শোভনকে দলে নেওয়া নিয়ে মতের অমিল গেরুয়া শিবিরে
শোভনকে নিয়ে আরএসএস-বিজেপির ভাবনার ফারাক বিস্তর।
অঞ্জন রায়
মন্ত্রিত্ব গিয়েছে। এবার কি দলও ছাড়তে চলেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়? মুকুলের পথই অনুসরণ করতে চলেছেন? শোভনের আগামীর ভাবনা যাই হোক না কেন! বর্তমানে তাঁকে নিয়ে আরএসএস-বিজেপির ভাবনার ফারাক বিস্তর। শোভনের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে দ্বিমত পোষণ করছে বিজেপির দুটি অংশ। দিলীপপন্থীরা শোভনবিরোধী। উল্টো শিবির আবার শোভনের আবাহনের পক্ষে।
বিজেপিকে আরএসএস চালনা করে থাকে বলে থাকেন নিন্দুকরা। সেই আরএসএস স্পষ্ট জানিয়েছে, শোভন আসলে লাভবান হবে বঙ্গ বিজেপি। ঠিক বলেছেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব? আরএসএসের মন্তব্য, উনি এলে ভালই। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন বিজেপি নেতারা। দিলীপ, রাহুল, মুকুলের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। তাঁরা উপযুক্ত সিদ্ধান্তই নেবেন।
শোভন যে মোটেতই স্বাগত নন, তা নিয়ে কোনও বিভ্রান্ত রাখেননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। স্পষ্ট বলেন, "দরকার নেই আমাদের এমন লোক। অনেক লোক আছে। দরজা খোলা থাকলেও ছাকনি লাগানো আছে"।
সূত্রের খবর, শোভনকে নিয়ে দ্বিমত রয়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে। দিলীপ শিবিরের লোকেরা বলছেন, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভনবাবুর সম্পর্ক নিয়ে যে খবর বাজারে ছড়িয়েছে, তা বিজেপির আদর্শের সঙ্গে মোটেও খাপ খায় না। ক্ষতিগ্রস্ত হবে দলের ভাবমূর্তি।
আর এক পক্ষ আবার শোভনকে নেওয়ার পক্ষপাতী। তাঁদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগঠন হাতের তালুর মতো চেনা। ওনাকে কাজে লাগাতে পারলে ফায়দা বিজেপির।
তবে লাভ-ক্ষতির অঙ্ক নিয়ে আলোচনা হলেও এখনও স্পষ্ট নয়, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আগামী পদক্ষেপ। কী করবেন তিনি? আপাতত এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকালে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। কাজকর্ম নিয়ে গতকাল বিধানসভায় মুখমন্ত্রীর ধমকের মুখে পড়েন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর কক্ষে মিনিট দশেক দুজনের মধ্যে একান্তে কথা হয়। তখনই নেত্রীর ধমকের মুখে পড়েন শোভন চট্টোপাধ্যায়। ব্যক্তিগত জীবনে টানাপোড়েনের জেরে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব কোনওটাই তিনি ঠিকমতো পালন করতে পারছেন না বলে, শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সাফ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এরপর নবান্নে দমকল দফতরের অনুষ্ঠানেও মঞ্চে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে রাগত স্বরে কিছু বলতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। তারপর সাংবাদিক বৈঠকে না গিয়ে নিজের ঘরে চলে যান শোভন চট্টোপাধ্যায়। ঘর থেকে বেরিয়ে সোজা মুখ্যমন্ত্রীর প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি গৌতম স্যানালের কাছে গিয়ে তাঁর হাতে মুখবন্ধ খামে ইস্তফাপত্র তুলে দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এরপর বেরিয়ে যান নবান্ন ছেড়ে।
আরও পড়ুন- ''বৈশাখী নন, অভিষেকের কারণেই মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন শোভন''