আত্মহত্যায় বাধা মেয়ের, ৮ বছরের নাবালিকা খুনে পর্দাফাঁস বাবার অমানবিক কীর্তির!
স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির পর ইকবাল যখন ছুরি হাতে বাড়ি ছাড়ে, তখন ৮ বছরের একরত্তি মেয়ে বাবাকে একা ছাড়েনি। পুলিসি জেরায় সে তার অপরাধের কথা কবুল করেছে। আত্মহত্যা করতে ব্যর্থ হওয়াতেই সে তার মেয়েকে খুন করেছে বলে জানিয়েছে পুলিসকে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মৃত্যুর মুখে ঝাঁপ দিতে চলেছে বাবা। এদৃশ্য দেখে স্থির থাকতে পারেনি ৮ বছরের একরত্তি মেয়ে। প্রিয় বাবাকে বাঁচাতে চেয়েছিল সে। আর তার মূল্য নিজের জীবন দিয়ে দিল ৮ বছরের খুদে। আত্মহত্যায় বাধা দেওয়ার জন্য নিজের ৮ বছরের মেয়েকেই খুন করে ফেলল বাবা। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে কাশ্মীরে। অভিযুক্ত বাবার নাম ইকবাল। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে ইকবাল চেষ্টা করেন মেয়েকে বুঝিয়ে ফেরত পাঠাতে। এমনকি এইজন্য মেয়ের হাতে ১০ টাকা গুঁজেও দেন। বলেন, ওই টাকা দিয়ে লজেন্স কিনে খেতে। কিন্তু একরত্তি মেয়ে কোনও কথা-ই শোনে না। বাবাকে ছেড়ে সে যায় না। ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে।
প্রসঙ্গত, ৫ দিন আগে জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়াড়া জেলায় ঘটনাটি ঘটে। তদন্তে নেমে পুলিসের কাছে পর্দাফাঁস হয় কীর্তিমান বাবার কীর্তি! পুলিস জানতে পারে এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে রয়েছে মেয়েটির বাবা-ই। কারণ মেয়েটি তার বাবার আত্মহত্যার পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়। এই ঘটনায় খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত বাবা মহম্মদ ইকবালকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, ৪৫ বছরের ইকবাল পেশায় গাড়িচালক। পুলিসি জেরায় সে তার অপরাধের কথা কবুল করেছে। আত্মহত্যা করতে ব্যর্থ হওয়াতেই সে তার মেয়েকে খুন করেছে বলে জানিয়েছে পুলিসকে।
কী ঘটেছিল ঘটনাটি? বুধবার সন্ধ্যায় স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির পর ইকবাল যখন ছুরি হাতে বাড়ি ছাড়ে, তখন ৮ বছরের একরত্তি মেয়ে বাবাকে একা ছাড়েনি। বাবার গাড়িতে চড়ে বসে সে। পুলিস জানিয়েছে, সাংসারিক কারণেই দম্পতির মধ্যে বিবাদ বাধে। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয় ইকবালের। এরপরই লোলাব এলাকার খুরহামা গ্রামের বাড়ি থেকে ছুরি হাতে বেরিয়ে যায় ইকবাল। দম্পতির ৪ সন্তান। তারমধ্যে মেয়েটি ইকবালের পিছু নেয়। এখন, গাড়িতে মেয়েও থাকায় দ্বিধায় পড়ে যায় ইকবাল। কী করে সে তার উপস্থিতিতে কোনও বিপজ্জনক পদক্ষেপ করবে, তা ভেবে কূলকিনারা পায় না। তাই সে মেয়েকে প্রথমে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ফেরত পাঠাবার চেষ্টা করে। কিন্তু কিছুতেই কিছু না হলে, মেয়ে তার কথা না শুনলে, রাগের মাথায় শ্বাসরোধ করে মেয়েকে খুন করে ইকবাল। তারপর ৮ বছরের মেয়ের গলার নলি কেটে দেয়। তারপর দেহ জ্বালানির কাঠের গুদামে ফেলে দেয়।
এর কয়েক ঘণ্টা পর ইকবাল বাড়ি ফেরে। বাড়ি ফেরার পর সবাই যখন তাকে মেয়ের কথা জিজ্ঞেস করে, তখন সে মেয়ের তার সঙ্গে যাওয়ার কথা অস্বীকার করে। পুলিস জানাচ্ছে, মেয়েকে খুনের পর সম্ভবত নিজের আত্মহত্যা করার ভাবনা থেকে সরে আসে ইকবাল। উলটে বাড়ি ফেরার পর সবাই যখন মেয়ের কথা জিজ্ঞেস করে, তখন সে থানায় গিয়ে মেয়ের নামে নিখোঁজ ডায়েরিও করে। কিন্তু যতক্ষণে সে থানা থেকে বাড়ি ফিরে আসে, ততক্ষণে পরিবার ও আত্মীয়রা মিলে জ্বালানির কাঠ গুদাম থেকে মেয়েটির দেহ উদ্ধার করে ফেলেছে।
আরও পড়ুন, ভয়ংকর! পার্ক থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চলন্ত গাড়িতে যুবতীকে গণধর্ষণ