নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে নির্বাচনী ফলই নাকি শেষ কথা! এমন সরলীকরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা। বছরখানেক ধরে চলা কৃষক আন্দোলনের জেরে কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে কার্যত বাধ্য হল মোদী সরকার। জরুরি অবস্থা হোক বা কৃষি  আইন প্রত্যাহার - বিজেপি হোক বা কংগ্রেস - শাসকদলের বক্তব্য অবিকল একই 
রকম।  তারই মধ্যে বারবার ঝলসে ওঠে ভারতের গণতন্ত্র। পিছু হঠতে বাধ্য হন ইন্দিরা গান্ধী, নরেন্দ্র মোদীরা।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

একদা জয়প্রকাশ নারায়ণ বলেছিলেন,''ভারতে গণতন্ত্র ক্ষমতায় থাকে না, ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করে।'' এক ভারত লাইন দিয়ে নেতাদের সভায় আসে, সেই ভারতই সময় এলে সেই নেতাদের চরম শিক্ষা দেয়। মার্ক টুলি লিখেছিলেন,''এটাই ভারতীয় গণতন্ত্রের আসল রং। রাজনীতির ঊর্ধ্বে গণতন্ত্র।''


১৯৭৫-র ২৬ জুন। সকাল ৮ টায় রেডিও-তে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। দুনিয়াকে নাড়িয়ে দিয়ে ইন্দিরা গান্ধীর ঘোষণা দেশের উদ্ভুত পরিস্থিতির নিরিখে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করেন। দাবি করেন, নাগরিকদের ভালর জন্য, দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত। ১৯৭৭ সালে ২৫ জুন জরুরি অবস্থা ওঠে। পরের ভোটে মুখ থুবড়ে পড়ে ইন্দিরার দল। মাত্র ১৫৩টি আসন পায় কংগ্রেস। এর মধ্যে ৯২টি দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে।   


৩ কৃষি আইন নিয়ে বিক্ষোভের মধ্যে বারবার নরেন্দ্র মোদীও সেই একই ভাবে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন। সঙ্গে কটাক্ষ মিশিয়ে আক্রমণ। কৃষকদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থীও তিনি। 


১৯৭১ এ-বিপুল সংখ্যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছিল কংগ্রেস। ২০১৯ সালে সেই জায়গায় নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জরুরি অবস্থা আর কৃষি আইনের মধ্যে বিস্তর তফাত্‍। তবু ১৯ নভেম্বর, ২০২১-র পর ইন্দিরার সঙ্গে একই সারিতে চলে গেলেন নরেন্দ্র দামোদর দাস। দু'ক্ষেত্রেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কাছে হার সংখ্যার জোরে।


এভাবেই বারবার শাসককে সমঝে দিয়েছে, পিছু হঠতে বাধ্য করেছে দেশ। 


জয়প্রকাশের আন্দোলন (১৯৭৫)


জরুরি অবস্থার প্রতিবাদে জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে দেশজুড়ে আন্দোলন। 


জঙ্গল বাঁচাও আন্দোলন ( ১৯৭৯-১৯৮৯)


আদিবাসীদের জমি ও জঙ্গলের অধিকারের দাবিকে স্বীকৃতি দিয়ে আইন পাস করে কেন্দ্র 


সিঙ্গুর জমি অধিগ্রহণ ( ২০০৬) 


আলোচনা ছাড়াই জমি অধিবেশনের বিরোধিতায় আন্দোলন। এর জেরে ১৮৯৪-র
জমি অধিগ্রহণ আইন বাতিল করে নতুন আইন পাস হয় 


লোকপাল বিল ( ২০১১)
আন্না হাজারের ডাকে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠনে আন্দোলনে সামিল হন কয়েক কোটি মানুষ


নির্ভয়া আন্দোলন


দিল্লিতে ছাত্রীকে নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ আন্দোলন। এর জেরে ধর্ষণে আরও কড়া শাস্তি দিতে আইন পাস হয় সংসদে 


CAA বিরোধী আন্দোলন


এখনও সিএএ আইন প্রণয়ণ হলেও বিধি তৈরি করতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। 


রাজনতিক বিশ্লেষকদের মতে, যখনই সংখ্যার জোরে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তখনই রাস্তায় নেমেছে দেশ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নড়ে গিয়েছে শাসকদল।  সিঙ্গুর থেকে সিঙ্ঘু, নির্ভয়া থেকে জল-জঙ্গলের অধিকার - গণতন্ত্রই শেষ কথা বলে। 


আরও পড়ুন- পশ্চাদমুখী সিদ্ধান্ত, আইন-প্রত্যাহারে হতাশ সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত প্যানেল-সদস্য


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)