নিজস্ব প্রতিবেদন: বাজেটে আয়করের হার কমালেন অর্থমন্ত্রী। তবে, সঙ্গে জুড়ে দিলেন শর্ত। কম হারে কর দিতে চাইলে, ছাড়তে হবে করমুক্ত সঞ্চয়ের মায়া। আর, করমুক্ত সঞ্চয়কে কাজে লাগাতে চাইলে, দিতে হবে বেশি হারে কর। এক হাতে দিয়ে অন্য হাতে কেড়ে নিলেন নির্মলা সীতারমন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

৪ বছর পর বাজেটে আয়করের হারে পরিবর্তন হল। শর্তসাপেক্ষে করের হার কমানোর  কথা ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে করের হারে হাত দেয়নি সরকার। ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আয়ে আগে ২০ শতাংশ হারে কর দিতে হতো। এখন ৫ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে ১০ শতাংশ এবং সাড়ে ৭ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে, ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। এখন ১০ লক্ষ টাকার বেশি আয়ে ৩০ শতাংশ কর দিতে হয়। এবার, ১০ থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে ২০ শতাংশ এবং সাড়ে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা আয়ে ২৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। ১৫ লক্ষ টাকার বেশি আয়ে আগের মতোই করের হার ৩০% থাকছে। 



ভোটের আগে অন্তর্বতী বাজেটে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা রিবেট ঘোষণা করা হয়। তা এবারও বহাল রাখা হয়েছে। ফলে করযোগ্য আয় ৫ লাখের কম হলে রিবেটের সুযোগ থাকায় কোনও কর দিতে হবে না। কিন্তু, করযোগ্য আয় ৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গেলে আড়াই লক্ষের বেশি আয়ের ওপর কর দিতে হবে। 


করের হার কমালেও শর্ত জুড়ে দিয়েছেন নির্মলা সীতারামন। বাজেটে বলা হয়েছে, কেউ নতুন হারে কর দিতে চাইলে তিনি আর আগের মতো আয়কর আইনের নানা ধারায় করমুক্ত সঞ্চয়ের সুবিধা পাবেন না। আর, করমুক্ত সঞ্চয়ের সুবিধা নিতে চাইলে তাঁকে পুরনো হারেই কর দিতে হবে। 


চাকরিজীবীদের জন্য ৫০ হাজার টাকা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন এবং করের ওপর ৪% সেস আগের মতোই ধরে নিলে দেখা যাচ্ছে, আপনার কোনও করযোগ্য সঞ্চয় না থাকলে,সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর বাঁচছে ২০ হাজার ৮০০ টাকা। ৮ লাখ টাকা আয়ে তা বেড়ে দাঁড়াচ্ছ ২৬ হাজার টাকা। ১০ লাখ টাকা আয়ে কর বাঁচছে ৩৬ হাজার ৪০০ টাকা। ১২ লক্ষ টাকা আয়ে তা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৫৪ হাজার ৬০০ টাকা। 



এবার ধরা যাক আয়কর আইনের 80C ধারায় আপনার কাছে এলআইসি-পিপিএফ নিয়ে দেড় লক্ষ টাকা করমুক্ত সঞ্চয়ের সুযোগ রয়েছে। 80D ধারায় মেডিক্লেম বাবদ আরও ২৫ হাজার টাকা করমুক্ত সঞ্চয়ের সুযোগ পেতে পারেন আপনি। তাহলে, নতুন নাকি পুরনো,কোন নিয়মে কর দিলে আপনার লাভ, তা একবার দেখে নেওয়া যাক। ৫০ হাজার টাকা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন এবং করের ওপর ৪% সেস ধরে নিলে দেখা যাচ্ছে, সাড়ে ৭ লাখ টাকা আয়ে পুরনো নিয়মে, করমুক্ত সঞ্চয়ের সুবিধা নিলে ১৫ হাজার ৬০০ টাকা বাঁচছে। ৮ লাখ টাকা আয়ে পুরনো নিয়মে বাঁচছে ১০ হাজার ৪০০ টাকা। ১০ লাখ টাকা আয়ে কোনও ফারাক হচ্ছে না। কিন্তু, ১২ লাখ টাকা আয়ে পুরনো নিয়মে, করমুক্ত সঞ্চয়ের সুবিধা নিলে অতিরিক্ত ২ হাজার ৬০০ টাকা দিতে হচ্ছে। 


যার মানে দাঁড়াচ্ছে যাঁদের আয় কমবেশি ১২ লক্ষ বা তার ওপরে, তাঁদের লোকসান বন্ধে নতুন নিয়মেই কর দিতে হবে। আইনে বাধা না থাকলেও বাস্তবে করমুক্ত সঞ্চয়ের কোনও সুবিধা তাঁরা পাবেন না। কর-মুক্ত সঞ্চয়ের তালিকাতেও কাটছাঁট করতে আয়কর আইনে পরিবর্তনের কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। 


বিশেষজ্ঞরা বলছেন কর কাঠামোর পরিবর্তন করে ধনীদের কর বাঁচাতে সঞ্চয়ের প্রবণতায় লাগাম দেওয়ার চেষ্টা করল সরকার। এরফলে বাড়তি টাকা তাঁরা যদি বাজারে খরচ করেন, তাহলে চাহিদা বাড়বে। আর্থিক বৃদ্ধির চাকায় গতি ফেরাতে, যেটা এখন সরকারের প্রধান লক্ষ্য। 


আরও পড়ুন- Budget 2020: ব্যাঙ্কের ঝাপ পড়লেও ৫ লক্ষ টাকা ফেরত নিশ্চিত করল মোদী সরকার