নিজস্ব প্রতিবেদন: ফের নজিরবিহীন সাফল্য এসএসকেএম হাসপাতালে। দুটি হাতের কব্জি থেকেই কেটে পড়ে গিয়েছিল হাতের চেটো। সেই কাটা দুই হাতের পাঞ্জা কব্জির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হল কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। আর ৭ দিনের পর থেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন ৩৯ বছরের যুবক শংকর সাহা। আঙুলও নাড়াতে পারছেন দিব্যি। এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে এমন নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়েছেন প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকেরা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: নজিরবিহীন! একবছরে ৩০ লক্ষ রোগীকে পরিষেবা, তথ্য দেখে চোখ কপালে SSKM কর্তৃপক্ষের


রোগীর নাম শংকর সাহা। সরস্বতী প্রেসে ছাপাখানার কর্মী হিসেবে কাজ করেন। এদিন হাইকোর্টের বিভিন্ন কাগজপত্র ছাপানোর কাজ চলছিল সরস্বতী প্রেসে। মঙ্গলবার ভোরে পেপার কাটিং মেশিনে ছাপা সামগ্রীর পেপার কাটিং কাজ করছিলেন শংকর। মুহূর্তের অসাবধানতায় কাটিং মেশিনের দুটি হাতে ঢুকে যায়। পেপার কাটারের ধারালো ব্লেড মুহুর্তের মধ্যে দুটি হাত হাতের কব্জি থেকে বাকি অংশ কেটে পড়ে যায়। অপারেশনের পর হাসপাতালের বেডে শুনেই শংকর বলেন, "ওই মুহূর্তে আমি কিছুই বুঝতে পারিনি।  দেখলাম হাত কেটে পড়ে রয়েছে কবজিগুলো। রক্তে ভেসে যাচ্ছে। কাঁদতে শুরু করি।"  


আরও পড়ুন: ট্রাফিক জ্যামে আটকে অ্যাম্বুলেন্স, উদাসীন পুলিস; পথেই সন্তান প্রসব প্রসূতির


প্রথমে কামারহাটি ইএসআই হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখান থেকেই তাঁকে পাঠানো হয় এসএসকেএম-এ। সেখানে ট্রমা কেয়ারে ভর্তি করানো হয়। দ্রুত তৈরি হয় মেডিক্যাল বোর্ড। দুটি হাতকে জোড়া লাগাতে আলাদা আলাদা দুটি টিম। প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা হাজির হন জরুরীভিত্তিতে। দীর্ঘ সময় ধরে চলে অস্ত্রোপচার। নার্ভ জোড়া লাগানো হয়। ক্ষতিগ্রস্ত মাংসপেশি অস্ত্রোপচার করা হয়। রক্তের শিরা-উপশিরা জোড়া লাগানো হয়।  মোট ১৪ জন চিকিৎসক কাজ করেন।  তিন দিনের মাথাতেই, জোড়া লাগানো হাতের দুই হাতের আঙ্গুল থেকেই রক্ত বের হতে দেখা যায়। বোঝা যায় রক্তসঞ্চালন হচ্ছে। ৭ দিনের মাথায় চিকিৎসকরা ঘোষণা করলেন সাফল্যের সঙ্গে দুটি হাতে জোড়া লাগানো গিয়েছে।


আরও পড়ুন: লেবু জল খেয়ে ২১ দিন অনশন করিনি, ঠিকঠাক অনশন করলে শরীরের অনেক অংশ নষ্ট হয়: মমতা


হাসপাতালের অধিকর্তা মনিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পূর্ণ দলগত চিকিৎসকদের সাফল্য। একজন মানুষ তার কাজের দুটো হাত ফিরে পেলেন। সরকারি হাসপাতাল সেই কাজ করে দেখাল।"  বিভাগীয় প্রধান গৌতম গুহ বলেন, " আমরা সকলে একসঙ্গে কাজ করেছি।  সাফল্য পেয়ে আমরা সত্যিই খুশি।"  শংকর বলেন,"ভেবেছিলাম জীবনটাই শেষ। এখন আবার নতুন করে বাঁচব।  বাড়িতে সন্তান, সংসার আছে। আমি উপার্জন করি।  আঙ্গুল নাড়াতে পারছি। "