সৌমিত্র সেন 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মহালয়া থেকেই মোটামুটি পুজোর আবহের শুরু। বাঙালির আবহমান সংস্কৃতিতে রেডিয়োতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় চণ্ডীপাঠ শুনতে পাওয়া মানেই মনের ভিতরে পুজোর আয়োজন শুরু। কাগজেকলমে মহালয়া হল পিতৃপক্ষ ও দেবীপক্ষের সন্ধিক্ষণ। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের প্রতিপদ থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী অমাবস্যা র্পযন্ত (যা আশ্বিনে এসে পৌঁছয়) সময়কে পিতৃপক্ষ বলে। পুরাণমতে, ব্রহ্মার নির্দেশে পিতৃপুরুষরা এই ১৫ দিন মনুষ্যলোকের কাছাকাছি চলে আসেন। এই সময় তাঁদের উদ্দেশ্যে তাই কিছু অর্পণ করার রীতি। লোকবিশ্বাস, এই সময়ে আত্মাদের উদ্দেশ্যে কিছু অর্পণ করা হলে তা সহজেই তাঁদের কাছে পৌঁছয়। এই বিশ্বাস থেকেই গোটা (পিতৃ)পক্ষকাল ধরে পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা হয়, তর্পণ করা হয়। যার চূড়ান্ত দিন বা মহা লগ্নটি হল এই মহালয়া। অনেকেই এই দিনটিকে দেবীপক্ষের সূচনা বলে থাকেন। মহালয়া পিতৃপক্ষের শেষ দিন। পরের দিন শুক্লা প্রতিপদে দেবীপক্ষের সূচনা। সেই দিন থেকে কোজাগরী পূর্ণিমা পর্যন্ত ১৫ দিন হল দেবীপক্ষ।


আরও পড়ুন: Durga Puja 2022: কন্যাসন্তানের নাম রাখুন দুর্গার নামে, জীবনে আনুন মায়ের বিশেষ আশীর্বাদ...


শাস্ত্রমতে, মহালয়া হল একটি অমাবস্যা তিথি, এ তিথিতে সাধারণত পিতৃপুরুষের শ্রাদ্ধ-তর্পণ করা হয়। এ দিন তর্পণ করলে পিতৃপুরুষরা নরকযন্ত্রণা থেকে মুক্তি পান বলে বিশ্বাস। তাঁরা এই প্রাপ্তিতে আমাদের আশীর্বাদও করেন।


এছাড়া মহালয়ার দিনে অনেক জায়গায় দেবী দুর্গার বোধনও হয়। 'বোধন' অর্থে জাগরণ। মহালয়ার পরে দেবীপক্ষের তথা মাতৃপক্ষের তথা শুক্লপক্ষের প্রতিপদে ঘট বসিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার সুচনা করা হয়। শ্রাবণ থেকে পৌষ-- এই ছ'মাস দক্ষিণায়ন। 'দক্ষিণায়ন' দেবতাদের ঘুমের সময়। তাই বোধন করে দেবতাদের সেই ঘুম থেকে জাগানো হয়। মহালয়ার পরে প্রতিপদে যে-বোধন হয় সে সময় সংকল্প করে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা চলে। একে বলে কল্পারম্ভ। যদিও ষষ্ঠী থেকে পুজোর প্রধান ক্রিয়াকর্ম শুরু হয়। তাই বলা হয় ষষ্ঠ্যাদিকল্পারম্ভ। সপ্তমী থেকে বিগ্রহতে পুজো। প্রতিপদ থেকে শুধু ঘটে পুজো চলে। সঙ্গে চণ্ডীপাঠ। বলা হয়, মহালয়ার দিনেই দেবীদুর্গা দেবতাদের কাছ থেকে মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।


ইদানীং অবশ্য পুজোর সময়কাল আগের চেয়ে কিঞ্চিৎ বেড়েছে। শাস্ত্রবিধির ব্যাপার নয়, পুরোপুরি উৎসব উদযাপনের দিকে নজর রেখেই এই দিনবৃদ্ধি। এখন মহালয়া নাগাদই বেশ কিছু পুজোর আয়োজন সম্পূর্ণ হয়ে যায়। মানুষ ঠাকুর দেখতে বেড়িয়ে পড়েন। এবার রবিবার মহালয়া। সেই হিসেবে হয়তো ছুটি-ছুটি মুড থাকবেই মানুষের মধ্যে। ফলে, একদিকে থাকবে মহালয়ার সুগম্ভীর উদযাপন, অন্যদিকে থাকবে পুজোকে কেন্দ্র করে মানুষের আনন্দ। এবারের মহালয়ার মধ্যে তাই মিশছে দুরকমের সুর।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)