JU VC Remove: অনুমতি ছাড়াই সমাবর্তন! যাদবপুরের উপাচার্যকে সরিয়ে দিলেন রাজ্যপাল
JU VC Remove: রাজভবন মনে করছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানছেন না উপাচার্য। অপসারণের পাশাপাশি উপাচার্যের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে রাজভবনের তরফে
শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন নিয়ে জটিলতা চলছিল। তার মধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে উপাচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের অনুমতি ছাড়াই আগামিকাল সমাবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরেই এই পাল্টা সিদ্ধান্ত আচার্য সি ভি আনন্দ বোসের।
আরও পড়ুন-শখের পায়রা খুঁজতে যাওয়াই কাল হল, চোর সন্দেহে নবম শ্রেণির পড়ুয়াকে পিটিয়ে খুন কেতুগ্রামে
কোট মিটিং নিয়ে যে সিদ্ধান্ত তার পরেই বুদ্ধদেব সাউকে সরিয়ে দেওয়া হল। রাজভবন মনে করছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানছেন না উপাচার্য। অপসারণের পাশাপাশি উপাচার্যের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে রাজভবনের তরফে। সমাবর্তন করার কোনও অনুমতি ছিল না। তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড খরচ করেছেন উপাচার্য। সেই টাকা উপাচার্যের কাছ থেকে উসুল করা যাবে কিনা তা নিয়ে আইনি পরামর্শ নিচ্ছে রাজভবন। বিভিন্ন মহলের ধারনা সমাবর্তনের অনুমতি ছিল না রাজ্যপালের তরফে। সেই 'নির্দেশ' অমান্য করাতেই এমন সিদ্ধান্ত।
অপসারণের খবর নিয়ে বুদ্ধদেব সাউ বলেন, আগামিকাল আড়াই হাজার পড়ুয়া ডিগ্রি দেওয়া হবে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। আইন অনুয়ায়ীই সেটা হয়েছে। যদি এমনটা হয়ে যায় তাহলে আপনারাই ভাবুন। শুনেছি সিকিউরিটির হাতে একটি চিঠি এসেছে। কী আছে ওই চিঠিতে তাদে দেখিনি। ফিরে গিয়ে দেখব। একটা চিঠি এসেছিল, কোট কনভোকেশন কববে না। এতদিন ধরে আমাদের সব কাগজপত্র তৈরি। আইন অনুযায়ী তারিখ লিখে ডিগ্রি দিতে হয়। সমাবর্তন না করলে আমাদের প্রায় আড়াই হাজার পড়ুয়া ডিগ্রি পাবে না। তাদের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। দেশ বিদেশে তারা চাকরি করছে। তার বলে রেখেছে ২৪ ডিসেম্বর তারা ডিগ্রি পাবে। সুতরাং ওই তারিখে তারা যদি ডিগ্রি না পায় তাহলে তাদের চাকরি জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অনেকে চাকরি হারিয়ে ফেলবেন। অনেক জায়গায় অ্যাডমিশন বাতিল হয়ে যাবে। এভাবে আড়াই হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তায় ফেলে দেওয়ার মতো মানসিকতা আমার নেই। তার জন্য যদি আমাকে জেলে যেতে হয় তো যেতে হবে। তবে যতদূর দেখেছি কোনও আইন ভাঙ্গা হচ্ছে না।
সমাবর্তনে তো ভিসিকে থাকতে হয়? তাহলে আগামিকাল কী হবে? বুদ্ধদেব সাউ বলেন, সেটাই তো কথা! কোনও পড়ুয়া জীবন যদি অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তাহলে কে বাঁচাবে? সরকারই তা পারে। সুতরাং সেই অনুয়ায়ী যা হবে তা হবে। আমর যদি কোনও ভুল হয়ে থাকে তাহলে কাল সমাবর্তন হবে না। আর আইন অনুয়ায়ী যদি কাজ হয়ে থাকে তাহলে সমাবর্তন হবে। আইনের বাইরে তো কেউ নয়!আইন অমান্য করে আড়াই হাজার পড়ুয়াকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিতে পারি না!
রাজ্যপাল একসময় বুদ্ধদেববাবুকে ডেকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তারপর কী এমন হল? বুদ্ধদেববাবু বলেন, দেখুন কোথায় রাগ হয়েছে? আমি কীভাবে জানব। ওঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি বহুবার। লিখিত জানিয়েছি। পুজোর আগে ওঁর হাতে চিঠি দিয়ে এসেছি। এরপরে যদি এরকম চিঠি আসে তাহলে আর কী বলব।
উপাচার্যকে অপসারণ নিয়ে তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, একেবারে ঘরোয়া কোন্দল। তবে দেখতে হবে বিশ্ববিদ্যালের পড়ুয়ারা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন। হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী সমাবর্তনের দিকে তাকিয়ে থাকেন। সেই জায়গাটা সব পক্ষকেই দেখতে হবে।
বুদ্ধদেব সাউয়ের অপসারণ নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন। তাই অপসারণ করার অধিকারও তাঁর রয়েছে। আমার কাছে যা খবর যে উদ্দেশ্য নিয়ে রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন তাতে ততটা সক্রিয় ছিলেন না উপাচার্য।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)