অর্থনীতির হাল ফেরাতে হাত খুলে খরচ নির্মলার, টাকা কোথায়? দিশা নেই বাজেটে
খরচ তো হবে। কিন্তু, টাকা আসবে কোথা থেকে?
নিজস্ব প্রতিবেদন: ঝিমিয়ে অর্থনীতি। ঘুম ভাঙানোর স্বপ্ন দেখালেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু কোথা থেকে আসবে টাকা? কোন পথে বাড়বে সরকারি খরচ? কীভাবে তৈরি হবে কর্মসংস্থান? বাজেটে এসবের উত্তর নেই বলে অভিযোগ বিরোধীদের। একমত বিশেষজ্ঞদের একাংশও।
নতুন ভারতের আশা, সংস্কার ও বেসরকারিক্ষেত্রকে উত্সাহদান ও মানবিকতা আর প্যাশনের সঙ্গে দায়িত্ববান সমাজ- নিজের দ্বিতীয় বাজেট ভাষণের শুরুতেই, সরকারের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যের কথা জানালেন নির্মলা সীতারামন। ঝিমিয়ে থাকা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে একাধিক ক্ষেত্রে সরকারি খরচ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন। গ্রাম ও গ্রামীণ ভারত বরাবরাই গুরুত্ব পায় ভারত সরকারের বাজেটে। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। কৃষি ও গ্রামোন্নয়নে বরাদ্দ হয়েছে ২.৮৩ লক্ষ কোটি টাকা। শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে আগামী অর্থবর্ষে ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি খরচ হবে। তফশিলি জাতি, জনজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির উন্নয়নে খরচ হবে প্রায় ১.৪০ লক্ষ কোটি টাকা।
খরচ তো হবে। কিন্তু, টাকা আসবে কোথা থেকে? বাজেটের আগেই কর্পোরেট করে দেড় লক্ষ কোটি টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে। এদিন, অর্থমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, বাড়তি আয়কর ছাড়ের জন্য বছরে ৪০ হাজার কোটি ও ডিভিডেন্ড বণ্টন কর তুলে দিতে গিয়ে সরকার ২৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে। চলতি অর্থবর্ষে প্রত্যক্ষ কর, পরোক্ষ কর, বিলগ্নিকরণ খাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সরকারের আয় ৩ লক্ষ কোটি টাকা কম হতে পারে।
চলতি অর্থবর্ষে, আর্থিক ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রাও জিডিপির ৩.৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩.৮ শতাংশ করতে বাধ্য হয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এই অবস্থায় টানাটানির সংসারে টাকা জোগাড়ে সরকারের ভরসা বিলগ্নিকরণ। জীবন বিমা নিগমের শেয়ার ছাড়ার কথা বলা হয়েছে। বাজেট প্রস্তাব বলছে, ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বিক্রি করে আগামী অর্থবর্ষে সরকারি কোষাগারে ২ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা আসবে। কিন্তু চলতি অর্থবর্ষে বিলগ্নিকরণে ১ লক্ষ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হলেও হাতে এসেছে ৬০ হাজার কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, এই বাজেটে সরকারের আয়ের উত্স স্পষ্ট নয়। তাহলে কি ধার করে অবস্থা সামাল দেওয়া হবে? নাকি, পরের দিকে ছাঁটাই করা হবে খরচ? তারও উত্তর নেই। সরকারি খরচ পর্যাপ্ত না হলে কাজে সুযোগ কীভাবে বাড়বে তা নিয়েও চিন্তায় বিশেষজ্ঞরা।
এদিন নির্মলা সীতারামণের বাজেট ভাষণ ছিল ২ ঘণ্টা ৪১ মিনিটের যা সংসদের ইতিহাসে দীর্ঘতম। রক্তচাপ কমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বক্তৃতা শেষ করতে পারেননি তিনি। মাঝ-পথেই অর্থমন্ত্রী বসে পড়ায়, অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার। পরে, অবশ্য সামলে ওঠেন নির্মলা। বাজেটে লগ্নিকারীদের প্রত্যাশা না মেটায়, সারাদিনে প্রায় ১ হাজার পয়েন্ট পড়ে যায় সেনসেক্স।
আরও পড়ুন- Budget 2020: শিক্ষায় বিদেশি বিনিয়োগ দরজা খুলছে মোদী সরকার,আসছে নয়া শিক্ষানীতি