নিজস্ব প্রতিবেদন : রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতা পুলিস কমিশনারে বাড়িতে সিবিআই অফিসারদের হানাকে কেন্দ্র করে টান টান নাটক। কলকাতা পুলিস ও সিবিআই আধিকারিকদের মধ্যে ধস্তাধস্তির পর আটক করে সিবিআই কর্তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে শেক্সপীয়ার সরণি থানায়। সিবিআই হানার খবর পেয়েই সিপির বাড়িতে এসে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপির বাড়িতে এসে পৌঁছেছেন কলকাতা পুলিসের সমস্ত পদস্থ কর্তারা। অন্যদিকে, পাল্টা সিজিও কমপ্লেক্স ঘেরাও করে রেখেছে কলকাতা পুলিস। ঘেরাও করে রাখা হয়েছে নিজাম প্যালেস। জয়েন্ট ডিরেক্টর পঙ্কজ শ্রীবাস্তবের বাড়িও ঘেরাও করে রেখেছে কলকাতা পুলিস। এককথায় সিবিআই-এর বিরুদ্ধে অল-আউট অ্যাটাকে কলকাতা পুলিস।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ডিসি হেডকোয়ার্টার অমিত পি জাভালগীরের নেতৃত্বে সিজিও কমপ্লেক্স ঘেরাও করেছে কলকাতা পুলিস। সিজিও কমপ্লেক্সের প্রধান গেট ঘেরাও করে দাঁড়িয়ে রয়েছে তারা। অন্যদিকে, ডিসি ডিডি আভারু রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে পিছনের গেট আটকে দাঁড়িয়ে রয়েছে কলকাতা পুলিসকর্মীরা। কাউকেই বাইরে থেকে সিজিও কমপ্লেক্সের ভিতরে ঢুকতে বা ভিতর থেকে বাইরে বেরতে দেওয়া হচ্ছে না।


অন্যদিকে, এই ঘটনায় প্রবল ক্ষুব্ধ সিবিআই-এর শীর্ষ কর্তারা। শোনা যাচ্ছে আটক সিবিআই কর্তাদের মুক্তির জন্য ডিজির সঙ্গে কথা বলেন সিবিআই শীর্ষ কর্তারা। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। ফলে আটক সিবিআই কর্তাদের ছাড়াতে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো হতে পারে, এমনটাও শোনা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উল্টোদিকে, এই মুহূর্তে সিপির বাড়ি ঘিরে তৈরি হয়েছে টান টান উত্তেজনা। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি লাউডন স্ট্রিটে পৌঁছন কলকাতা পুলিসের পদস্থ কর্তারা। পৌঁছেছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। সিপির বাড়িতেই শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে করছেন মুখ্যমন্ত্রী।


আরও পড়ুন, অসুস্থতা উপেক্ষা করেই ব্রিগেডে এলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, গাড়িতে বসেই শুনলেন বক্তৃতা
 
রবিবার সন্ধেয় ডিএসপি তথাগত বর্ধনেরর নেতৃত্বে এদিন ৪০ জনের সিবিআই টিম কথা বলতে যায় লাউডন স্ট্রিটে পুলিস কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে।  তল্লাশি করারও কথা ছিল। কিন্তু আগাম জানতে পেরে  পুলিস কমিশনারের বাড়ির সামনে জড় হন পুলিস কর্মীরা। বাধা দেওয়া হয় সিবিআই কর্তাদের। স্থানীয় থানায় যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়।  এরপরই পারদ চড়তে শুরু করে।


সিবিআই অফিসারদের বলা হয়, আপনারা থানায় যান। সেখানে নথিপত্র খতিয়ে দেখার পর রাজীব কুমারের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। সমস্ত নথি সিবিআই-এর হাতে রয়েছে কি না, কলকাতা পুলিস নিশ্চিত হতে চায়। এরপরই সিবিআইয়ের একটি দল শেক্সপিয়র থানায় যায়। আর একটি দল দাঁড়িয়ে থাকে রাজীব কুমারের বাড়ির সামনে। সিবিআই ডিএসপি তথাগত বর্ধন কথাবার্তা চালাতে থাকেন পুলিস আধিকারিকদের সঙ্গে। সিবিআই কর্তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যে কাজ তাঁরা করতে এসেছেন, সেটা সম্পূর্ণ করেই যাবেন। তাঁরা নিয়ম মেনেই এসেছেন। যদিও, সিবিআই আধিকারিকদের কাছে কোনও কাগজ ছিল না বলেই খবর।


এরপরই রাস্তার উপর ধস্তাধস্তি, মারপিট বেঁধে যায় কলকাতা পুলিস ও সিবিআই আধিকারিকদের মধ্যে । নো এন্ট্রি করে দেওয়া হয় লাউডন স্ট্রিট। তারপরই সিবিআই কর্তাদের আটক করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় শেক্সপীয়ার থানায়। সিবিআই কর্তাদের কার্যত অপরাধীর মতো টেনে হিঁচড়ে তোলা হয় গাড়িতে। গাড়ির ড্রাইভারকেও ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। কলকাতা পুলিসের কর্মী-ই গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যায়।


আরও পড়ুন, "মমতাজি স্বীকার করুন আপনি প্রশাসনের অপব্যবহার করবেন না", ফোনে হুঁশিয়ারি যোগীর


প্রসঙ্গত, সারদাকাণ্ডে কলকাতা পুলিস কমিশনার রাজীব কুমারের খোঁজ করছে সিবিআই। তিনি তিন দিন ধরে বেপাত্তা। শনিবারই সেই খবর সামনে আসে। রবিবার সেই খবর ভিত্তিহীন বলে দাবি করে পাল্টা বিবৃতি দেয় কলকাতা পুলিস। জানানো হয়, কলকাতা পুলিস কমিশনার শহরেই রয়েছেন। নিয়মিত অফিসেও আসছেন। কলকাতা পুলিস কমিশনার রাজীব কুমারের পাশে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। টুইটে তিনি লেখেন, "কলকাতা পুলিস কমিশনার বিশ্বের অন্যতম সেরা আধিকারিক। তাঁর ন্যায়পরায়ণতা, সাহস ও সততা প্রশ্নাতীত। দিবারাত্র কাজ করছেন তিনি। অতি সম্প্রতি একদিন ছুটি নিয়েছিলেন। মিথ্যা যতই রটাও সেটা মিথ্যাই থাকবে। চরম প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। "