নিজস্ব প্রতিবেদন: করোনা আতঙ্কে থমকে গিয়েছে গোটা দেশ। শুধু দেশ বললে ভুল হবে করোনা আতঙ্কে লকডাউন প্রায় সারা বিশ্ব। এমন অবস্থায় অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে বিশ্বজুড়ে। টানা ২১ দিনের লকডাউনের জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। তার মধ্যেই মধ্যবিত্তের মুখে হাসি ফুটিয়েছিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর একটি ঘোষণা। দেশের এই অবস্থায় জন সাধারণের কথা চিন্তা করে তিন মাস ব্যাঙ্ক ঋণ-এর ইএমআই দিতে হবে না।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এই তিন মাসের ব্যাঙ্ক ঋণ এর ইএমআই নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে সাধারন মানুষের মনে। এই তিন মাসের ব্যাঙ্ক ঋণ কি মুকুব করা হয়েছে? নাকি স্থগিত করা হয়েছে? না কোনও ব্যাঙ্ক ঋণই মুকুব করা হয়নি, কেবল তিন মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই তিন মাসের ইএমআই দিতে হবে। তবে তা কী ভাবে দেবেন তা নির্ভর করছে আপনার ব্যাঙ্কের উপর।


তিন মাস ব্যাঙ্ক ঋণের ইএমআই দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের নিয়ম বিভিন্ন হতে পারে। কোনও কোনও ব্যাঙ্ক আপনার বকেয়া এই তিন মাসের টাকা প্রতি মাসের ঋণের কিস্তির সঙ্গে সমান ভাগে ভাগ করে দিতে পারে। আবার কোনও কোনও ব্যাঙ্ক ঋণের মেয়াদ বাড়িয়ে এই কিস্তি আদায় করতে পারে।


কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই তিন মাস সুদ এবং আসল সহ মাসিক কিস্তি স্থগিত করা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে জেনে রাখা প্রয়োজন চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে যে সমস্ত ঋণের কিস্তি বাকি রয়েছে সেই ঋণের জন্যই এই ঘোষণা করা হয়েছে। এই বিষয়ে ব্যাঙ্কগুলি নিজ নিজ নির্দেশিকা জারি করবে।


আপনার যদি বাড়ি, গাড়ি, পার্সোনাল বা শিক্ষার জন্য ঋণ নেওয়া থাকে তবে সেই সকল ঋণ এই নিয়মের আওতায় আসবে। এই বিষয়ে আরবিআই এ্রর নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, যে সমস্ত ঋণ নির্দিষ্ট মেয়াদ ও মাসিক কিস্তিতে শোধ করার আওয়াধীন সেই সমস্ত ঋণের কিস্তি এই নিয়মের আওতায় থাকবে। এর সঙ্গে ফ্রিজ, ল্যাপটপ, টিভি, মোবাইল কেনার ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য।


ঋণ পরিশোধের আওতায় ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া বা মাসিক কিস্তিও পড়ে। তবে সেই মাসিক কিস্তিগুলো কি এই নিয়মের আওতায় পড়বে। এ প্রশ্ন নিয়ে সাধারণ মানুষের রয়েছে দ্বন্দ্ব। ব্যাঙ্কের ঋণের মতো ক্রেডিট কার্ডের ঋণ যেহেতু নির্দিষ্ট মেয়াদের ঋণের অন্তর্ভুক্ত নয় সে ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়।


যারা ব্যাঙ্ক থেকে ব্যবসার জন্য ঋণ নিয়েছেন বা কোনও ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ নিয়েছেন সে ক্ষেত্রেও যদি মেয়াদি ঋণ হিসেবে নেওয়া হবে তবে এই একই নিয়ম থাকবে। অর্থাৎ তিন মাসের জন্য ইএমআই দিতে হবে না। তবে যদি ঋণ পরিশোধে এককালীন ঋণ পরিশোধের শর্ত থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়।


নতুন এই নিয়ম অনুসারে আরবিআই এর দেওয়া নির্দেশ প্রতিটি ব্যাঙ্ক ভিন্ন সিদ্ধান্ নেবে। সে ক্ষেত্রে যদি গ্রাহকের কাছে ব্যাঙ্কের থেকে নির্দিষ্ট বিষয়ের কোনও নির্দেশ না পাওয়া যায় তবে প্রতি মাসের নির্ধারিত সময় মতই অ্যাকাউন্ট থেকে যে ভাবে কিস্তি কেটে নেওয়া হয়, সেভাবেই কেটে নেওয়া হবে। আর এই বিষয়ে যদি কোনও ব্যাঙ্ক সিদ্ধান্ত নেয় তবে তা গ্রাহকরা অবশ্যই পেয়ে যাবেন।


আরও পড়ুন: করোনা থেকে বাঁচতে ঘন ঘন হ্যান্ড স্যানিটাইজার মাখছেন? অজান্তেই বাড়াচ্ছে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি!


আরবিআই এই বিষয়ে ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে। সেই অনুযায়ী ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষ আলোচনার মাধ্যমে উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই তা গ্রাহকদের জানানো হবে। তবে এই বিষয়ে আরবিআই এখনও বিস্তারিত কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি। কেবলমাত্র তিন মাস সুদ এবং আসল সহ মাসিক কিস্তি স্থগিত করার ঘোষণা করা হয়েছে। আরবিআই এর বিস্তারিত নির্দেশিকা মিললে আরও নির্ধারিত নিয়মগুলির বিষয়ে ধারণা স্পষ্ট হবে।


এই সুবিধা শুধুমাত্র সরকারি ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এমনটা নয়। এই নিয়ম সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কের থেকেই পাওয়া যাবে। এমনকী কো-অপারেটিভ, গ্রামীণ ও আঞ্চলিক ব্যাঙ্কগুলিও এর আওতায় রয়েছে। শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক নয় যে কোনও ঋণপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলিও এর আওতাধীন।