অমিতের কৌশলে বিজেপিতে এসে তৃণমূলকে ডোবালেন মুকুল রায়
মুকুলকে কেন্দ্রে মন্ত্রিত্ব বা রাজ্যে পদ দেওয়ার ভাবনাচিন্তা চলছে বলে সূত্রের খবর।
অঞ্জন রায়
মুকুল রায়। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অভাবনীয় সাফল্যের পর এই নামটাই ঘোরাফেরা করছে রাজ্য রাজনীতির অলিন্দে। কোনও জাদুস্পর্শে এমন অসাধ্য সাধন করলেন মুকুল? বঙ্গ বিজেপির চাণক্য এনিয়ে এখনই ভাবতে নারাজ। বরং তাঁর লক্ষ্য ২০২১।
বাংলায় বিজেপির সম্ভাবনার আভাস পেয়েছিলেন মোদীর সেনাপতি। যাঁর কৌশলে বিধ্বস্ত বিরোধীরা। সেই অমিত শাহ স্পষ্ট বলে গিয়েছিলেন, বিরোধীদের লোক না ভাঙালে সংগঠন তৈরি করা সম্ভব নয়। সেই কৌশলেই তৃণমূল থেকে ঠিকঠাক লোক বাছতে ভুল হয়নি অমিতের। ২০১৭ সালের নভেম্বরে বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন মুকুল রায়। তৃণমূলের সংগঠনকে হাতের তালুর মতো চিনতেন তিনি। তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতাকেই কাজে লাগাতে চেয়েছিল বিজেপি। কারণ, বাংলায় হাওয়া দিয়ে নির্বাচনে জেতা যায় না। সেই অভিজ্ঞতা ২০০১ সালে হয়েছে খোদ তৃণমূল নেত্রীর। সেবার মমতার প্রবল হাওয়া থাকলেও বাম শাসনের অবসান হয়নি।
বাংলায় বিজেপিকে বিকল্প করতে হলেও শুধু হাওয়া দিয়ে কাজ হবে না। বাস্তবতা বুঝেই মুকুলকে দলে টেনে নেন অমিত শাহ। আর দায়িত্ব পেয়ে তৃণমূলকে ভাঙানোর কাজে লেগে পড়েছেন মুকুল। লোকসভা ভোটের আগে অনুপম হাজরা, সৌমিত্র খাঁ, অর্জুন সিংকে ভাঙিয়ে শাসক দলকে ধাক্কা দেন। আর লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, ১৮টি আসন নিয়ে শাসকের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে গেরুয়া শিবির। যদিও ফলাফলে খুশি নন মুকুল রায়। তাঁর কথায়, ''২৩ থেকে ২৫টি আসন জেতার প্রত্যাশা করেছিলাম। যে অত্যাচার হয়েছে, তার বিরুদ্ধে মানুষের গণজাগরণ ঘটেছে। আগামী দিনে গণতন্ত্র ফেরানোই আমাদের লক্ষ্য।''
মুকুলকে কেন্দ্রে মন্ত্রিত্ব বা রাজ্যে পদ দেওয়ার ভাবনাচিন্তা চলছে বলে সূত্রের খবর। যদিও মুকুল রায় বলেন,''আমি কোনও পদ বা মন্ত্রী হতে চাই না। ২০২১ সালে বিজেপি সেই দায়িত্ব পালন করতে চাই''। আর ২০২১ সালের জন্য বিউগল ইতিমধ্যেই বাজিয়ে দিয়েছেন অমিত শাহ।
বৃহস্পতিবার বিশাল জয়ের পর দিল্লিতে দলের সদর দফতরে অমিত শাহের মুখে শুধুমাত্র বাংলার নাম উচ্চারিত হল। ঘোষণা করে দিলেন, বাংলায় আগামী দিনে সরকার গড়বে বিজেপি। অমিত-মুকুল জোড়া চাণক্যকে নিয়ে শ্যামাপ্রসাদের বাংলায় সরকার গড়ার দীর্ঘ কয়েক দশকের স্বপ্ন সফলের আশা করছে বিজেপি।
আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেন মোদী, ইস্তফা গ্রহণ করলেন কোবিন্দ