জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কিংবদন্তি, কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীতেই মহালক্ষ্মী জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সমুদ্রমন্থন থেকে দেবী লক্ষ্মীর আবির্ভাব হয়েছিল। পুরাণ বলছে, একসময় দুর্বাসা মুনির অভিশাপে সৌভাগ্যের দেবী লক্ষ্মী গৃহছাড়া হয়েছিলেন। লক্ষ্মী চলে যাওয়ায় স্বর্গলোক শ্রীহীন হয়ে পড়ল। দেবতারা অসুরের সঙ্গে যুদ্ধ করে সমুদ্রমন্থনে আবার ফিরিয়ে এনেছিলেন লক্ষ্মীদেবীকে। লক্ষ্মীদেবীর এই পুনরাবির্ভাবের দিনটিই ছিল ধনতেরাস। সেই থেকেই এদিন দেবী লক্ষ্মীর আরাধনার প্রচলন। সমুদ্রমন্থনের সময়ে ভগবান ধন্বন্তরী যখন জন্মগ্রহণ করলেন তখন তাঁর হাতে একটি অমৃতের কলস ছিল। অমৃতের সেই কলস নিয়ে তিনি হাজির হলে দেবতারা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। এদিনটিও ছিল ধনতেরাস। এই ঘটনা মনে রেখেই পরবর্তী কালে ধনতেরাসের দিনে বাসন কেনার প্রথা চালু হয় বলে মনে করা হয়। শুধু বাসনই নয়, অন্য কোনও ধাতু কেনাও অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয় এদিন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Dhanteras: ধনতেরস উৎসবটি আসলে কী? জেনে নিন এর প্রকৃত কাহিনী...


ধনতেরাস উৎসব পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে পালন করা হয়। আজ, ২২ অক্টোবর, শনিবার সেই ধনত্রয়োদশী। অনেকেই এই দিনটি বিশেষ শুভ বলে মনে করেন। অনেকে এদিন বাড়িতে লক্ষ্মী পুজোও করেন। মূলত অবাঙালিদের মধ্যে এর প্রচলন থাকলেও এখন বাঙালিদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে এই উৎসব। এই উৎসবে মূলত সোনা কেনা হয়। সোনা না কিনতে পারলেও  যে-কোনও ধাতু কেনাকেই শুভ বলে মনে করা হয়। দীপাবলি মূলত পাঁচ দিনের উৎসব। তারই একটি দিন ধনত্রয়োদশী। 'ধন' মানে সম্পত্তি। 'ত্রয়োদশী' শব্দের অর্থ ১৩তম দিন। দীপাবলির দিন দুই আগে ধনতেরাস হয়। বলা হয়, ধনতেরাসের দিন দেবী লক্ষ্মী তাঁর ভক্তদের গৃহে যান ও তাঁদের ইচ্ছাপূরণ করেন। ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কাছে দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা এ দিন দামি ধাতু কেনেন। সম্পদের দেবতা কুবেরও এ দিন পূজিত হন।


কথিত আছে, রাজা হিমার ১৬ বছরের ছেলের উপর এক অভিশাপ ছিল। রাজকুমারের কোষ্ঠীতে লেখা ছিল, বিয়ের চার দিনের মাথায় সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হবে। যথাকালে ছেলে বড় হল। অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজা ছেলের বিয়ে দিলেন। ক্রমে রাজকুমারের স্ত্রীও জানলেন সেই কথা। নববধূ ঠিক করলেন, তিনি তাঁর স্বামীকে রক্ষা করবেন। সেই অভিশপ্ত দিনে তিনি তাঁর স্বামীকে ঘুমোতে দিলেন না। শোবার ঘরের বাইরে সমস্ত গয়না ও সোনা-রূপার মুদ্রা জড়ো করে রাখলেন তিনি। সেই সঙ্গে সারা ঘরে বাতি জ্বালিয়ে দিলেন। স্বামীকেও জাগিয়ে রাখলেন। সারারাত গানে-গল্পে কাটতে লাগল। এদিকে অভিশাপমতো মৃত্যুর দেবতা যম যথাসময়ে তাঁদের ঘরের দরজায় এলেন। আলো আর গয়নার জৌলুসে তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে গেল। রাজপুত্রের শোবার ঘর পর্যন্ত তিনি পৌঁছন ঠিকই। কিন্তু সোনার উপর বসে গল্প আর গান শুনেই তাঁর সময় কেটে গেল। এদিকে ভোরের আলো ফুটতেই কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই চলে যেতে হল যমকে। আর রাজপুত্রের প্রাণও বেঁচে গেল। সকালে ঘুম ভেঙে বৃদ্ধ রাজা জানলেন, তাঁর অভিশপ্ত পুত্রের মৃত্যু হয়নি! সেই আনন্দে সেদিন রাজ্য জুড়ে উৎসব পালন হল। দিনটি ছিল ত্রয়োদশী।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)