নিজস্ব প্রতিবেদন: এখনই পুরভোট হলে লোকসভা ভোটের পরিণতিই হতে চলেছে বাম-কংগ্রেসের। এমন সম্ভাবনাই উঠে এল আলিমুদ্দিনের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে। বলা হয়েছে, ঐতিহাসিকভাবে উত্তর কলকাতায় দুর্বল সিপিএম। পুরভোটে অবস্থা হতে চলেছে আরও খারাপ। শুধু তাই নয়, যাদবপুরের মতো লাল ঘাঁটিতেও থাবা বসিয়েছে গেরুয়া।                   


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

উত্তর কলকাতায় ঐতিহাসিকভাবেই দুর্বল সিপিএম। বিজেপির উত্থানে সিপিএম আরও কোণঠাসা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। সিপিএমের রিপোর্ট বলছে, উত্তর কলকাতার বেশিরভাগ জায়গা যেমন বাগবাজার, শ্যামবাজার ও গিরিশপার্কে সরাসরি তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই বিজেপির। বড়বাজার ও সংলগ্ন ওয়ার্ডগুলিতে শাসক দলকেও টেক্কা দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। বেলেঘাটা, মানিকতলার বস্তি এলাকার ভোট পেত সিপিএম। সেখানেও ভাগ বসিয়েছেন দিলীপ ঘোষরা। এখনই ভোট হলে কলকাতা পুরসভার ১০৭ থেকে ১৩৩ নম্বর  ওয়ার্ডগুলিতে বিজেপির জয় একপ্রকার নিশ্চিত। 


যাদবপুর, গার্ডেনরিচ, বেহালায় সিংহভাগ ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ওই সব এলাকার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওয়ার্ডগুলি স্বাভাবিকভাবেই অ্যাডভান্টেজ তৃণমূল কংগ্রেস।  কিন্তু লড়াই সেই তৃণমূল বনাম বিজেপির। যাদবপুরের মতো বামঘাঁটিতে লোকসভা ভোটের পর বদলে গিয়েছে রাজনৈতিক সমীকরণ। হু হু করে উঠে এসেছে বিজেপি। যাদবপুরের ১০৭ ও ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৯.৪৯ শতাংশ ভোট পাচ্ছে পদ্মশিবির। সেখানে তৃণমূল ৪৫.৮ শতাংশ। ১০৯ ও  ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল পাচ্ছে ৫২.৫৫ শতাংশ ভোট। বিজেপি ৪২.৮১%। ১১১ ও ১১২ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে বিজেপি। ৪৯.১২% ভোট পাচ্ছে তারা। তৃণমূল সেখানে ৪৭.৮ শতাংশ। CAA-NRC-র মতো বিষয় নিয়ে আন্দোলনের পরও যাদবপুরের মতো কেন্দ্রে বিজেপির এমন উত্থান দেখে বিস্মিত আলিমুদ্দিনও।


অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণের পর লোকসভা ভোটের পুনরাবৃত্তি আটকাতে রণনীতি সাজিয়ে ফেলেছেন সিপিএম নেতারা। ১৭টি বাম দলের জোট তো আছেই। কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতাও দ্রুত পাকা করে ফেলতে চাইছেন সূর্যকান্ত মিশ্ররা। কংগ্রেসের সঙ্গে যে আসনভাগ নিয়ে আলোচনা চলছে, তা শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার। এর পাশাপাশি প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও জোর দেওয়া হচ্ছে শিক্ষিত ও  ভালো ভাবমূর্তির প্রার্থীদের। নতুন মুখরাও পাবেন সুযোগ।           


আলিমুদ্দিন নেতৃত্ব অবশ্য মুখে বলছেন, কলকাতা পুরসভার ভোটে লড়াই বাম-তৃণমূলের। সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ির বক্তব্য, কোনওভাবেই বিজেপির জেতার সম্ভাবনা নেই। তৃণমূল ও বামেদের মধ্যেই ভোটের লড়াই। আমরা মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার কথা বলছি। স্থায়ী চাকরি দিতে পারেনি কলকাতা পুরসভা। সব জায়গায় কাটমানি দিতে লাগে। শুধু আলো দিয়ে সাজালেই হয় না। পুরসভার আরও কাজ রয়েছে। সেই কাজই করবে বামেরা। নতুন প্রজন্মকে দেখা যাবে ভোটে।


বিজেপি ও সিপিএমকে পাত্তা দিতে নারাজ কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর কথায়,''বিরোধীরা জনবিচ্ছিন্ন। মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেবে।'' কলকাতা পুরসভায় জয়ের স্বপ্ন দেখছে বিজেপি। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন,''কলকাতা পুরসভা দখল নেব আমরাই।'' এনআরসি-সিএএ নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভের মাঝে আসন্ন পুরভোটে কলকাতায় বিজেপির চমকপ্রদ উত্থান ঘটলে তা যুগান্তকারী হতে চলেছে বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। তাঁদের মতে, তখন সিএএ-এনআরসি বিরোধিতার ঝাঁঝ কমতে বাধ্য। পাশাপাশি আরও তেড়েফুঁড়ে নামার সুযোগ পেয়ে যাবে বিজেপি। 


আরও পড়ুন- মুখে এত জেল্লা কীভাবে এল? শিশুদের কাছে গোপন রহস্য ফাঁস করলেন মোদী