নিজস্ব প্রতিবেদন : রেড রোড হিট অ্যান্ড রান মামলায় মূল অভিযুক্ত তৌসিফ ওরফে সাম্বিয়াকে এদিন দোষী সাব্যস্ত করেছে নগর দায়রা আদালত। ২ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক মৌমিতা ভট্টাচার্য। তবে এই মামলার সাজা ঘোষণার ক্ষেত্রে চার্জশিটের সব ধারা খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক। ঘটনাচক্রে এদিন সাজা ঘোষণা হলেও আজই জেল থেকে ছাড়া পেতে পারে সাম্বিয়া।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০১৪ সালে রেড রোডে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের রিহার্সালের সময় সাম্বিয়ার গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় বায়ুসেনা অফিসার অভিমন্যু গৌরের। ব্যারিকেড ভেঙে অডি গাড়ি নিয়ে কুচকাওয়াজের  রিহার্সালে ঢুকে পড়ে সাম্বিয়া। পিষে দেয় ওই অফিসারকে।  বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর জন্যই এই ঘটনা ঘটে বলে প্রথমেই অভিযোগে আঙুল ওঠে। ওই ঘটনার এক সপ্তাহ পর গ্রেফতার হয় সাম্বিয়া সোহরাব।  ৮২ জন সাক্ষীর বয়ানের ভিত্তিতে ২০১৬-র ১১ মার্চ ব্যাঙ্কশাল কোর্টে সাড়ে ৩০০ পাতার চার্জশিট জমা দেয় কলকাতা পুলিসের হোমিসাইড বিভাগ। চার্জশিটে বলা হয়, সেদিন অডি গাড়িতে একজনই ছিল। সে হল সাম্বিয়া। চার্জশিটে সাম্বিয়ার বিরুদ্ধে ৩০২ (হত্যা), ২০১ (তথ্যপ্রমাণ লোপাট) ও ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারায় চার্জ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে যুক্ত হয় ৩০৪ পার্ট ২, ৩০৭ ধারা।


২০১৭ মে মাসে ব্যাঙ্কশাল কোর্ট ধৃত সাম্বিয়ার বাবা মহম্মদ সোহরাব ও দুই সঙ্গী জনি এবং শানুকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা পুলিশ হাইকোর্টে যায়। হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এই মামলায় ফের সোহরাব ও দুই সঙ্গী জনি, শানুকে যুক্ত করার নির্দেশ দেন। ৩ বছর পর এদিন রায় দিলেন নগর দায়রা আদালতের বিচারক। সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক মৌমিতা ভট্টাচার্য।


কিন্তু এদিন সাজা ঘোষণার সময় চার্জশিটের সব ধারা খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক। সাজা ঘোষণার সময় বিচারক ২টি রিপোর্টের উল্লেখ করেন। একটি তদন্ত রিপোর্ট, অপরটি হল ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। এই দুই রিপোর্টের ভিত্তিতে তিনি বলেন, আবেগের ভিত্তিতে তদন্ত হয়েছে। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ নেই।  ময়নাতদন্তের রিপোর্টও ২ বার দেওয়া হয়েছে। সেখানেও বিভ্রান্তি রয়েছে।


আরও পড়ুন, একধাক্কায় ৫ ডিগ্রি নেমে কলকাতায় ফের ১২-র ঘরে পারদ, জাঁকিয়ে ঠান্ডা জেলাতেও


তাঁর মতে,অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ পুলিস। চার্জশিটে থাকা ৩০২, ৩০৪ পার্ট ২, ৩০৭ সব ধারাই খারিজ করে দেন তিনি। সিআরপিসি অ্যাক্টে জাজেস পাওয়ার টু প্রোনাউনস জাজমেন্ট অর্থাত্ বিচারক নিজের ক্ষমতায় ধারা বদলে ৩০৪A (গাফিলতিতে মৃত্যু) ও ৪২৭ (সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর) ধারায় সাজা ঘোষণা করেন। এখন ৩০৪A ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছরের কারাদণ্ড। যে সাজা সাম্বিয়াকে দিয়েছেন বিচারক। ৪২৭ ধারাতেও সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছরের কারাদণ্ড। এক্ষেত্রে গার্ডওয়াল ভাঙার জন্য ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা শুনিয়েছেন বিচারক।


এখন উল্লেখ্য, সাম্বিয়া জেল বন্দি ঘটনার পর থেকেই। ইতিমধ্যেই সে আড়াই বছরের বেশি সময় জেলে খেটে ফেলেছে। সেক্ষেত্রে আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, আজই জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যেতে পারে সাম্বিয়া।