Bombay High Court: ধর্ষককেই নির্যাতিতাকে বিয়ে করতে নির্দেশ হাইকোর্টের! কেন এমন রায়?
ওই যুবতী বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন। বাড়িতেও সে তাঁর গর্ভাবস্থার কথা গোপন করে যান। এরপর ২০২০-র ২৭ জানুয়ারি, সিটি হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেন ওই যুবতী।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ধর্ষককেই নির্যাতিতাকে বিয়ে করতে নির্দেশ! আপাত দৃষ্টিত এমনই রায় দিল বোম্বে হাইকোর্ট। তবে এই রায়ের পিছনে একটি শর্ত রয়েছে আদালতের। এই বিয়ের নির্দেশের সময়সীমা ১ বছর। এখন ওই নির্যাতিতা নিখোঁজ। আগামী ১ বছরের মধ্যে যদি ওই যুবতীকে খুঁজে পাওয়া যায়, তবেই বিয়ে করতে হবে অভিযুক্তকে। তারপর আর এই নির্দেশ কার্যকর হবে না। কিন্তু কেমন এমন নির্দেশ? সবিস্তারে খোলসা করা যাক।
জানা গিয়েছে, একটি ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ২৬ বছরের ওই য়ুবক। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগ এনেছে ২২ বছরের এক যুবতী। আদালতের রায় অনুযায়ী, ২২ বছরের ওই যুবতী ২৬ বছরের ওই যুবকের সঙ্গে সহবাস করতেন। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে সহবাস করে অভিযুক্ত। সহবাসের ফলে ওই যুবতী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। অভিযোগ, তখন ওই যুবক ওই যুবতীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। তখনই ওই যুবতী অভিযুক্ত পার্টনারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলা দায়ের করে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মুম্বই পুলিসে অভিযোগ দায়ের করে ওই তরুণী। যারপরই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। তাঁর লিখিত অভিযোগে ওই যুবতী জানায়, ২০১৮ সাল থেকে তাঁরা দুজন সম্পর্কে ছিলেন। তাঁদের দুই পরিবারও তাঁদের দুজনের সম্পর্কের কথা জানত। কোনও আপত্তি ছিল না তাঁদের। একইসঙ্গে ওই যুবতীর আরও অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে বহুবার সহবাসও করেছেন অভিযুক্ত। কিন্তু ২০১৯-এ তিনি যখন বুঝতে পারলেন যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা ও সেকথা অভিযুক্তকে জানানোর পর থেকেই তাঁকে এড়িয়ে যেতে শুরু করে সে।
এই পরিস্থিতিতে ওই যুবতী বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন। বাড়িতেও সে তাঁর গর্ভাবস্থার কথা গোপন করে যান। এরপর ২০২০-র ২৭ জানুয়ারি, সিটি হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেন ওই যুবতী। এখন ওই যুবতীর বিরুদ্ধেও এফআইআর রয়েছে। কারণ, তিনি তাঁর সন্তানকে জন্মের ৩ দিনের মাথায় একটি আবাসনের সামনে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান। তারপর থেকেই নিখোঁজ ওই যুবতী। এদিকে শুনানি চলকালীন অভিযুক্ত যুবক আদালতের কাছে দাবি করে যে, সে ওই যুবতীকে বিয়ে করতে ও তাঁর সন্তানের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন, Mumbai: পিওনের লালসার চোখ গর্ভবতী যুবতীর দিকে, স্বামীর ছুরিতে বদলা!
যদিও পুলিস আদালতকে জানিয়েছে যে, ওই যুবতী নিখোঁজ। আর ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে একটি চাইল্ড কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। সেখান থেকে ওই শিশুটিকে দত্তকও নিয়েছে এক পরিবার। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, যে সময় ঘটনাটি ঘটেছে তখন নির্যাতিতা প্রাপ্তবয়স্ক ছিল। আর সহবাস উভয়ের সম্মতিতেই হয়েছিল। তাই অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুরের মধ্যে কোনও ভুল নেই। তবে তা শর্তসাপেক্ষে। এক বছরের মধ্যে যদি ওই যুবতীর খোঁজ পাওয়া যায়, তবে তাঁকে বিয়ে করতে হবে। এই শর্তের ভিত্তিতে ২৫ হাজার টাকা বন্ডে অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট।