদিন কারাবাসের সৌভাগ্য হয় তার। কিন্তু অঙ্গদ মেহতা নামে নয়। তদন্ত চলাকালীন বিধাননগর ইস্ট থানার সাহায্যে সল্ট লেকের একটি রেস্ট হাউজে হানা দেয় কলকাতা পুলিস। যেখান থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় হর্ষ ওবেরয় এবং অঙ্গদ মেহতার নামে দুটি ভোটার আইডি কার্ড ও সার্থক রাও বাবরস-এর নামে একটি আধার কার্ড, এবং প্রতিটি পরিচয়পত্রেই একই ছবি, যা কিনা ধৃত ব্যক্তির সঙ্গে মিলে যায়। অর্থাৎ যিনি সার্থক রাও, তিনিই হর্ষ ওবেরয়, তিনিই অঙ্গদ মেহতা। প্রাথমিকভাবে প্রতিটি পরিচয়পত্রই ভুয়ো বলে মনে করা হচ্ছে।


আরও পড়ুনSiliguri: জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে শিলিগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি ৭০ শিশু, আউটডোরেও বাড়ছে ভিড়


এছাড়াও কলকাতা পুলিস খুঁজে পায় পোর্ট ব্লেয়ারের ডেপুটি জেলার-এর জারি করা সেখানকার বাসিন্দা সার্থক রাও বাবরস ওরফে হর্ষ ওবেরয়ের নামে একটি 'প্রিজনার অ্যাডমিশন কার্ড'।  ভুয়ো পরিচয়পত্র দেখিয়েই কলকাতায় অনলাইনে গয়না অর্ডার করে বাবরস। দিল্লি, আহমেদাবাদ, লখনউয়ের মতো শহরেও তার নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলে থেকে বিল না মিটিয়ে চুপচাপ সরে পড়া তার আরও এক কীর্তি, যার ফলে তার নাম উঠে এসেছে দেশের প্রথম সারির অপরাধীদের তালিকায়। এইসব হোটেলে তার হাতিয়ার হতো ভুয়ো প্যান কার্ড। 
কিন্তু চিরকাল তো পালিয়ে থাকা যায় না। আপাতত পুলিস হেফাজতে দেশের এই কীর্তিমান।  



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)