নিজস্ব প্রতিবেদন: হাইকোর্টের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কটের সিদ্ধান্ত রাজ্যের আইনজীবীদের। তাঁদের অভিযোগ, বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় বনগাঁ মামলা সহ বেশ কয়েকটি মামলায় রাজনৈতিক মন্তব্য করছেন।  এই বিচারপতির কাছে ন্যায় ও সুবিচার প্রত্যাশা করেন না বলে দাবি রাজ্যের আইনজীবীদের। এবিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাজ্যের আইনজীবী ভাস্কর বৈশ্য।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 



গত শুক্রবারের পর সোমবার ফের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে বনগাঁ মামলার শুনানি রয়েছে। এদিনের শুনানি শেষে  বনগাঁ অনাস্থা মামলার রায় ঘোষণারও সম্ভাবনাও রয়েছে। তার মধ্যেই রাজ্য সরকারি আইনজীবীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বনগাঁ মামলার রায় ঘোষণার সময়ে তাঁরা কেউই বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে থাকবেন না। বিচারপতি সমাপ্তি  চট্টোপাধ্যায়কে বয়কট করার স্পষ্ট বার্তা দেন তাঁরা।


সোমবার আদালতে গঙ্গারামপুরের একটি মামলা চলছিল। সেই মামলাটিও বনগাঁর মামলার মতো অনাস্থা ইস্যুতেই।  মামলা চলাকালীন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের আইনজীবী ভাস্কর বৈশ্যকে প্রশ্ন করেন, “কেন এই ধরণের ঘটনা বারবার ঘটছে?”  সেই প্রশ্নের উত্তরে ভাস্কর বৈশ্য জানিয়ে দেন, “উই আর নট্ অ্যাটেন্ডিং দিস কোর্ট।” এরপর এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে যান রাজ্যের আইনজীবীরা।


রাজ্যের আইনজীবীদের বক্তব্য,  বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র  সব্যসাচী দত্তের মামলায় বনগাঁ নিয়ে মন্তব্য করেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়।  অথচ সেই সময় বনগাঁর মামলাটি ফাইল হয়নি বলে দাবি রাজ্যের আইনজীবীদের।  তাঁদের প্রশ্ন,  কীভাবে এটা হতে পারে বিচারপতি? তিনি কী মামলার তথ্য  আগেই পেয়ে গিয়েছিলেন?


 হাইকোর্টের বিচারপতি  সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাস বৈঠকের কথা জানিয়ে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেন তাঁরা। উল্লেখ্য, এই ধরনের ঘটনা এযাবত্কালের নজিরবিহীন ঘটনা বলেই মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ।


“চেয়ার আঁকড়ে আছেন কেন? আপনি কেন এত নির্লজ্জ?”, বনগাঁর চেয়ারম্যানকে চরম ভর্ৎসনা হাইকোর্টের


প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুলাই বনগাঁ পুরসভার অনাস্থা মামলাটি বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে ওঠে। মামলাটি শোনার পর বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যকে তীব্র ভর্তসনা করেন বিচারপতি।  তিনি বলেন, “সংখ্যাগরিষ্ঠ সঙ্গে নেই, তবুও চেয়ার আঁকড়ে আছেন? আপনি এত নির্লজ্জ কেন?”


বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় আরও বলেন, “সংখ্যাগরিষ্ঠের আনা প্রস্তাব মানা হয়নি। এটি গণতন্ত্রের পক্ষে ভুল।” এরপরই তিনি বলেন, “চেয়ারম্যান কাউন্সিলরদের আটকে দিয়েছে। এটি অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে।” আদালতে অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বলেন, “চেয়ারম্যানকে ফের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ দিতে হবে।”


আদালতের পর্যবেক্ষণ, বনগাঁ পুরসভায় আস্থা ভোট নিয়ম মেনে হয়নি। সংখ্যাগরিষ্ঠের মত প্রতিফলিত হয়নি আস্থাভোটে। যা গণতন্ত্রের পক্ষে ভয়ঙ্কর।


গত সোমবার বনগাঁ পুরসভার আস্থাভোট ঘিরে ধুন্ধুমার বাঁধে। লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বনগাঁর একদল কাউন্সিলর। এর পরই পুরপ্রধান শংকর আঢ্যকে সরাতে অনাস্থা আনে বিজেপি। পুরসভা দখলে রাখতে এরপর প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু আদালতের নির্দেশে সেই চেষ্টাতেও জল পড়ে।