নিজস্ব প্রতিবেদন : নামেই ছিল উপনির্বাচন, কিন্তু একুশের বিধানসভা ভোটের ফাইনাল পরীক্ষার আগে এ যেন অনেকটা ছিল প্রি-টেস্ট এর মতো। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে বিজেপির বাড়বাড়ন্তে অনেকেই ঘাসফুলের 'দুঃসময়' আসন্ন দেখেছিলেন। জনসংযোগ হারিয়েই তৃণমূলের ভরাডুবি বলে মত পোষণ করেছিলেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে, লোকসভা ভোটের ফলে অনেকখানি আত্মবিশ্বাস পেয়ে সংগঠনের শক্তিবৃদ্ধির কাজে আরও নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল গেরুয়া শিবির। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে লোকসভা ভোটের ঠিক ৬ মাস পর রাজ্যের ৩ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। ২৫ নভেম্বর ছিল ভোটগ্রহণ। একমাত্র করিমপুর ছাড়া খড়গপুর ও কালিয়াগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবেই হয় ভোটগ্রহণ। আজ ছিল গণনা। গণনার শুরু হতেই দেখা যায়, ৩ কেন্দ্রেই বিজেপিকে টেক্কা দিয়ে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। সময় গত গড়ায়, ব্যবধান তত স্পষ্ট হয়। করিমপুর, কালিয়াগঞ্জ, খড়গপুর ৩ কেন্দ্রই জয় নিশ্চিত করে নেয় তৃণমূল। প্রসঙ্গত কালিয়াগঞ্জ ও খড়গপুরে এই প্রথমবার জয় পেল তৃণমূল। এর আগে কখনও এই দুই আসনে তৃণমূল জেতেনি। উপনির্বাচনের এই ফলাফলে দারুণ খুশি নির্বাচন রণনীতি গুরু প্রশান্ত কিশোর। বললেন, "এই ফলাফলে আমি দারুণ খুশি।"


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

লোকসভা ভোটের ফলাফলে কার্যত ভরাডুবির পরই পিকে-র 'শরণাপন্ন' হয় তৃণমূল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে রণনীতি নির্ধারণের জন্য ইলেকশন স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে শাসকদল। এরপরই নিজের টিম নিয়ে জেলায় জেলায় কাজ শুরু করেন পিকে। শুরু হয় দিদিকে বলো কর্মসূচি। হারানো জমি ফিরে পেতে জোর দেওয়া হয় জনসংযোগে। বিধায়কদের কোথায় কখন প্রয়োজন, সেইমতো গাইড করতে থাকে পিকে-র টিম। উপনির্বাচন উপলক্ষে ৩ কেন্দ্রে মাটি আঁকড়ে পড়ে থেকে কাজ করতে থাকে তারা। কালিয়াগঞ্জে ৫ জনের, করিমপুরে ৪ জনের ও খড়গ্পুরে ৭ জনের দল গত একমাস ধরে লাগাতার চষে ফেলে এলাকা। সাধারণ মানুষের সুযোগ-সুবিধা, অভাব-অভিযোগ সবকিছু নথিভুক্ত করা হয়।


আরও পড়ুন, দেশভাগ, জাতিভাগের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত মানুষের, জি ২৪ ঘণ্টাকে বললেন মমতা


তারপর কেন্দ্র ভিত্তিতে তৈরি হয় ইশতেহার। এই প্রথম উপনির্বাচন উপলক্ষে ইশতেহার প্রকাশ করে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রত্যেকটি কেন্দ্রের জন্য আলাদা আলাদাভাবে ইশতেহার তৈরি করা হয়। খড়গপুরের জন্য তেলেগু ভাষাতেও ইশেতাহার প্রকাশ করে তৃণমূল কংগ্রেস। এর পাশাপাশি নির্দিষ্ট ডেডলাইন মেনে স্থানীয় মানুষের দাবিদাওয়া পূরণ নিশ্চিত করা হয়। স্থানীয়দের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের যোগাযোগ নিবিড় করতে প্রতি সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট দিনে এলাকায় বিধায়কদের থাকার কর্মসূচি নেওয়া হয়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দূর করে একছাতার তলায় সংঘবদ্ধভাবে কাজ করার উপর জোর দেয় পিকে টিম। এমনকি কালিয়াগঞ্জে এনআরসি ইস্যুতেও মানুষকে বোঝায় তাঁরা। সবমিলিয়ে নিঁখুত হোমওয়ার্ক করে একেবারে অল আউ অ্যাটাকে নামে পিকে-তৃণমূল টিম। সেই টিমেরই আজ ছিল প্রথম পরীক্ষা। আর সেই পরীক্ষায় ফুল মার্কস নিয়ে উত্তীর্ণ পিকে টিম। আর সেই প্রশান্তি-ই ঝড়ে পড়ল প্রশান্ত কিশোরের কথায়।