Student Death: শখের পায়রা খুঁজতে যাওয়াই কাল হল, চোর সন্দেহে নবম শ্রেণির পড়ুয়াকে পিটিয়ে খুন কেতুগ্রামে
Student Death:মৃত কিশোরের বাবা বিকাশ দাস বলেন, রাত নটার সময়ে খোঁজখবর শুরু হল। বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে বেরিয়েছিল। ভেবেছিলাম ওদের সঙ্গেই রয়েছে। আজ বেলা দশটার সময়ে জানতে পারলাম ও মার্ডার হয়ে পড়ে রয়েছে
সন্দীপ ঘোষ চৌধুরী: পায়রা পোষার চরম নেশাই কাল হল। সেই পায়রা খুঁজতে গিয়ে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মৃত্যু হল নবম শ্রেণির পড়ুয়ার। এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। শনিবার ওই কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার হয় মাঠ থেকে। নিহত কিশোরের দুই সঙ্গী পালাতে পারলেও তাকে ধরে বেদম মারধর করা হয়। তাতেই শেষপর্যন্ত মৃত্যু হয় বিশ্বজিত্ দাস(১৬) নামে ওই কিশোরের। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের মাসুন্দির ঘটনা।
আরও পড়ুন-'আইনি জটিলতা তৈরি করে চাকরিপ্রার্থীদের সর্বনাশ করা হচ্ছে': কুণাল
মৃত কিশোরের বাড়ি কেতুগ্রামের পান্ডুগ্রামের। বিশ্বজিতের ছিল পায়রা পোষার চরম নেশা। বাড়ি ৮টি পায়রা রয়েছে। তার মধ্য়ে একটি উড়ে চলে যায়। সেই পায়ারাটিকে খুঁজে আনতে গিয়েছিল বিশ্বজিত্। এমনটাই দাবি পরিবারের। শুক্রবার সন্ধেয় ২ বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে তারা যায় পাশের গ্রাম মাসুন্দির মাঝিপাড়ায়। সেখানে চিন্ময় মাঝি নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে পায়রা ধরতে গিয়ে হাতনাতে ধরা পড়ে যায়। তার পরেই চোর সন্দেহে তাদের মারধর শুরু হয়। বিশ্বজিতের বন্ধু শুভজিত্ দাস পালাতে সক্ষম হয়। ধরা পড়ে যায় বাবুসেনা দাস। তাকে ধরে চাড় থাপ্পড় মারা হয় বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় বিশ্বজিত্কে।
এদিকে, সন্ধে পেরিয়ে রাত হলেও বিশ্বজিতের কোনও খবর পাওয়া য়ায়নি। শনিবার সকালে মাসুন্দি গ্রাম থেকে খবর পেয়ে কেতুগ্রাম থানার পুলিস এসে মাঠ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, প্রবল মারধর করে মেরে ফেলা হয়েছে বিশ্বজিত্কে।
মৃতদেহ দেখিয়ে পরিবারের লোকজনের দাবি, বুকে পেটে মারের দাগ রয়েছে। পেটে কালশিটে দাগ। ঘাড় ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মৃতের আত্মীয় ফুলবাবু দাস বলেন, পায়ে একটি হালকা ছেঁড়া দাগ রয়েছে। এলাকার সিভিক বলেছে সাপের কামড়ে মৃত্যু। কিন্তু ওই কথা ঠিক নয়। পায়ে কোনও ভাবে ছড়ে যেতেই পারে। খবর পেয়েই আমরা দৌড়ে চলে আসি। ওইটুকু বাচ্চা ছেলে ওকি চুরি করতে যেতে পারে? শুধুমাত্র পায়রা আনতে গিয়েই এতবড় কাণ্ড। চিন্ময় মাঝির বাড়িতে পায়রা আনতে গিয়েছিল।
মৃত কিশোরের বাবা বিকাশ দাস বলেন, রাত নটার সময়ে খোঁজখবর শুরু হল। বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে বেরিয়েছিল। ভেবেছিলাম ওদের সঙ্গেই রয়েছে। আজ বেলা দশটার সময়ে জানতে পারলাম ও মার্ডার হয়ে পড়ে রয়েছে। গ্রামের স্কুলে ক্লাস নাইনে পড়তো। বাড়িতে পায়রা রয়েছে। পায়রার নেশা ছিল প্রবল।
প্রতিবেশী উত্তম দাস বলেন, ওর বেশ কয়েকটি পায়রা রয়েছে। সম্প্রতি কয়েকটি পায়রা উড়ে চলে যায়। ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারে মাসুন্দিতে একটি বাড়ির খোপের মধ্যে পায়রাটি রয়েছে। গতকাল সন্ধে সাতটার সময়ে ২ বন্ধুকে নিয়ে ওই পায়রা ধরতে যায়। সঙ্গে একটি মশারির জালও ছিল। ওখানকার লোক চোর ভেবে ওর বন্ধুদের মারধর করে। আর ওকে মাঠের মধ্যে মেরে ফেলে দেয়। কারা মেরেছে জানতে পারিনি। শাবল দিয়ে মেরেছে। ঘাড়টা ঘুরিয়ে দিয়েছে। মাসুন্দির মাঝিপাড়ায় ওই ঘটনা ঘটেছে। ও বাবার একমাত্র সন্তান। যারা খুন করেছে তাদের শাস্তি চাই।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)