নিজস্ব প্রতিবেদন : "অটলজির মতো মানুষ এখন আর দেখা যায় না। তাঁর সঙ্গে কাজ করাটা সৌভাগ্যের। অনেক স্মৃতি আছে। অনেক কথা মনে পড়ছে।" প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার চরম অবনতির খবর পেয়ে, দিল্লির বিমান ধরার আগে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে এভাবেই স্মৃতি রোমন্থন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রাজনীতির ময়দানে একসময় মমতার অভিভাবক ছিলেন বাজপেয়ী। রাজনীতির ময়দানের বাইরেও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক সর্বজন সুবিদিত। অটল বিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভাতেই প্রথমবার পূর্ণমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৯৮ থেকে ১৯৯৯- বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় রেলমন্ত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীকালে এনডিএ-র সঙ্গে মমতার সম্পর্ক ছিন্ন হলেও, অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক অটুট থেকেছে।


আরও পড়ুন, বাজপেয়ীকে নিয়ে বেফাঁস টুইট তথাগতর, পরে ভুলস্বীকার


১৯৯৮ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এনডিএ-র সঙ্গে ছিলেন মমতা। মাঝে ২০০১ সালে তহলকা কাণ্ডের সময় এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মমতা। জোট করেন কংগ্রেসের সঙ্গে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধেই ২০০১ বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টি আসন জেতে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এরপর ফের অটল বিহারী বাজপেয়ীর ব্যক্তিগত অনুরোধে ফের এনডিএ-তে ফিরে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ২০০৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে ১টি আসন জেতে তৃণমূল। সেবার সাংসদ ছিলেন শুধুমাত্র মমতা। ২০০৬ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-তৃণমূল জোট জেতে ৩০টি আসন।


এই সময়ই অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক আরও নিবিড় হয়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন কলকাতা এসে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতেই গিয়ে উঠেছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা গায়ত্রী দেবীর হাতে বানানো নাড়ু খান বাজপেয়ী। দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রীর মায়ের সঙ্গে। তাঁর কাছ থেকে আশীর্বাদ চেয়ে নেন বাজপেয়ী। এদিন বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে ফের একবার সেই অতীত দিনের কথা বললেন মমতা।


আরও পড়ুন, বাজপেয়ী সঙ্কটজনকই, আরোগ্য কামনায় দেশজুড়ে চলছে জল্পনা


প্রসঙ্গত ২৫ ডিসেম্বর, বড়দিনের দিনই অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন। প্রতি বছর জন্মদিনের দিন বাজপেয়ীকে শুভেচ্ছা জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৪ সালে আটল বিহারী বাজপেয়ীকে ভারতরত্ন দেওয়ার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র। কেন্দ্রের সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, "আমরা সবাই বাজপেয়ীজিকে ভালোবাসি ও শ্রদ্ধা করি।" বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের সমীকরণ বদলে গেলেও অটল বিহারা বাজপেয়ীর প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত শ্রদ্ধায় কখনও কোনও চিড় ধরেনি। সেই সম্পর্ক অটুট থেকেছে। ইউপিএ সরকারে থাকা অবস্থাতেও বহুবার বাজপেয়ীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন মমতা।


আরও পড়ুন, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ইস্যুতে সিপিএম-এ দ্বন্দ্ব প্রকট


উল্লেখ্য, গত ৯ সপ্তাহ ধরে দিল্লির এইমস-এ ভর্তি রয়েছেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। জুন মাসে দিল্লি সফরের সময়ও এইমস-এ গিয়ে তাঁকে দেখে আসেন মমতা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এদিনও কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁর চোখেমুখে স্পষ্ট ধরা পড়ল দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ।