সৌমিতা মুখোপাধ্যায়


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

পাহাড়, জঙ্গল, মেঘ, বৃষ্টি, নির্জনতা যেন জড়াজড়ি করে রয়েছে এই গ্রামে। পাহাড়ি পথে হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়ে শুধু হাসিমাখা মুখ। যেন পৃথিবীর সব সুখের ঠিকানা এই গ্রাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা পাহাড়ের এই ছোট্ট গ্রাম এক কথায় মেঘের মুলুক। গ্রামের নাম ধোত্রে। 



দার্জিলিং জেলার অন্তর্গত সিঙ্গলিলা জাতীয় উদ্যানের মধ্যেই এই গ্রাম। গ্রামের নানা দিক থেকে যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই চোখে পড়ে সবুজ। শুধুমাত্র গগনচুম্বী পাইনের ঘন জঙ্গলের জন্যই নয়, পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে সাজানো প্রতিটি বাড়ির চাল সবুজ রঙের টিন দিয়ে ঢাকা, যার জন্য এই গ্রামের আরেক নাম ‘গ্রিন ভিলেজ’। সমুদ্রতল থেকে সাড়ে আট হাজার ফুট উচ্চতায় পাহাড়ি সবুজ গ্রাম ধোত্রে। 



প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা ছোট্ট এই গ্রামের বাসিন্দা সাকুল্যে ৫০ টি পরিবার। সব বাড়ির সামনে একচিলতে জমিতে গাজর, বিন, মটরশুঁটি, আলু আর কপির চাষ হয়। পাইনগাছের ঘন বনে রয়েছে পাখির কলতান। রয়েছে ভাল্লুক, রেড পান্ডার আনাগোনা। রয়েছে অপরিসীম নির্জনতা আর সঙ্গে রয়েছে তুষারাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা। দিনের বিভিন্ন সময়ে নানা রঙে আবির্ভূত হন তিনি। রঙের খেলায় মনে হবে স্বয়ং বুদ্ধদেব আপনার সামনে শুয়ে রয়েছেন। তবে শুধু গ্রীষ্মে বা শরতে নয় ভরা শীতে ধোত্রেতে তুষারপাতের অভিজ্ঞতাও আপনাকে মুগ্ধ করবে। 



এখানকার স্থানীয় মানুষদের মুখে সবসময় লেগে রয়েছে সরল হাসি। স্থানীয় হোমস্টের বাসিন্দাদের নির্ভেজাল আতিথেয়তা এখানে বারবার যেতে বাধ্য করবে আপনাকে। ধোত্রে গেলে সূর্যোদয়ের আগেই উঠে পড়ুন ঘুম থেকে। হোমস্টের ছাদে চলে যান, বা একটু হেঁটে চলে যান দূরে অবস্থিত ভিউ পয়েন্টয়ে। এছাড়া গ্রামের মধ্যেও একটু হাঁটাহাঁটি করে নিতে পারেন। গল্প করার জন্য পেয়ে যাবেন স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের ঝুলিতে গ্রাম নিয়ে রয়েছে হাজারও গল্প। কাছে মনাস্ট্রি থেকে ভেসে আসা ‘ওম মণি পদ্মে হুঁম’ বা মন্দিরের মঙ্গলারতির ঘণ্টাধ্বনি মন ভরিয়ে দেয় সময়ে সময়ে। 



সান্দাকফুর ট্রেকিং অনেকে এই ধোত্রে থেকেই শুরু করেন। আর যাঁরা শুধুমাত্র ধোত্রেকেই উপভোগ করতে চান, তাঁরা এখান থেকে ট্রেক করে টুমলিং পর্যন্ত ঘুরে আসতে পারেন। 



 
কীভাবে যাবেন? 

কলকাতা হোক বা দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে আপনাকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন বা বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছতে হবে। বিমানবন্দর বা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ধোত্রে যাবার গাড়ি পেয়ে যাবেন। আর যদি আপনার হোম স্টেকে আগে থেকে জানিয়ে রাখেন, তা হলেও তাঁরাও গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন। এনজেপি বা বাগডোগরা থেকে ধোত্রের দূরত্ব ১০০ কিমির আশেপাশে। এন.জে.পি - শিলিগুড়ি থেকে হোমস্টে পর্যন্ত একটি গাড়ি ভাড়া (আনুমানিক) ৫০০০/-টাকা। 


আরও পড়ুন: #ভ্রমণ: হাত বাড়ালেই আদিম অরণ্যের অন্ধকার


থাকা খাওয়ার খরচ
এখানে কোনও হোটেল নেই। কয়েকটা হোমস্টে রয়েছে। হোমস্টেতে রোজের জনপ্রতি খরচ ১৫০০/-টাকা। তবে এটা শুধু থাকার জন্য নয়। এরই মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সকালের চা, প্রাতঃরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, সন্ধের টিফিন ও নৈশভোজ।


  (Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)