জ্যোতির্ময় কর্মকার: গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতের নজরদারিতে মধ্যস্থতা করার বিষয়টি জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এ দিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যেই মধ্যস্থতার বিষয়ে ভিন্ন সুর শোনা গেল। লক্ষ লক্ষ মানুষকে মধ্যস্থতার মাধ্যমে আদৌ সহমতে আনা যাবে কিনা প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তবে, আলোচনার উপরই জোর দিয়েছেন তিনি। সব পক্ষকে মধ্যস্থতাকারীদের নাম সুপারিশ করার পরামর্শ দেয় শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। আজ শুনানি চলাকালীন বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবড়ে বলেন, নতুন করে ইতিহাস জানানোর প্রয়োজন নেই। আমরা তা জানি। বিচারপতি এস এ বোবড়ে আরও বলেন, কে আক্রমণ করেছিল, বাবর কী করেছেন, সে সময় রাজা কে ছিলেন, সেখানে মন্দির না মসজিদ ছিল, তার ইতিহাস আমরা পালটাতে পারি না। শুধুমাত্র বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করতে পারি আমরা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


তবে, হিন্দু মহাসভা তরফে মধ্যস্থতার বিপক্ষে সওয়াল করা হয়। রামলালার তরফে সুপ্রিম কোর্টের এই পরামর্শের বিরোধিতা জানিয়ে কৌঁসুলি সি এস বৈদ্যনাথন বলেন, হিন্দুদের বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন। এ বিষয়ে কেউ আপস করতে রাজি নন। প্রয়োজন হলে আমরা অর্থ জোগাড় করে অন্যত্র মসজিদ বানিয়ে দিতে রাজি। তখন জবাবে বিচারপতি সি এ বোবড়ে বলেন, আপনারা আগেই ধরে নিচ্ছেন কেন, মধ্যস্থতা মানেই কিছু হারাতে হবে! জয় হবে অন্য পক্ষের। সব সময় এমনটা নাও হতে পারে। এই মামলার সংবেদনশীলতা সম্পর্কে অত্যন্ত ওয়াকিবহাল সুপ্রিম কোর্ট। দ্রুত সমাধান করতে আগ্রহী বলেও এ দিন আদালত জানায়।


আরও পড়ুন- মশা মারার পর আরামে ঘুমাবেন না গুনবেন, বালাকোট প্রসঙ্গে বি কে সিং


তবে, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের তরফে আইনজীবী রাজীব ধবন মধ্যস্থতার পক্ষে সওয়াল করেন। তাঁর কথায়, মধ্যস্থতার মাধ্যমে বেরনো যে কোনও সিদ্ধান্ত মেনে নিতে রাজি। তবে, সব দলের মতামতকে আদালতের সমান গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করি না। এ প্রসঙ্গে সবরীমালার মতো সংবেদনশীল বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উদাহরণ টানেন রাজীব ধবন।


আরও পড়ুন- পরের এয়ার স্ট্রাইকে যুদ্ধবিমানের নিচে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হবে বিরোধীদের, কটাক্ষ ভিকে সিংয়ের


শীর্ষ আদালত জানায়, কোনও এক ব্যক্তি ওই মধ্যস্থতা করবেন না। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে মধ্যস্থতার জন্য তৈরি হবে একটি প্যানেল। যত দিন না সমাধান সূত্র বেরচ্ছে ওই প্যানেলে চলবে অযোধ্যা মামলার বিচারকার্য। তবে, সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, মধ্যস্থতা প্যানেলের  কোনও রিপোর্ট সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না। শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ এ ও জানায়, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য নয়, বাইরে থেকে মামলার প্রভাব এড়াতেই এ নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এ দিন মধ্যস্থতা আদৌ সমাধানের পথ কি না তার রায় সংরক্ষণ করে সুপ্রিম কোর্ট।