দিল্লির ৩ শিশুর মৃত্যুতদন্তে নয়া মোড়; অনাহার নয়, বাবার দেওয়া বিষেই খুন সন্তানরা!
মঙ্গল সিংয়ের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে। বছর দশেক আগে পেশায় রিক্সাচালক মঙ্গল দ্বিতীয় বিয়ে করে গ্রামেরই তরুণী বীণাকে
নিজস্ব প্রতিবেদন: দিল্লির মান্ডওয়ালির ৩ শিশুর অনাহারে মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নয়া মোড়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ওই মৃত্যুর পেছনে অনাহার বলা হলেও বিচারবিভাগীয় তদন্তে বেরিয়ে আসছে নতুন তথ্য। মনে করা হচ্ছে শিশু তিনটির বাবা মঙ্গল-ই তাদের বিষ দিয়ে খুন করেছে।
মাজিস্ট্রেট অরুণ গুপ্তার নেতৃত্বে শুরু হয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত। সেখানে ঘটনাক্রম পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে সোমবার সন্ধ্যায় মঙ্গল সিং শিশু তিনটিকে গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে কিছু খেতে দেয়। তার পরেই স্ত্রী ও প্রতিবেশীদের কিছু না বলে ঘর থেকে উধাও হয়ে যায়।
সোমবার সন্ধ্যায় মেয়ে তিনটি অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর মঙ্গরবার তাদের লাল বাহাদুর শাস্ত্রী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায়ও হয়। ততক্ষণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের সুপার অমিতা সাক্সেনা জানান, ‘ওদের দেহে চার্বির চিহ্নমাত্র ছিল না। পাকস্থলী একেবারে শূন্য। টানা অভূক্ত থাকলে এমনটা হতে পারে।’
ময়না তদন্তের রিপোর্টে দেখা যায় তিনটি শিশুর পাকস্থলী, মলাশয়, মূত্রথলী খালি। পিত্তথলীতে পিত্তরসে ভর্তি। তখনই বলা হয়েছিল শিশু তিনটির মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১২-১৮ ঘণ্টা আগে। মৃত্যুর কারণ অনাহার থেকে অপুষ্টি।
আরও পড়ুন-চপার দিয়ে কুপিয়ে খুন বিজেপি নেতা, অভিযোগের নিশানায় তৃণমূল
পুলিস ওই তিনি শিশুর মাকে তাদের মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞাসা করেছিল। তিনি পুলিসকে জানিয়েছেন, মেয়েরা মারা যাওয়ার আগে বারবার ‘খেতে দাও, খেতে দাও’ বলছিল। শিশু তিনটির মা-ও অপুষ্টিতে ভুগছেন। মানসিক রোগীও হয়ে পড়েছেন। সন্তানদের শেষ মুহূর্তের কথা বলতে বলতেই তিনি জ্ঞাণ হারান। প্রতিবেশীরা পুলিসকে জানিয়েছেন, ওই তিনঠি শিশু যে অনাহারে রয়েছে তা তার জানতেই পারেননি।
আরও পড়ুন-দিতে হবে না সার্জ চার্জ, কলকাতায় চালু হল নতুন অ্যাপ ক্যাব
মঙ্গল সিংয়ের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে। বছর দশেক আগে পেশায় রিক্সাচালক মঙ্গল দ্বিতীয় বিয়ে করে গ্রামেরই তরুণী বীণাকে। প্রবল অভবে দিন চলছিল তাদের। দিল্লির মধু বিহার এলাকায় রিক্সা চালাত মঙ্গল। সম্প্রতি তার রিক্সটি চুরি হয়ে যায়। বাড়িভাড়া দিতে না পারায় তাদের বাড়ি থেকেও বের করে দেওয়া হয়। শেষপর্যন্ত তারা থাকতে শুরু করে মান্ডওয়ালির এককুঠুরি ঘরে। তদন্তে জানা যাচ্ছে টানা ২ সপ্তাহ অনাহারেই ছিল গোটা পরিবার। গত সোমবার বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায় পরিবার। তার পরেই এই বিপত্তি।