নিজস্ব প্রতিবেদন : ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক হিসেবেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। কড়া বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হল রাজভবনের তরফে। ছাত্রছাত্রীদের হাতে ঘেরাও অবস্থা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে 'উদ্ধার' করতে গতকাল সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে পৌঁছে যান রাজ্যপাল। বাবুলের হাত ধরে গাড়িতে তোলেন তিনি। আর তারপরই রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে সরব হয় তৃণমূল। রাজ্যপাল ধনখড় 'বিজেপির লোক' হয়ে কাজ করছেন বলে কঠোর সমালোচনা করে শাসকদল। এরপরই আজ সকালে রাজভবনের তরফে কড়া বিবৃতি জারি করে পাল্টা জবাব দেওয়া হল তৃণমূল সহ রাজ্য সরকারকে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিনি যেমন একদিকে রাজ্যপাল, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান, তেমনই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যও। আর আচার্য হওয়ার সুবাদে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক। অভিভাবক হিসেবেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকেছিলেন 'আচার্য' ধনখড়। ক্যাম্পাসে যাওয়ার আগে মুখ্যসচিব, ডিজিপিকে ফোন করেন রাজ্যপাল। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তারপরেও সমস্যা মেটেনি। মুখ্যমন্ত্রীকেও ফোন করেন আচার্য ধরনখড়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। এদিকে সেইসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য কেউই উপস্থিত ছিলেন না। অসুস্থ হয়ে তাঁরা তখন হাসপাতালে। তাই পরিস্থিতি যাতে আয়ত্তের বাইরে না চলে যায়, ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক হিসেবে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয় রাজ্যপালকে।



রাজভবনের জারি করা বিবৃতিতে কড়া ভাষায় সমালোচনা করা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের। বিবৃতিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পুলিসের যে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার ছিল, তা নেওয়া হয়নি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল বা আচার্য আসার পরও, তাঁর যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। একইসঙ্গে, উপাচার্যের ভূমিকার দিকেও অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে। উপাচার্যের তরফে গাফিলতি ছিল বলে মন্তব্য করা হয়েছে বিবৃতিতে। বৃহস্পতিবার এবিভিপির নবীনবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে পড়ুয়াদের হাতে হেনস্থার শিকার হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। দিনভর বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের হাতে আটক থাকার পর, সন্ধ্যায় তাঁকে 'উদ্ধারে' বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে যান আচার্য জগদীপ ধনখড়। বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের মাঝখান থেকে কোনওমতে হাত ধরে বাবুলকে গাড়িতে তোলেন রাজ্যপাল। কিন্তু তারপর বাবুলকে নিয়ে বেরনোর সময় পড়ুয়াদের হাতে ফের ঘেরাও হয়ে যায় রাজ্যপালের গাড়ি। দীর্ঘক্ষণ গাড়ির ভিতর বসে থাকেন রাজ্যপাল ও বাবুল। তারপর অন্য গেট বের হয় রাজ্যপালের কনভয়।


আরও পড়ুন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ রাজ্য, বাবুল হেনস্থায় অমিত শাহকে নালিশ দিলীপের


এরপরই রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তৃণমূল। শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের যাওয়া দুর্ভাগ্যজনক। নির্বাচিত সরকারকে না জানিয়ে যেভাবে তিনি বিজেপি মন্ত্রীকে উদ্ধার করতে চলে গেলেন, তা দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্যপালের বক্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত।" এদিন রাজভবনের তরফে জারি করা বিবৃতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্যেরও কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যকে পাল্টা 'দুর্ভাগ্যজনক' বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। ফলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ যে এখন আর ক্যাম্পাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, তা বলাই বাহুল্য। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হেনস্থা ও তাঁকে উদ্ধারকে ঘিরে বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতিতে রাজ্যপালের সঙ্গে বেনজির সংঘাতে রাজ্য প্রশাসন।